বিদেশে টানা তৃতীয় টেস্ট সিরিজ হারের পর মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দাবি, “দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এই সিরিজে ভারতের পারফরম্যান্স অসাধারণ।”
সঙ্গে হারের জন্য ভারত অধিনায়ক কাঠগড়ায় তুলছেন ডারবান টেস্টের আম্পায়ারিং-কে। “আজ সকালটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেখানে আমাদের শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি। ব্যাটসম্যানদের কয়েকটা খারাপ শট বাছাইয়ের পাশাপাশি দু’-একটা খারাপ আম্পায়ারিং সিদ্ধান্তের ফলও আমাদের ভুগতে হয়েছে,” সোমবার কিংসমিডে ম্যাচ-উত্তর সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন ধোনি।
সত্যি বলতে, এ দিন কোহলি আর জাহিরের আউট নিয়ে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মনে হয়েছে ভারতের বিপক্ষে গিয়েছে। কোহলির কট বিহাইন্ডের ক্ষেত্রে বল সম্ভবত ব্যাটসম্যানের কাঁধ ঘসে গিয়েছে। জাহিরের এলবিডব্লিউ টিভি রিপ্লে-তে মনে হয়েছে, বল লেগ স্টাম্পে লাগত না। ভারতের ম্যাচে কি তা হলে ডিআরএস প্রয়োগের সময় এসে গিয়েছে প্রশ্ন উঠলে ধোনি কিছুটা ঘুরিয়ে তাতে ‘না’-ই বলেন। “অতীতে ডিআরএসের প্রবল সমর্থক কয়েকটা দেশ এখন আর তার সমর্থক নেই। ডিআরএস যে দলের অনুকূলে যাবে তাদের কাছে জিনিসটা ভাল। আর যাদের বিপক্ষে যাবে তাদের কাছে খারাপ। মানুষমাত্ররই ভুল হয়। ভুল না হলে তো ব্যাটসম্যান কখনই আউট হত না। আর বোলারও সারাক্ষণ এক লাইনে বল করে যেত।”
ওয়ান্ডারার্সে কালিসদের চতুর্থ ইনিংসে ৪৫৮ রানের টার্গেট দিয়েও মাত্র আট রানে হার বাঁচায় ধোনির টিম ইন্ডিয়া। ডারবানে শেষ দিন ম্যাচ ড্র রাখার লড়াইয়ে নেমে প্রথম বলেই কোহলির উইকেট হারিয়ে ০-১ সিরিজ খোয়ায় ভারত। তার পরেও ধোনি বলেছেন, “সিরিজে আমাদের তরুণ দলের সার্বিক পারফরম্যান্সে আমি দারুণ খুশি। কোনও বিশেষজ্ঞ অলরাউন্ডার ছাড়াই আমাদের বোলিং বিভাগ দুর্দান্ত করেছে। টপ অর্ডার ব্যাটিংয়ে মাত্র কয়েকজনেরই পাঁচটার বেশি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা ছিল। তবু আমাদের ব্যাটিং বিভাগ দুর্দান্ত খেলেছে। সব মিলিয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স আমাদের। তবে আমরা আরও ভাল করতে পারতাম।”
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে আম্পায়াররা শেষমেশ ১৪৬ ওভার পর নিজেরাই বল পাল্টে দেওয়া পর্যন্ত ধোনির দ্বিতীয় নতুন বল না-নেওয়া প্রসঙ্গে স্বয়ং ভারত অধিনায়কের ব্যাখ্যা, “ক্রিসমাসের সময় চলছে ঠিকই। তবে আমি সান্তাক্লজ নই যে, দক্ষিণ আফ্রিকাকে দেদার রান উপহার দেব। ওই সময় ওটাই আমাদের বোলিংয়ের সঠিক স্ট্র্যাটেজি ছিল।” ডিআরএস নিয়েও ধোনির স্বভাবসিদ্ধ টিপ্পনি, “আমি চাই না, দিনেরবেলাটা আমার জন্য নিরাপত্তারক্ষী থাক। আর রাত ন’টা থেকে পরের দিন সকাল ন’টা পর্যন্ত আমাকে নিজের নিরাপত্তা নিজেকেই দিতে হোক। আমি চব্বিশ ঘণ্টাই নিরাপত্তা চাই।”
|
টেস্টে দ্রুততম ৩৫০ উইকেট |
• মুথাইয়া মুরলীধরন ৯ বছর ৯ দিন ৬৬ টেস্ট
• রিচার্ড হ্যাডলি ১৪ বছর ৩৮ দিন ৬৯ টেস্ট
• ডেল স্টেইন ৯ বছর ৯ দিন ৬৯ টেস্ট
• ডেনিস লিলি ১২ বছর ৩৩৮ দিন ৭০ টেস্ট
• গ্লেন ম্যাকগ্রা ৯ বছর ২৭৭ দিন ৭৪ টেস্ট |
 |
|
ডেল স্টেইন সোমবার ডারবানে সময়ের নিরিখে দ্রুততম ৩৫০ টেস্ট উইকেটে পৌঁছন। মুথাইয়া মুরলীধরনের সমান ৯ বছর ৯ দিনে ৩৫০ উইকেট পেলেন তিনি। তবে মুরলীধরন (৬৬) স্টেইনের (৬৯) চেয়ে তিন টেস্ট কম খেলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। টেস্ট সংখ্যার নিরিখে স্যর রিচার্ড হ্যাডলির সঙ্গে যুগ্ম ভাবে দ্বিতীয় দ্রুততম স্টেইন (৬৯ টেস্ট)। যদিও এ ব্যাপারে স্টেইনের কৃতিত্বই হয়তো সবচেয়ে বেশি। কারণ, হ্যাডলির কেরিয়ারের অনেকটা সময় উইকেট থাকত আঢাকা। বোলারদের ফ্রন্টফুট রুল তখনও আসেনি। ফলে ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার বেগে আসা বল-কে অনেক সময় বাইশ গজের বদলে আঠারো-উনিশ গজ দূর থেকেও সামাল দিতে হত ব্যাটসম্যানকে। ওভার পিছু বাউন্সারের সংখ্যার বিধিনিষেধও ছিল না তখন। এখন শেষোক্ত দু’টি ব্যাটসম্যান-বান্ধব নিয়ম থাকা ছাড়াও একটা-আধটা মাঠ বাদে গোটা বিশ্বের পিচ পেসারদের কাছে আগের মতো অনুকূল নয়। কিংসমিডের মতোই ক্রমশ স্লো হচ্ছে। |