কার্নিশে ‘ঠোকাঠুকি’ দুই বহুতলের
ছ’মাস আগে দু’টি বহুতলের চারতলার জানলার কার্নিশের মধ্যে দূরত্ব ছিল চার ইঞ্চির মতো। এখন সেই দূরত্বটুকুও নেই। একটি কার্নিশ পাশের বহুতলের কার্নিশের উপরে এসে পড়ায় সেটি ভেঙে গিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরেই একটি বহুতল আর একটি বহুতলের উপরে ক্রমশ হেলে পড়ছিল। রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা এলাকার বাগুইআটি জ্যাংড়া বটতলার ওই বহুতলের বাসিন্দারা এখন রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
চারতলা ওই বহুতলটি যে পাশেরই পাঁচতলা বহুতলের উপরে হেলে পড়েছে, তা এখন খালি চোখেই ধরা পড়ে। দু’টি বহুতলের মাঝখানে ব্যবধান প্রায় ছ’ফুট। কিন্তু অভিযোগ, চারতলা বহুতলটির উচ্চতা যত বেড়েছে, ততই সেটি পাশের বহুতলের কাছাকাছি চলে আসছে। শেষে ওই বহুতলটির চারতলার জানলার কার্নিশ পাশের বহুতলের কার্নিশে গিয়ে ধাক্কা মারায় সেটি ভেঙে গিয়েছে। আবাসিকদের অভিযোগ, এই নিয়ে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভায় অভিযোগ জানানো হলেও সুরাহা হয়নি।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরেই চারতলা বহুতলটি পাশের বহুতলের উপরে হেলে পড়ছে। এখন সেটা কার্যত ‘ঠোকাঠুকি’র পর্যায়ে চলে গিয়েছে। পাঁচতলা বহুতলের এক বাসিন্দা পৃথ্বীশ দাশগুপ্ত বলেন, “যে ভাবে পাশের বহুতলটি হেলে পড়ছে, তাতে আমরা আতঙ্কিত। বছর কয়েক আগে এখানে ফ্ল্যাট কিনে এসেছি। এখন যে বিক্রি করে চলে যাব, তা-ও খুব কঠিন। কে কিনবে এই ফ্ল্যাট?”
জ্যাংড়া এলাকার সেই দুই বহুতল। ছবি: শৌভিক দে।
পাঁচতলা ওই বহুতলের প্রতি তলে তিনটি করে ফ্ল্যাট। চারতলার যে ফ্ল্যাটের জানলার কার্নিশ পাশের ফ্ল্যাটের কার্নিশে ধাক্কা মেরেছে, সেই ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা আপাতত অন্য জায়গায় থাকছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, পুরসভাকে খবর দেওয়ার পরে ইঞ্জিনিয়ারেরা এসে ছাদে সিমেন্টের জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে দিতে বলেন। তা ভেঙে প্লাস্টিকের জলের ট্যাঙ্ক বসানো হয়েছে। ভিত মজবুত করতে মাটি খুঁড়ে সিমেন্ট ঢালা হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি।
এ বিষয়ে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মনোদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “চারতলা ওই বহুতলের ভিতের একটা দিকে মাটি বসে গিয়ে এই সমস্যা হয়েছে। বহুতলটি যখন তৈরি হয়েছিল, তখন সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারের অনুমোদিত নকশা মেনে নির্মাণকাজ হয়নি বলেই মনে হচ্ছে।” রাজারহাট গোপালপুর পুর এলাকায় অবৈধ নির্মাণ নিয়ে বহু দিন ধরেই সোচ্চার বিরোধীরা। তাঁদের মতে, এই সমস্যা ওই আবাসনেরই নয়। ওই এলাকায় এমন অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে। অভিযোগ, প্রোমোটারদের বেআইনি নির্মাণের মাসুল গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এলাকার বিধায়ক পূর্ণেন্দু বসু বলেন, “পুরসভার মদতেই চলছে অবৈধ নির্মাণ। কোনও আইনের পরোয়া করা হচ্ছে না। ফল ভুগছেন সাধারণ মানুষ। আমাদের কাছে এমন ভূরি ভূরি অভিযোগ আসে। যে বহুতলটি হেলে গিয়েছে, সেখানকার বাসিন্দারা লিখিত অভিযোগ জানালে আমরা বিষয়টি নিয়ে নগরোন্নয়ন দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।” যদিও, অভিযোগ মানতে চাননি রাজারহাট-গোপালপুরের পুর চেয়ারম্যান তাপস চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বহুতল নির্মাণ পুর-আইন অনুযায়ীই হয়। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা গিয়ে নজরদারি করেন। জ্যাংড়ার বহুতলটির কথা আমরা জানি। আমাদের ইঞ্জিনিয়ারেরা কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। ব্যবস্থা নেওয়াও হয়েছিল। তবে সমস্যার সমাধান না হলে ইঞ্জিনিয়ারেরা ফের ঘটনাস্থলে যাবেন।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.