দুর্গার আরাধনায় জোট বেঁধেছে প্রমীলা বাহিনী
টপৌরে বধূ, স্কুল শিক্ষিকা থেকে ম্যানেজমেন্ট কলেজের ছাত্রীদুর্গার আরাধনার জন্য দল বেঁধেছে ওঁরা। তমলুক শহরের রামসাগরের পাড়ে শিশু উদ্যানে এ বার দুর্গা পুজোর আয়োজন করেছে এলাকার প্রমীলাবাহিনী। পুজোর কথা ভেবেই মাস তিনেক আগে গড়ে উঠেছে জেলা শহরের এই প্রমীলা ক্লাব। তবে এরপর সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কাজের পরিকল্পনাও রয়েছে ভাবনায়।
মহিলাদের উদ্যোগে দুর্গাপুজো অবশ্য তমলুক শহরে এই প্রথম নয়। কয়েকবছর আগেও শহরে একটি পুজোর আয়োজন হত মহিলাদের হাতে (এখন বন্ধ)। তাম্রলিপ্ত পশ্চিমাঞ্চল সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির দীর্ঘ দিনের পুরনো পুজো দু’বছর আগে থেকে পরিচালনা করছেন মহিলারাই। আর এ বছর তমলুক রামসাগরের পুকুর পাড়ে শিশু উদ্যানে পুজোর আয়োজক মহিলাদের ক্লাব ‘হৃদজয়া।’ ক্লাবের অন্যতম সদস্যা সান্ত্বনা ভৌমিক বলেন, ‘‘দেবী দুর্গা অসুরদের বধ করে দেবতাদের হৃদয় জয় করেছিলেন। সেই দেবী দুর্গার আরাধনা দিয়ে আমাদের ক্লাবের যাত্রা শুরু হওয়ায় নাম হৃদজয়া।” নবগঠিত এই ক্লাবের সভাপতি করা হয়েছে এলাকার কাউন্সিলর কবিতা মিত্রকে। তিনি অবশ্য বলেন, “আমি শুধু ওদের সাহায্যকারী হিসেবে রয়েছি। পূজা আয়োজনের কৃতিত্ব সম্পূর্ণ ওদের।”

অষ্টমীর ভোগের নিমন্ত্রণে বাড়ি-বাড়ি। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
প্রথম বছর হলেও ক্লাবের উদ্যোগে পুজো হচ্ছে বেশ ঘটা করে। বাজেট প্রায় লক্ষাধিক টাকা। তমলুক শহরের অন্যতম বিশাল দিঘি রামসাগরের পাড়ে গিয়ে দেখা গেল শেষবেলায় মণ্ডপসজ্জার কাজ দেখভালে ব্যস্ত ক্লাবের সদস্যা রাখী হালদার, ঋতুপর্ণা ধাড়া দে, দীপান্বিতা বোস, মিনতি ভুঁইয়ারা। পেশায় কলেজ শিক্ষিকা ঋতুপর্ণাদেবী বলেন, “শহরের এই এলাকায় সেই অর্থে বড় কোনও পূজা হয় না। অধিকাংশ বাড়ির কর্তারা ব্যস্ত তাঁদের কাজ নিয়ে। তাই এলাকার মহিলারা মিলে পূজার পরিকল্পনা করি। তবে আমরা শুধু পুজোর আয়োজনে সীমাবদ্ধ থাকতে চাই না। বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজেরও পরিকল্পনা রয়েছে।” ক্লাবের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন শহরের টাউন পদুমবসান, পার্বতীপুর, স্টিমারঘাট এলাকার মহিলা সদস্যরাও। সব মিলিয়ে এখন ‘হৃদজয়া’র সদস্যা প্রায় ৫০। পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া ব্লকের একটি হাইস্কুলের অঙ্কের শিক্ষিকা দীপান্বিতা বসু ছুটির দিনে বাড়ি ফিরেই বেরিয়ে পড়েছেন পুজোর আয়োজনে। বাঁকুড়া থেকে পুরোহিত আনার ব্যবস্থা করেছেন তিনিই।
মণ্ডপের সামনেই তৈরি হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ছোট্ট মঞ্চ। ক্লাবের সম্পাদক কাজল চৌধুরী জানান, পঞ্চমীর দিন উদ্বোধন। ষষ্ঠীর দিন মহিলাদের নিয়ে শোভাযাত্রা হবে। সপ্তমীর দিন এলাকার ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। অষ্টমীতে শুধুই ঠাকুর দেখা। নবমীর বিকেলে হবে ধুনুচি নাচ। দশমীতে সিঁদুর খেলা ও বিসর্জন।
পূজার পাঁচ দিন চুটিয়ে উপভোগের জন্য বাড়ির হেঁশেল বন্ধ রেখে যৌথ ভাবে খাওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। পূজা কমিটির সদস্যা বিভা চক্রবর্তী বলেন, “রান্না করতে গিয়ে পূজার আনন্দ যাতে কমে না যায়, সে জন্য নিরামিষ খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মাথা পিছু চাঁদা দিয়ে ক্লাব সদস্যরা সপরিবারে খেতে পারবেন।”
বোঝা গেল, নারীশক্তির আরাধনায় কোনও ত্রুটি রাখতে চায় না নারীবাহিনী।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.