মিউচুয়াল ফান্ড  
সময়ের আগে বেচা বারণ
চ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা যদি আপনার প্রথম পছন্দ হয়, তা হলে মিউচুয়াল ফান্ড কেনা-বেচার ক্ষেত্রে আপনি চাইবেন ‘ওপেন-এন্ডেড’ ফান্ড। কারণ এখানে ইউনিট কেনা বা বিক্রির নির্দিষ্ট কোনও সময় নেই। যখন ইচ্ছে কিনলেন। আবার সময় বুঝে বেচে দিলেন। কিন্তু এর ঠিক উল্টো ‘ক্লোজ-এন্ডেড’ ফান্ড বা মেয়াদি ফান্ড। যেই কিনলেন, অমনি আপনার পায়ে বেড়ি পড়ল। চাইলেও মেয়াদ শেষের আগে বিক্রি করে বেরিয়ে আসতে পারবেন না। সে আপনার রিটার্ন বাড়ুক বা কমুক। আবার কোনও ফান্ড ভাল মুনাফা দিলে সাধারণত মাঝপথে তা কেনাও যাবে না। তবু বাজারে এদের সংখ্যা কম নয়। কেন? চলুন আজ ‘ক্লোজ-এন্ডেড’ ফান্ডের ভাল-মন্দ, সুবিধা-অসুবিধাই খতিয়ে দেখি একটু।

চরিত্রের নানা দিক
প্রথমেই মেয়াদি ফান্ডের বৈশিষ্ট্যগুলির উপর চোখ বুলিয়ে নেব।
• নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য তহবিল খাটানো হয়।
• মেয়াদ পূর্ণ হলে ফান্ড ভাঙিয়ে রিটার্ন পাবেন।
• যখন ফান্ডটি বাজারে আসে, একমাত্র তখনই সেটির ইউনিট কেনা যায়।
• নির্দিষ্ট সংখ্যক ইউনিট বিক্রি হয়। তা কখনওই বাড়ে না।
• তাই পরে ফান্ড ভাল রিটার্ন দিলেও আর ইউনিট কেনার সুযোগ থাকে না।
• ফান্ড সংস্থা কোনও কোনও মেয়াদি ফান্ডকে শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ করে।
• সেগুলির ক্ষেত্রে শেয়ার বাজারের মাধ্যমে ফান্ড বিক্রি করতে পারেন।

সুবিধার খতিয়ান
• একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পরে কোনও কিছু বাবদ খরচ মেটানোর কথা থাকলে, ওই মেয়াদের ক্লোজ-এন্ডেড ফান্ডে লগ্নি করে রাখা যায়।
• মেয়াদ নির্দিষ্ট থাকায় এখানে হুট করে অনেক লগ্নিকারী একসঙ্গে ইউনিট বেচে বেরিয়ে যেতে পারেন না। যা ওপেন-এন্ডেড ফান্ডে আকছার হয়। আর মাঝপথে বিক্রির সুযোগ থাকে না বলে মেয়াদি ফান্ডের তহবিল কখনওই কমে যায় না। ফলে ফান্ড ম্যানেজার ইচ্ছেমতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে তহবিল খাটিয়ে রিটার্ন বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারেন। ফান্ডের তহবিল কমে গেলে সেটা করা মুশকিল।
• ফান্ডের মূল্য বাড়া নিয়ে লগ্নিকারীকে তেমন ভাবতে হয় না। তিনি জানেন, নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে হলে তবেই তাঁর হাতে টাকা আসবে।
• ফান্ড কিনে নিশ্চিন্ত মনে বসে থাকা যায়। বিক্রির উপযুক্ত সময় নিয়ে মাথাব্যথা থাকে না।
• যাঁরা সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে বেশি ঝক্কি-ঝামেলা চান না, তাঁদের পক্ষে মেয়াদি ফান্ড মন্দ নয়।

ঝুঁকি কোথায়
• রিটার্ন ভাল হবে তার কোনও গ্যারান্টি নেই।
• যে কোনও সময়ে ফান্ড বিক্রির সুবিধা না-থাকায় আচমকা তৈরি হওয়া আর্থিক প্রয়োজনে কাজে লাগে না।
• এখানে ফান্ড কেনা ও বিক্রি নিয়ে লগ্নিকারীর হাত-পা বাঁধা থাকায় অনেকে ওপেন-এন্ডেড ফান্ডই বেশি পছন্দ করেন।

জনপ্রিয় যেগুলি
ফান্ডের মেয়াদ, তহবিল খাটানোর জায়গা, ঝুঁকি ইত্যাদির নিরিখে আবার বাজারে নানা ধরনের ক্লোজ-এন্ডেড ফান্ড পাওয়া যায়। যেমন—
ফিক্সড ম্যাচুরিটি প্ল্যানস (এফএমপি)। এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এক ধরনের মেয়াদি ফান্ড। স্বল্প সময়ের জন্য লগ্নি করা হয়। বাজারে বেশি চালু ৯০ দিন, ৩৭০ দিন বা ১৮ মাস মেয়াদের প্রকল্প। তবে বছর তিনেক মেয়াদের এফএমপি-ও আছে। তহবিল খাটানো হয় ঋণপত্রে। ঋণপত্রগুলির মেয়াদও ফান্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হয়। এবং রিটার্ন হাতে পান লগ্নিকারী। ঝুঁকি প্রায় নেই বললেই চলে। এফএমপি-র লক্ষ্যই হল, বিভিন্ন ধরনের ঋণপত্রে লগ্নির মাধ্যমে মোটামুটি নিশ্চিত আয়ের পথ তৈরি করা।
ক্যাপিটাল প্রোটেকশন ওরিয়েন্টেড ফান্ডস। ‘ক্যাপিটাল প্রোটেকশন’ অর্থাৎ মূলধনের সুরক্ষা দেওয়াই এই মেয়াদি ফান্ডের লক্ষ্য। একটু লম্বা সময় ধরে লগ্নি করা হয়, তিন বা পাঁচ বছর। তাই এর তহবিলের একটা অংশ ইক্যুইটি বা শেয়ারে খাটাতে পারেন ফান্ড ম্যানেজার। মূলধনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তহবিলের বেশির ভাগটা উঁচু রেটিংয়ের ঋণপত্রে ঢালা হয়। যেগুলির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় ফান্ডটির মেয়াদ পেরোনোর দিনই বা তার আগে। আর খুব ছোট অংশ লগ্নি হয় ইক্যুইটিতে। যাতে তহবিলের পরিমাণ ফুলে-ফেঁপে ওঠে (ক্যাপিটাল অ্যাপ্রিসিয়েশন)।

লেখক মিউচুয়াল ফান্ড বিশেষজ্ঞ
(মতামত ব্যক্তিগত)


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.