স্মরণ ...
বাবা দিয়েই গেল পেল না কিছু
লতে পারছি না...”
“কথা বলো বাবা, বাবা! কথা বলো...”
ঠোঁট দুটো নড়ল শুধু। ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে নীল। কিন্তু হাসি হাসি মুখ। ডান চোখের কোণ বেয়ে গড়িয়ে আসা ঠিক এক ফোঁটা জল। শেষ বারের জন্য কথা বলতে চাওয়া আমার বাবা চলে গেল। কথাশিল্পী আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।
সাড়ে চব্বিশ বছরেরও আগের কথা। আর এই চলে যাওয়ার পঁচিশতম বছরে যখন বাবাকে নিয়ে লিখছি, তখন অদ্ভুত এক সমাপতন। ওরই উপন্যাস অবলম্বনে ‘সাত
আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
পাকে বাঁধা’ (হিন্দিতে ‘কোরা কাগজ’) সদ্য পঞ্চাশ পেরিয়েছে। কয়েক জায়গায় এ নিয়ে লেখালেখিও চোখে পড়ল। কিন্তু সব খানেই অনুচ্চারিত কাহিনিকারের নাম। আজ বলে নয়, তখনও।
একই ব্যাপার বাবার ছোট গল্প ‘নার্স মিত্র’ নিয়ে করা আরেক সুপার-হিট ‘দীপ জ্বেলে যাই’-এর (হিন্দিতে ‘খামোশি’) বেলাতেও। ‘চলাচল’ (হিন্দিতে ‘সফর’), ‘পঞ্চতপা’, ‘আমি সে ও সখা’(হিন্দিতে ‘বেমিশাল’) ...? একজনও কি মনে রেখেছেন কাহিনিকারের নাম! আজ বলে নয়, তখনও।
উপেক্ষায়, অবজ্ঞায় বাবা বোধহয় অভ্যস্তই ছিল। বলত, “কী যায় আসে! বিয়ের সময় বাবা যেভাবে মেয়েকে সাজিয়ে-গুছিয়ে পরের হাতে তুলে দেয়, আমিও সেটাই করেছি। বিয়ের পর মেয়ে তো পরেরই হয়ে যায়।’
প্রত্যেকটি গল্প-উপন্যাস ছিল বাবার কাছে তাঁর ‘মেয়ে’। সিনেমার রাইট দিয়ে দেওয়াকে বাবা বলত, পরের হাতে তুলে দেওয়া। চিত্রনাট্য লেখাটা ওর কাছে ছিল সাজিয়ে গুছিয়ে দেওয়া।
দিনের পর দিন দেখেছি বড় বড় প্রযোজক-পরিচালক স্ক্রিপ্ট করে নিয়ে এসেছেন। একবার চোখ বুলিয়ে ‘কিসসু হয়নি’ বলে ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে বাবা। নিজে বসে গিয়েছে কলম হাতে। তার পরেও পর্দায় নাম দূরে থাক, কৃতজ্ঞতাস্বীকারটাও যে পেয়েছে, তাও না। তাতে হেলদোল ছিল কি? অভিমান? রাগ? অপমানবোধ? কোনও দিন বুঝিনি। শুধু মাঝে মধ্যে এটুকু বলতে শুনেছি, “চালের কাঁকর বাছার মতো করে এক-একটা অক্ষর ধরে ধরে লিখেছি। আগাপাস্তলা ঝেড়ে মুছে স্ক্রিপ্ট করেছি। তবে না ছবিগুলো হিট হয়েছে।” ব্যস। আর কিছু না।
ব্যতিক্রম ছিল একমাত্র ‘কাল তুমি আলেয়া’। তাও উত্তমকুমারের জন্য। উত্তমকাকু বাবাকে বলেছিল, “এটা হতে পারে না দাদা। তুমি আমার বাড়ি এসে রাতের পর রাত জেগে ঘষেমেজে স্ক্রিপ্ট করবে। আর তোমার নাম থাকবে না, তা হয় না।”
ছবির স্ক্রিপ্ট তৈরির কথাটা মনে পড়ে। ময়রা স্ট্রিটে উত্তমকাকু-বেণু আন্টির (সুপ্রিয়াদেবী) বাড়ি। সারা রাত জেগে চিত্রনাট্য লেখার কাজ হচ্ছে। তখন প্রায়ই বেণু আন্টিকে খুঁজে পাওয়া যেত না। “বেণু কোথায়? বেণু কোথায়?” খুঁজেপেতে বাথরুম থেকে টেনে নিয়ে আসা হত ওঁকে। রাত জাগার ধকল থেকে পালাতে বাথরুমে গিয়ে ঘুমোতেন সুপ্রিয়াদেবী। ধরা পড়ার পর কাহিনি ও চিত্রনাট্যকারের পরামর্শ ছিল, “বেণু, এবার অন্য জায়গা খোঁজা।”
চিত্রনাট্য লিখত বটে, কিন্তু তাতে যে খুব ভাললাগা ছিল, তাও কিন্তু না। একবারের কথা বলি। বাবা তখন স্ট্রাগল-করা উঠতি লেখক। রোজগার নামমাত্র। বম্বে থেকে শশধর মুখার্জির প্রোডাকশন-হাউসে স্ক্রিপ্ট রাইটার হওয়ার ডাক এল। মোটা মাসমাইনে। গাড়িবাড়ি সমেত বিলাসী অফার। ফিরিয়ে দিয়েছিল বাবা। সাফ কথা, “আমি কলম ধরেছি সাহিত্যিক হব বলে। ফরমাইসি স্ক্রিপ্ট লেখার জন্য নয়। নিজের লেখা গপ্পো-উপন্যাসে সেটা করে দিই, আমার লেখা বলে, ব্যস।”
শুধু ‘কাল তুমি আলেয়া’র কথা তুললে, হেসে বলত, ‘ও তো উত্তম। ওর কথা আলাদা।’
উত্তমকাকু যদি বাবার একজন সুহৃদ হয়, তো এ জগতে তার আর এক নিবিড় বন্ধু হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। ‘দীপ জ্বেলে যাই’-এর মিউজিক ডিরেক্টর হিসেবে কোনও এক আইনি জটিলতায় জড়িয়ে প্রথম ফোন হেমন্তকাকুই করে।
ফোন তোলা মাত্র কথা, “আরে আপনার ‘দীপ জ্বেলে যাই’ নিয়ে তো মহা ফ্যাসাদে পড়লাম।” এরপর নিজের পরিচয় দিতে যেতেই বাবার দরাজ হাসি, “বলতে হবে না, আর বলতে হবে না। আপনার যে সোনায় মোড়া গলা মশাই।”
সেই শুরু। তারপর থেকে হেমন্তকাকু আমাদের প্রতাপাদিত্যের বাড়িতে নিজে তো আসতই, বম্বে-কলকাতার প্রায় সব নামীদামি গায়ক-গায়িকাকে ধরে নিয়ে আসত আশুতোষের কালরোগে ধরা একমাত্র ছেলে, গানপাগল জয়কে গান শোনাতে। আমাদের ঘরে বসে লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে, কিশোরকুমার, মান্না দে’কে গাইতে শুনেছি। এসেছেন সুনন্দা পট্টনায়ক, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, আরতি মুখোপাধ্যায়, প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক গান করে গেছেন শ্যামল মিত্র, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, নির্মলা মিশ্র, হৈমন্তী শুক্ল, বনশ্রী সেনগুপ্ত...! কত নাম বলব...!
হেমন্তকাকুর সঙ্গে বাবা এতটাই লতায়পাতায় জড়িয়ে ছিলেন, দেখে বোঝার উপায় ছিল না ওরা সহোদর, নাকি বন্ধু? বাবার শেষযাত্রার একটা ছবি চোখে ভাসলে আজও কেমন ভেতর ভেতরে কাঁপুনি লাগে। নিথর বন্ধুর হিম ঠান্ডা কপালে হাত রেখে ফুঁপিয়ে উঠল হেমন্তকাকু, “আমার বেলায় কে আমাকে সী অফ করবে, বলতে পারেন?”
বাইরের জীবনে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়ে এক-একজন আছেন, বাড়িকে ভুলে যান। সেখানেও বাবা এক্কেবারে অন্যরকম। বাড়িকে কোনও দিন অবহেলা করেনি বাবা। দশ ভাইবোনের মধ্যে পঞ্চম। ভাইদের মধ্যে তৃতীয়। সবার ‘সেজদা’ হয়েও বিরাট যৌথ সংসারে তাঁর ভূমিকা ছিল ‘বড় ভাইয়ের’। থই থই বাড়ি, ভিড়ে ভিড়াক্কার। তা বলে ‘সাহিত্য করার’ জন্য এসব এড়িয়ে পাহাড়ে, সমুদ্রে, বনে-জঙ্গলে, নির্জন বাংলোয়, কি স্টার-হোটেলের ভাড়া করা ঘরে থাকতে যায়নি কখনও। ঘুরেছে প্রচুর, কিন্তু সে ঘোরার নেশায়।
লেখার জন্য নিজের খাটের ওপর একটা জলচৌকি, এ-ফোর সাইজের রাইটিং প্যাড আর নিজস্ব কয়েকটা কলম ব্যস, আর কিচ্ছু না। তাতেই যা হওয়ার হয়েছে। সরস্বতী পুজোর দিন দেখতাম, প্রতি বছর একটা না একটা গল্প বা উপন্যাসের লাইন লিখত ওই জলচৌকি টেনে নিয়ে। ওটাই ছিল হয়তো বা বাবার অর্ঘ্য। অঞ্জলি দিত পেট পুরে খেয়ে দেয়ে।
মুখোপাধ্যায় পরিবারে দুঃস্বপ্নেও কেউ কল্পনা করেনি, সাহিত্যিক হবে। বাবার তিন কুলে না ছিল কোনও সমঝদার, না কোনও উৎসাহী। তাই শুরুতে ঝড়ঝাপ্টা ঝঞ্ঝাট তো কম আসেনি। বাবা বলত, “এ যেন বিনা ছাড়পত্রে হুট করে ঢুকে পড়ে নাস্তানাবুদ হওয়া।”
অথচ কী কপাল দেখুন, বহু লম্বা দৌড় পেরিয়ে, অনেক কালঘাম ফেলে যখন সাহিত্যিকের শিরোপা জুটল, আকাঙ্ক্ষার সোনালি তাজ মাথায় উঠল, যখন সময় এল জীবনের প্রতিটি পল উপভোগ করার, তখনই একমাত্র পুত্রের মারণ-রোগ ধরা পড়ল। কপাল! কপাল ছাড়া কী বলব একে!
মুখোপাধ্যায় বংশের সাড়ে তিনশো বছরের নৃসিংহ নারায়ণ শিলা মাথায় নিয়ে বাবাকে ঠাকুরঘরে বসে থাকতে দেখেছি। রাতের পর রাত। দু’চোখ বেয়ে নামছে দরদর জলের ধারা।
এমনই এক নিশুত রাতে বাবা বলেছিলেন, ‘যখন আমি হতাশায় পাগল-পাগল, প্রায় সমস্ত লেখা ফেরত আসছে ছাইভস্ম বলে, ভাবতাম নাম-যশ-অর্থ-সাফল্যই বোধহয় শেষ কথা। ঠাকুরের কাছে তাই চাইতাম। আর আজ যখন তার সব পেলাম...! কী হল বলতে পারিস?’ বুজে আসত বাবার গলা। ফোঁপাতে ফোঁপাতে থেমে থেমে বলত, ‘কখনও এই ভুল করিস না, ঈশ্বরের কাছে চাইতে হলে চাইবি শান্তি, আনন্দ আর তৃপ্তি। এর বাইরে বাকি সব ফাঁকি, সব ফাঁকা।’
খুব কঠিন সময়েও সাহিত্যিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কে যে দু’জন বারবার তাকে কাজের দিকে ঠেলে দিয়েছে, তাদের প্রথমজন তার নিজের মা, অন্যজন আমার মা মমতা মুখোপাধ্যায়।
নিরোজগেরে স্বামী সাহিত্যিক হওয়ার জন্য তখনকার দিনের হাজার টাকার চাকরি ছেড়ে যখন সকলের কাছে আসামির কাঠগড়ায়, স্ত্রীর সঙ্গে চরম বোঝাপড়ার মুহূর্ত গুনছে, তখন মা এসে বাহুতে হাত রেখে বলেছিল, ‘আমি খুব খুশি হয়েছি। লেখা ছেড়ে এ চাকরি নিয়ে বাইরে চলে গেলে আমার কী রকম লাগত জানো!’ এই সত্যি গল্প বাবা লিখেছিল তার ছোট গল্প ‘প্রথমা’য়।
সাহিত্যিক আশুতোষ স্ত্রীয়ের সাহচর্য সব থেকে বেশি পেয়েছিল হয়তো বা জীবনের সব চেয়ে কঠিন সময়ে। ছেলের কালরোগ ধরা পড়ল। ‘মাসক্যুলার ডিসট্রফি’। মা বলেছিল, ‘তুমি শুধু তোমার মতো লিখে যাও। এদিকটা আমি সামলে নেব।’ তাই হয়েছিল। তিল তিল করে শেষ হতে থাকা ছেলেকে এক হাতে সামলাচ্ছে মা, আর এক হাতে বাবা প্রত্যেকটা মুহূর্তে নিজেকে কাঁটায় বিঁধিয়ে বিঁধিয়ে ফুটিয়ে চলেছে ফুল। লেখার ফুল। বইয়ের পর বই। এ চিকিৎসার যে এলাহি খরচ!
সেই জলচৌকি।
বাবার কথা বলতে গিয়ে একজনের কথা না বললেই নয়। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। একেবারে প্রথম দিকের লেখা ‘পঞ্চতপা’ উপন্যাসটি উৎসর্গ করেছিল ওঁকেই। এদিকে প্রায় দু’মাস তাঁর দিক থেকে কোনও সাড়া শব্দ নেই। বাবা তখন কলকাতার একটি খবরের কাগজে সাব এডিটরের কাজ করেন।
হঠাৎই এক দুপুরে অফিসে হাজির তারাশঙ্কর। সোজা তার হাত ধরে টেনে তুলে সম্পাদক পরিমল গোস্বামীকে তিনি বললেন, ‘একটা বিশেষ দরকারে ওকে নিয়ে যাচ্ছি।’ একেবারে পুলিশি গ্রেপ্তারি যাকে বলে!
গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে যেতে জেরা, ‘তোমার পঞ্চতপা-র ছড়া-পাঁচালিগুলো তুমি নিজে লিখেছ?’ শুকনো মুখে ‘আসামি’র জবাব, ‘হ্যাঁ’ এ বার প্রশ্ন, ‘কেন? তুমি নিজে বানাতে গেলে কেন?’
এ বার নতুন লেখকের যা-হয়-হোক মরিয়া জবাব, “‘কবি’ উপন্যাসেও তো অনেক ছড়া পাঁচালি আছে। ‘কবি’র লেখক হয়ে আপনি নিজে সেগুলো বানাতে গেলেন কেন?’ মানী জ্যেষ্ঠের মুখের ওপর বেফাঁস কথা বলে উত্তরের অপেক্ষা করে থাকা ছাড়া আর উপায় কী! কিন্তু কোনও জবাব নেই। লম্বা সারাটা পথে গম্ভীর মুখে বসে ‘কবি’র লেখক।
বাড়িতে পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে ইশারায় সঙ্গে আসতে বলে গটগটিয়ে সোজা ভেতরের ঘরে স্ত্রীর কাছে গেলেন তারাশঙ্কর। আঙুল তুলে ‘আসামী’কে দেখিয়ে বললেন, ‘এই হল আশু, আমাকে ওর নিজের বানানো ছড়া-পাঁচালি লেখা বই উপহার দিয়েছে। ওকে কিছু খেতে দাও তো।’
তার পর গায়ের জামাটা খুলে ব্র্যাকেটে ঝুলিয়ে কাছে এসে, ‘এইবার বিশেষ দরকারি কাজটা সেরে নিই। যে জন্য এভাবে নিয়ে এলাম।’ খালি গায়ে এগিয়ে এসে দু’হাত বাড়িয়ে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর খোলা বুকে জাপটে ধরলেন তাঁর চেয়ে অনেকই ছোট, সদ্য কুঁড়ি-ফোঁটা আরেক লেখককে। বহু বার এ গল্প করত বাবা। বলত, ‘এখনও গায়ে কাঁটা দেয়। সেই স্পর্শ এখনও আমার শরীরে ছেয়ে আছে। এমন নবীনবরণ কি আজও হয়?’
প্রবীণের মধ্যে যেমন তারাশঙ্কর, নবীনের মধ্যে তেমন সমরেশ বসু। তিনি আর বাবা এক সময়ের লেখক। কিন্তু বাবা বলত, ‘সমরেশ হল কাঁচা মাটি ছেনে উঠে আসা জীবনঘাঁটা সাহিত্যিক। আমি ওর মতো লিখতে পারব না। আমরা তো ড্রইংরুম রাইটার।’
একবারের ঘটনা বলি। তখন সমরেশ বসুর ‘বিবর’ আর ‘প্রজাপতি’ নিয়ে তুলকালাম। এদিকে বাবা এ নিয়ে কোনও কথাই বলছেন না। অপেক্ষায় থেকে থেকে একদিন সমরেশ বসু বললেন, ‘পড়েছেন?’ প্রশ্নের মতোই জবাবও একটি শব্দে, ‘পড়েছি।’
আবার এক শব্দের জিজ্ঞাসা, ‘দুটোই?’ উত্তর, ‘দুটোই।’ এবার ধৈর্য হারিয়ে সমরেশ বসু, ‘কী হল? কিছু বলবেন না?’ দুদিকে মাথা নাড়িয়ে আশুতোষের উত্তর, ‘নাঃ, আমার কিচ্ছু বলার নেই। আমি এরকম লিখতেও পারব না। লিখবও না।’
এ কথায় প্রচণ্ড ক্ষোভে সমরেশ বললেন, ‘ওঃ। বুঝেছি। টিপিক্যাল মিডল ক্লাস মেন্টালিটিতে ওই সেক্স আর জৈবিক ব্যাপারগুলো হজম করতে পারছেন না। তাই তো? পারবেন, সেক্স ছাড়া শরীর ছাড়া যৌনতার গন্ধ ছাড়া একটাও রোম্যান্টিক লেখা লিখতে।’
সঙ্গে সঙ্গে জবাব, ‘পারব। লিখে সব থেকে আগে আপনাকেই পড়াব।’ এর পরই বাবা লিখল, ‘মনমধুচন্দ্রিকা’। যেখানে নায়ক-নায়িকা শরীরী হওয়া দূরে থাক, নিজেদের মধ্যে একটা কথাও বলেনি। লেখা পড়ে সমরেশ বসু বলেছিলেন, ‘আনথিংকেবল্! কনগ্র্যাচুলেশনস্।’ তার পর, ‘আমারও কেবল একটা কথাই বলার আছে ... আমিও পারব না... তবে আপনার মতো বলতে পারছি না ‘লিখবও না’। দুই বন্ধুর উষ্ণ হাতের তালু তখন একে অপরের কাছে বন্দি।
এই খুনসুটিগুলোও কেমন হারিয়ে গেল, না? হারিয়ে যাওয়া, ভুলে যাওয়া মুখগুলোর মতো?


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.