|
|
|
|
সচিবের মন্তব্যে বিপাকে অখিলেশ
সংবাদ সংস্থা • লখনউ
২৭ ডিসেম্বর |
মুজফ্ফরনগরে শরণার্থী শিবিরে মৃত্যু নিয়ে ফের বিতর্কে জড়াল উত্তরপ্রদেশ সরকার। এ বার ঠান্ডায় কারও মৃত্যু হতে পারে না বলে মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়লেন প্রিন্সিপ্যাল সচিব (স্বরাষ্ট্র) এ কে গুপ্ত।
মুজফ্ফরনগরে গোষ্ঠী সংঘর্ষের পর শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। শরণার্থী শিবিরগুলির ভয়াবহ অবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। পরে শিবিরে ঠান্ডায় শিশুমৃত্যুর খবর প্রচার করে সংবাদমাধ্যমের একাংশ। প্রথমে এই খবর অস্বীকার করে অখিলেশ যাদব সরকার। এমনকী সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে তারা জানায়, শিবিরে শিশুমৃত্যু হয়নি। পরে সংবাদমাধ্যমে মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট ফের খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দেয়। গত কাল অখিলেশ সরকার মেনে নিয়েছে, গোষ্ঠী সংঘর্ষের পর থেকে ৩৪টি শিশু মারা গিয়েছে। তার মধ্যে ১০টি মৃত্যু হয়েছে শরণার্থী শিবিরে। বাকি ঘটনা হয়েছে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি জানিয়েছে, ৪০ হাজার শরণার্থীর সকলেই আর শিবিরে নেই। অনেকে সরকারের দেওয়া পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ নিয়ে জমি কিনেছেন। কিন্তু ৫ হাজার মানুষ এখনও শিবিরেই আছেন। সেখান থেকে বেরোলেই হামলা হবে বলে তাঁদের আশঙ্কা। এই শরণার্থীদের জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার কোনও খাদ্য বা গরম জামাকাপড় দিচ্ছে না বলেই দাবি স্বেচ্ছাসেবীদের।
প্রত্যাশিত ভাবেই শিবিরে শিশুমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে অখিলেশ সরকারকে বিঁধতে শুরু করেন বিরোধীরা। সম্প্রতি অখিলেশের বাবা ও সমাজবাদী পার্টির প্রধান মুলায়ম সিংহ যাদব দাবি করেন, শরণার্থী শিবিরগুলিতে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্তরা নন, কংগ্রেস ও বিজেপি সমর্থকরা আছে। তারাই গোলমাল পাকাচ্ছে। এই মন্তব্যের পরে স্বভাবতই প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন মুলায়ম। আজ এ কে গুপ্তের মন্তব্য ফের বিতর্ক উস্কে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।
আজ রাজ্যের প্রিন্সিপ্যাল সচিব (স্বরাষ্ট্র) এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “শিশুরা নিউমোনিয়ায় মারা গিয়েছে। ঠান্ডায় কেউ মারা যায় না। তা হলে সাইবেরিয়ায় মানুষ বাস করতে পারত না।” এই মন্তব্যের পরেই একের পর এক প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে। বিজেপির রাজীবপ্রতাপ রুডি বলেন, “এই মন্তব্যে অখিলেশ সরকারের মনোভাবের প্রতিফলন হয়েছে। পুরো ঘটনার জন্য তারাই দায়ী।”
আবার বহুজন সমাজ পার্টির সুধীন্দ্র ভাদোরিয়ার কথায়,“এই ধরনের তুলনা করা লজ্জাজনক বিষয়।” এমনকী বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। তাঁর মতে,“ঠান্ডায় মানুষ মরেন না! ওই আমলাকে হালকা জামাকাপড়ে বাইরে বের করুন। দেখব উনি অন্য সুরে কথা বলেন কি না।”
বেগতিক দেখে পরে আসরে নামেন অখিলেশ। উত্তরপ্রদেশ সরকারের কোনও পদাধিকারীর কাউকে আঘাত করে মন্তব্য করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তবে অখিলেশের উপদেষ্টা মধুকর জেটলি বলেন, “এ কে গুপ্তর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। সরকার শরণার্থী শিবিরে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নিয়েছে।”
|
পুরনো খবর: মুজফ্ফরনগরে কালো পতাকা অখিলেশকে, ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা |
|
|
 |
|
|