অবশেষে জট কাটল কাটোয়া জলপ্রকল্পের
বশেষে পানীয় জলের সমস্যা মিটতে চলেছে কাটোয়া শহরে।
২০০৯ সালের মাঝামাঝি থেকেই যেখানে শহরের বাসিন্দাদের কাছে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল, নানা কারণে সেই প্রকল্পের কাজ শেষ হতে চার বছরেরও বেশি সময় লেগে গেল। তবে আগামী ১৬ জানুয়ারি ওই জলপ্রকল্পের উদ্বোধন হতে চলেছে কাটোয়ায়। কংগ্রেস পরিচালিত কাটোয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ মাস থেকেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে পানীয় জলের লাইন নেওয়ার জন্য ফর্ম দেওয়া হবে।
ভাগীরথীতে পাম্প ঘর।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত শহরে ভূগর্ভস্থ জল সরবরাহ করা হয় কাছারি রোডের একটি উচ্চ জলাধার ও তিনটি গভীর নলকূপের মাধ্যমে। দিনে তিনবার তিন ঘন্টা এই জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু এতে শহরের নতুন এলাকার একটা বড় অংশে জল সরবরাহ করতে পারত না পুরসভা। তবে এই প্রকল্প চালু হওয়ার পরে কাটোয়ার পুর বাসিন্দারা তিন বারের জায়গায় চারবার পানীয় জল পাবেন। জল সরবরাহও দ্বিগুণ করে তিন ঘন্টার জায়গায় ছ’ঘন্টা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। কাটোয়ার বিধায়ক ও পুর কাউন্সিলর রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, সকালে ১ ঘন্টা ১৫ মিনিটের জায়গায় ২ ঘন্টা, দুপরে ও বিকালে ৪৫ মিনিটের জায়গায় ১ ঘন্টা করে জল সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়াও নতুন করে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা থেকে এক ঘন্টা জল সরবরাহ করা হবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন প্রকল্পে কাটোয়ার শ্মশানঘাটের কাছ থেকে গঙ্গার জল উত্তোলন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সুবোধ স্মৃতি রোডে পাঠানো হবে। সেখানে গঙ্গার জল পরিশ্রুত করে পানের উপযোগী করে তিনটি উচ্চ জলাধার ও তিনটি ভূগর্ভস্থ জলাধারে পাঠানো হবে। তারপর সেখান থেকে তিনটি অঞ্চলে (জোন) ভাগ করে জল সরবরাহ করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রুরাল মিশনের অন্তর্গত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শহর পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তর্গত এই জলপ্রকল্প। নিয়ম অনুযায়ী, এই প্রকল্পের ৮০ ভাগ টাকা কেন্দ্র সরকার, ১৫ ভাগ রাজ্য সরকার ও বাকি ৫ ভাগ পুরসভা দেবে। কাটোয়া পুরসভায় এই প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছিল ২০০৭ সালে। কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০০৮ সালে। আর ২০০৯-এর মাঝামাঝি থেকে জলসবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে কাজ শুরুই হয় ২০০৯ সালের নভেম্বর নাগাদ। শেষ হওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে করা হয় ২০১৪ সালের মার্চ। অনুমোদনের সময় এই প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছিল আনুমানিক ১৩ কোটি। কিন্তু একে তো চার বছর পরে প্রকল্প শুরু হল, উপরন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্প খরচ গিয়ে দাঁড়াল তিরিশ কোটি।
এখানেই জল শোধন করা হবে।
কিন্তু এত দেরির কারণ কী? পুরসভার বাস্তুকার দফতর সূত্রে জানা যায়, পুর বাস্তুকার দফতরের (এমইডি) বর্ধমান বিভাগ এই প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে ছিল। বারবার কারিগরি সমস্যা ও টেন্ডার নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় কাজ শুরু হতে দেরি হয়। তারপরে রেললাইনের তলা দিয়ে বিদ্যুতের কেবল ও জলসরবরাহ প্রকল্পের পাইপ লাইন নিয়ে যাওয়ার জন্য রেল দফতরের অনুমোদন পেতে দেরি হয় বলেও তাঁদের দাবি। একই সঙ্গে প্রায় এক কোটি টাকা জমা দেওয়ার বছর খানেক পর ওই প্রকল্পে বিদ্যুৎ সংযোগ হয়। তবে রবীন্দ্রনাথবাবুর দাবি, “এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার তার ভাগের টাকা দিতে বারবার দেরি করায় কাজ শেষ হতেও দেরি হল।”
এই প্রকল্পে কাটোয়া শহরের ১০,১১.১২, ১৪ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ৪০ কিলোমিটার নতুন পাইপ বসানো হয়েছে। ২০৩৮ সালের আনুমানিক জনসংখ্যার হিসেব করে জলপ্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে। কাটোয়ার পুরপ্রধান শুভ্রা রায় বলেন, “শহরের ১৯টি ওয়ার্ডেই পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুরসভা নিজস্ব তহবিল থেকে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করছে।” পুরসভার বাস্তুকারেরা জানান, সুবোধ স্মৃতি রোডের ট্রেঞ্চিং গ্রাউন্ড থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার পাইপ বসিয়ে পুরনো জলাধারের সঙ্গে যোগ করা হবে। ফলে গঙ্গার পরিশোধন করা জল ওই জলাধার থেকে শহরের পুরনো এলাকায় সরবরাহ করা যাবে।

—নিজস্ব চিত্র।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.