দাউদ থাকে করাচিতেই, টুন্ডাকে জেরা করে দাবি গোয়েন্দাদের
দাউদ ইব্রাহিম এখনও করাচিতেই থাকে বলে দাবি করা হলো দিল্লি পুলিশের সূত্রে। জেরার মুখে আব্দুল করিম টুন্ডা এই কথা কবুল করেছে বলে জানিয়েছে তারা।
টুন্ডাকে শুক্রবার ভারত-নেপাল সীমান্তের কাছে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের যৌথ দল জেরা করছে তাকে। ভারতে প্রায় ৪০টি বিস্ফোরণে অভিযুক্ত টুন্ডার সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিম ও লস্কর-ই-তইবার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
সম্প্রতি পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিশেষ দূত শাহরিয়ায় খান বলেন, “দাউদ পাকিস্তানে ছিল। তাকে পাকিস্তান তাড়িয়ে দিয়েছে।” এ বার দাউদের পাকিস্তানে থাকার কথা জানাল টুন্ডাও।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, জেরায় টুন্ডা জানিয়েছে ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণে অভিযুক্ত দাউদ করাচিতে একটি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকে। তার নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। কোথাও যেতে হলে সে সময়েও দাউদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে তারা। দাউদের সঙ্গে বহু বার দেখা হয়েছে টুন্ডার। জয়েশ-ই-মহম্মদ, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন ও বব্বর খালসার মতো জঙ্গি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল তার।
দিল্লি পুলিশের এক অফিসারের দাবি, করাচিতে বেশ কিছু মাদ্রাসা চালাতো টুন্ডা। ওই সব মাদ্রাসার প্রতিটিতে শ’দুয়েক করে নানা বয়সের ছাত্র ভর্তি করা হতো এক-এক ব্যাচে। মাদ্রাসা চালানোর জন্য প্রচুর অর্থ আসত বিভিন্ন উৎস থেকে। এরই পাশাপাশি টুন্ডা ভাল বক্তা হওয়ায় তার সেই ক্ষমতাকে যুবকদের জেহাদের পথে টেনে আনার কাজে ব্যবহার করত জঙ্গি সংগঠনগুলি। আবার বিস্ফোরক তৈরির বিষয়েও জ্ঞান আছে টুন্ডার। বিস্ফোরকের জ্ঞান, মগজ ধোলাইয়ের ক্ষমতা ও নেটওয়ার্ক তিন দিকেই টুন্ডা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় জঙ্গিদের কাছে তার চাহিদা ছিল প্রচণ্ড।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা মনে করছেন, মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত আবু জুন্দলের চেয়েও টুন্ডার গ্রেফতার হওয়ার গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপালে তার বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে। প্রায় সব জঙ্গি সংগঠনের নেতারাই কখনও না কখনও তার সাহায্য নিয়েছে। ২০১০ সালে ভারতে বিস্ফোরক পাচার করতে টুন্ডার সাহায্য চেয়েছিল বব্বর খালসা সংগঠনের নেতা ওয়াধওয়া সিংহ। তবে সে যাত্রা ভারতে বিস্ফোরক আনার পথে বাংলাদেশে ধরা পড়ে যায় টুন্ডার সহযোগীরা। তবে এ হেন টুন্ডারও একটি বিষয়ে খেদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের দাবি, লস্কর-ই-তইবার শীর্ষ নেতৃত্বের অংশ হতে না পারায় হতাশা রয়েছে টুন্ডার মনে। ২০০০ সালে বাংলাদেশ হয়ে পাকিস্তানে পৌঁছয় টুন্ডা। এক সময়ে লস্করের হয়ে ভারতে যুবকদের জেহাদে উদ্বুদ্ধ করার কাজ করত সে। কিন্তু, ২০০০ সালে পাকিস্তানে পৌঁছনোর পরে লস্করের কাছে তার গুরুত্ব কমে যায়।
গোয়েন্দাদের দাবি, টুন্ডা তাদের জানিয়েছে, তার গুরুত্ব কমে যাওয়ার পিছনে জাকিউর-রহমান লকভির হাত ছিল। মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত লস্কর নেতা লকভি ভারতে হামলা চালানোর নতুন পরিকল্পনায় তাকে সামিল করেনি। ফলে, এক সময়ে তিন স্ত্রী ও ছয় সন্তান নিয়ে তার প্রায় পথে বসার মতো অবস্থা হয়েছিল। পরে পঞ্জাবের মুরিদকে এলাকায় একটি বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দেয় লস্কর ওরফে জামাত-উদ-দাওয়া। সেখানে সুগন্ধি বিক্রি করত সে। সোমবার পর্যন্ত টুন্ডাকে দিল্লি পুলিশের হেফাজতে রাখতে বলেছে আদালত।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.