সন্দেহ শর্ট সার্কিট
গভীর রাতে আগুন, ৮টি দোকান ছাই শিলিগুড়িতে
ভীর রাতের বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল আটটি দোকান। মঙ্গলবার রাত আড়াইটা নাগাদ শিলিগুড়ি পুরসভার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের রেলের হাসপাতাল মোড় এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ এবং দমকলের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে প্রথমে আগুন লাগে। বাসিন্দারা জানান, পুড়ে যাওয়া একটি রেস্তোরাঁয় থাকা দুটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। তাতেই আগুন বিধ্বংসী আকার নেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আটটি দোকান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়। দমকলের চারটি ইঞ্জিন প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ৫০ লক্ষ টাকা। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসায় লাগোয়া কয়েকশো দোকান এবং রেলের আবাসন আগুনের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছে। বুধবার সকালে ঘটনার জেরে এলাকার সমস্ত দোকানপাট, বাজার বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, পুড়ে যাওয়া দোকানগুলির মধ্যে রেস্তোরাঁটির থেকেই প্রথমে আগুন দেখা যায়। সেখানে শর্ট সার্কিট ছাড়াও শীতের রাতের আধপোড়া সিগারেট বা বিড়ি থেকে আগুন লাগার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পুড়ে যাওয়া দোকানগুড়ির মধ্যে স্টেশনারি, সেলুন, গ্যারেজ, চায়ের দোকান রয়েছে।

ধ্বংসস্তূপে খোঁজার চেষ্টা। বুধবার ছবিটি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।
স্থানীয় বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব সকালেই ঘটনার খবর পান। তিনি বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কী ভাবে সাহায্য করা যায় তা দেখছি।” শিলিগুড়ির দমকলের বিভাগীয় আধিকারিক দীপক নন্দী বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চারটি ইঞ্জিন এলাকায় নিয়ে আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনে। দোকানগুলি কাঠ ও টিনের হওয়ায় সহজেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুণ লাগার কারণ দেখা হচ্ছে।”
ভোরেই ঘটনাস্থলে যান তৃণমূলের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি প্রবীর সিংহ। এলাকায় গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর পূরবী সেনও। প্রবীরবাবু বলেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের পুর কর্তৃপক্ষের কাছে ত্রাণের জন্য আবেদন করতে বলেছি। পরিবারগুলি একেবারে অসহায় হয়ে পড়েছে। দলের সমস্ত স্তরে বিষয়টি জানিয়েছি। ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আমরা অবশ্যই দেখব।”
তিনবাতি মোড় হয়ে এনজেপি স্টেশনে দিকে যাওয়ার রাস্তায় বাঁ দিকে রয়েছে রেলের হাসপাতাল। ওই হাসপাতালের মূল গেটের ঠিক উল্টোদিকেই হাসপাতাল মোড় বাজার। ছোট বড় মিলিয়ে কয়েকশো দোকান রয়েছে এলাকাটিতে। সব্জি ও মাছের বাজারও রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে চায়ের দোকানের মালিক রূপা মজুমদার বলেন, “স্বামীর হাত অকেজো। উনি কাজ করতে পারেন না। দুই মেয়েকে নিয়ে এই দোকান করেই সংসার চালাই। একেবারে পথে বসে গেলাম।” পুড়ে যাওয়া দুটি সেলুনের মালিক মুকেশ ঠাকুর। মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই তিনি একটি দোকানের উদ্বোধন করেছিলেন। মুকেশবাবু বলেন, “নতুন দোকানে আসবাব, মালপত্র-সহ প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ করেছিলাম। দু’টি দোকানের একটি জিনিসও বাঁচাতে পারিনি।”
সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্টেশনারি দোকানের ব্যবসায়ী রঘুবীর প্রসাদ। তিনি বলেন, “দোকানে নগদ টাকা ছাড়াও প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মালপত্র ছিল। কিছু পোড়া কাঠ এবং কাগজ ছাড়া কিছুই পেলাম না।” দোকানগুলির পিছনে রয়েছে রেলের আবাসন এবং একটি কলোনি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অমিত পাসোয়ান, রবীন্দ্রনাথ সরকারেরা বলেন, “রাতে খাওয়ার পর শুয়ে পড়ি। এলাকার এক মহিলা শৌচকার্য করতে বাইরে বার হয়ে আগুন দেখেন। ওঁর চিৎকারে বাইরে এসেই দেখি দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। দৌঁড়ে লাগোয়া এনজেপি ফাঁড়িতে গিয়ে খবর দিয়েছিলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে দমকল আসে।” এ দিন দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের নিয়ে এনজেপি ফাঁড়িতে যান এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা। ফাঁড়ির ওসি নবেন্দু সরকারের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়ে তাঁরা ব্যবসায়ীদের সাহায্যের আবেদন জানান।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.