|
|
|
|
মেডিক্যালে বেশি ‘লোডে’ বিদ্যুৎ,
বিপর্যয় এড়াতে চিঠি পূর্ত দফতরের
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আচমকা যে কোনও দিন অন্ধকারে ডুবতে পারে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। বিকল হতে পারে ট্রান্সফর্মার, যার মাধ্যমে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রয়েছে। কারণ, মেডিক্যালেরা ট্রান্সফর্মার যে ‘লোড’ ধরে রাখতে পারে (২৫০ কিলো ভোল্ট অ্যাম্পিয়ার), এখন তার থেকে বেশি ‘লোড’ নিতে হচ্ছে (৩২১ কেভিএ)। পরিস্থিতি দেখে ‘লোড’ বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে পূর্ত দফতরের তড়িৎ উপভুক্তি সরকারী বাস্তুকারের (মেদিনীপুর) বিভাগ। যেখানে, ওই ট্রান্সফর্মারের লোড বাড়িয়ে ১ হাজার কেভিএ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চিঠি প্রাপ্তির কথা মানছেন হাসপাতাল সুপার যুগল কর। বুধবার তিনি বলেন, “এক দিন আগেই চিঠিটি পেয়েছি। ২৫০ কেভিএ থেকে লোড বাড়াতে হবে। না-হলে আগামী দিনে সমস্যা হতে পারে। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপই করা হবে।” ইতিমধ্যে লোড বাড়ানোর তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তারা নিজেদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা সেরেছেন। |

মেদিনীপুর মেডিক্যালের সেই হটলাইন। —নিজস্ব চিত্র। |
২৫০ থেকে একেবারে ১ হাজার, অর্থাৎ চারগুণ এক ধাপে এতটা লোড বাড়ানোর প্রয়োজন কেন? হাসপাতাল সূত্রে খবর, আগামী দিনের কথা ভেবেই এই পরামর্শ। গত এপ্রিল, মে এবং জুন মাসের পরিস্থিতি থেকে দেখা যাচ্ছে, ওই ট্রান্সফর্মারটিকে ৩২১ কেভিএ লোড ধরে রাখতে হয়েছে। তার উপর খুব শীঘ্রই মেডিক্যালে সিসিইউ ও এনআইসিইউ ইউনিট দু’টি পুরোদমে চালু হবে। সিসিইউতে ১৬০ কেভিএ লোড লাগবে। এনআইসিইউতে ১৩৫ কেভিএ লোড লাগবে। পাশাপাশি, আগামী দিনে আরও নতুন কিছু ইউনিট খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বিদ্যুতের চাহিদা আরও ৫০ শতাংশ বাড়তে পারে। সব মিলিয়ে প্রয়োজন প্রায় ৯০০ কেভিএ। এই সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে ওই ট্রান্সফর্মারের লোড বাড়িয়ে ১ হাজার কেভিএ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। না হলে বাড়তি ‘লোড’ নিতে-নিতে ট্রান্সফর্মার যে কোনও সময়ে বিকল হতে পারে। কিংবা হাসপাতাল ক্যাম্পাসে লো-ভোল্টেজের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এক সময়ে মেদিনীপুরে লোডশেডিং হলে পুরো হাসপাতাল অন্ধকারে ডুবত। তখন তড়িঘড়ি জেনারেটর চালিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হত। এখন অবশ্য মেদিনীপুরে লোডশেডিং হলে আর পুরো হাসপাতাল অন্ধকারে ডুবে না। কারণ, হাসপাতালে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রয়েছে। ২০১০ সাল থেকেই এই ‘হটলাইন’ রয়েছে। তারপরেও বিদ্যুৎ সরবরাহকারী তারে সমস্যা থাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। আচমকা বিদ্যুৎ চলে গেলে এক্স-রে-সহ বিভিন্ন পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষ করে পাম্পে জল তুলতে না পারলে সমস্যা চরমে ওঠে।
রোগীর পরিজনদের বক্তব্য, মাঝেমধ্যে এমন সমস্যা হয়। ফলে, কর্তৃপক্ষের উচিত, বিকল্প কিছু ভাবা। যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী তারে ত্রুটি দেখা দিলেও বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল সরবরাহ ব্যাহত না-হয়। এই যখন পরিস্থিতি, তখন আচমকা ট্রান্সফর্মার বিকল হলে যে চরম বিপর্যয় নামবে, তা বলাই বাহুল্য।
এমনটা যাতে না হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কত দ্রুত সেই পদক্ষেপ হয়, সেটাই দেখার। |
|
|
 |
|
|