সরকারি দফতরে হানা, প্রশাসন অচল করার ডাক তাইল্যান্ডে
জাতীয় পতাকার লাল-নীল-সাদা রঙের ছিটে ভিড়ের আনাচে-কানাচে। ব্যাঙ্ককের বুকে গর্জাচ্ছে হাজার হাজার মুখ। এই নিয়ে লাগাতার চার দিন, একই ছবি তাইল্যান্ডের রাজধানীর। বিক্ষোভকারীদের দাবি একটাই, প্রধানমন্ত্রীর গদি থেকে সরতে হবে ইঙ্গলাক শিনাবাত্রাকে।
বিক্ষোভকারীরা আজ ঢুকে পড়েছিলেন একাধিক সরকারি ভবনে। বন্ধ করে দেন কাজকর্ম। ধর্না দেন অন্তত ২৪টি সরকারি কার্যালয়ের বাইরে। মিছিল করে যান পুলিশের সদর দফতরে। শক্তি মন্ত্রকের কার্যালয়ে ঢুকে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন কর্মীদের। বোঝানোর চেষ্টা করেন, খুব শিগগিরি বর্তমান প্রশাসন তাদের ক্ষমতা হারাবে। আর এ সব দেখেশুনে কূটনীতিকরা বলছেন, দ্বিমেরুকরণ তো হয়েই গিয়েছে। পরিস্থিতি বরং ইঙ্গিত দিচ্ছে, জটিলতা আরও গভীরে। যদিও সরকারের বক্তব্য, অবস্থা মোটেই ধরা ছোঁয়ার বাইরে নয়। প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গলাক শিনাবাত্রার সচিব সুরানন্দ ভেজ্জাজিভা বলেন, “সেনা নামানোর প্রশ্নই নেই। মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। প্রয়োজনে পুলিশই সামলাতে পারবে।”
আন্দোলনের সূত্রপাত একটি বিল পাশ ঘিরে। ২০০৬ সালে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার-সহ নানা অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাকসিন শিনাবাত্রা। তার পর থেকে তিনি স্বেচ্ছা-নির্বাসনে। এখন প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন তাঁরই বোন ইঙ্গলাক শিনাবাত্রা। সম্প্রতি তাকসিনকে দেশে ফেরাতে ইঙ্গলাক একটি বিল পাশ করানোর চেষ্টা করছিলেন। তাতেই গণবিক্ষোভের সূচনা। চাপের মুখে পড়ে ইঙ্গলাক বিলটি প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু ক্ষোভের আঁচ এতটুকু কমেনি। বিরোধীদের দাবি, আড়ালে থেকে এখনও সরকার চালাচ্ছেন তাকসিনই। প্রধানমন্ত্রীর গদিতে তাই তাঁর কোনও আত্মীয়কেই বসানো চলবে না।
গত চার দিনে অর্থ-বিদেশ-অভ্যন্তরীণ, তিন মন্ত্রকে হানা দিয়ে ফেলেছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী সুতেপ তাউগসুবান। ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। যদিও সুতেপকে আটক করার উৎসাহটুকুও দেখায়নি পুলিশ। সংবাদমাধ্যমে সুতেপ বলেন, “সব দফতরে গিয়ে সরকারি কর্মীদের কাজ বন্ধ করে দিন। যাতে তাকসিন প্রশাসন অচল হয়ে পড়ে।” জবাবে প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গলাক বলেন, “এটা মোটেই তাকসিন প্রশাসন নয়। সাধারণ মানুষের নির্বাচিত সরকার।” আন্দোলন অবশ্য চলছে সুতেপের পথেই। আজ সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন কয়েকশো বিক্ষোভকারী। হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন কার্যালয়ের বাইরে। যদিও প্রধানমন্ত্রীর সচিব বলেন, তেমন কিছুই হয়নি। সরকারি ভবনগুলো যথেষ্ট নিরাপদ। কাজকর্মও স্বাভাবিক ভাবেই হচ্ছে।
ফুকেতও এখন বিরোধীদের দখলে। স্বাভাবিক ভাবেই, পর্যটন ব্যবস্থাতেও বিক্ষোভের আঁচ পড়েছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়ে দিয়েছেন, সুতেপের সঙ্কেত না মেলা পর্যন্ত ফুকেত ছেড়ে তাঁরা নড়বেন না। অন্য দেশগুলোর মতো পর্যটকদের সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে ভারত সরকারও। সাবধান করে দেওয়া হয়েছে তাইল্যান্ডে উপস্থিত ভারতীয়দের।
তাইল্যান্ডের তাকসিনের সমর্থকের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। ভয় সেখানেই। ২০১০ সালে এক বার তাকসিনের দেশের ফেরার দাবিতে তাঁর সমর্থকরা কার্যত অচল করে দিয়েছিল রাজধানী। দু’মাসের অচলাবস্থায় অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছিলেন। এ বারেও তেমন কিছুরই আশঙ্কা করছেন কূটনীতিকরা। অভয় দিচ্ছে সরকার। যদিও তাড়া করে বেড়াচ্ছে তিন বছর আগের সেই বিভীষিকা।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.