পাহাড়ে ধৃতদের জায়গা দিতে জেলে নাভিশ্বাস
পাওয়ার কথা দু’টো কম্বল। কিন্তু শিলিগুড়ির জেলে বন্দিদের এখন দেওয়া হচ্ছে একটি করে। টান পড়েছে বন্দিদের প্রাপ্য অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাতেও। পাহাড়ে আন্দোলনের জেরে বন্দির সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়াতেই এই অবস্থা। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে নতুন আন্দোলনের ধাক্কা পাহাড়ের জনজীবনে এবং পর্যটনে তো লেগেছেই। সেই সঙ্গে ওই আন্দোলনে ধরপাকড়ের চাপ গিয়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলেও। ওই সব জেলে যত বন্দি রাখার বন্দোবস্ত আছে, এমনিতেই তার থেকে অনেক বেশি লোক থাকে। তার উপরে পাহাড়ের আন্দোলনে ধৃত নেতা ও কর্মীদের পাঠানোয় জেলগুলিতে একেবারে ঠাসাঠাসি অবস্থা।
পাহাড়ে জেল বলতে তিনটি। দার্জিলিং জেলা জেল এবং কার্শিয়াং ও কালিম্পঙে দু’টি সাব-জেল। কারা দফতরের হিসেব বলছে, কার্শিয়াং এবং কালিম্পঙের দু’টি সাব-জেলে যথাক্রমে ২৪ এবং ২৮ জন বন্দি রাখার ব্যবস্থা আছে। সেই জায়গায় পাহাড়ে আন্দোলন শুরু হওয়ার আগেই ওই দু’টি জেলে বন্দির সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৩৫ এবং ৫৫। দার্জিলিং জেলা জেলে ১২৭ জন বন্দি থাকার কথা। পাহাড়ে আন্দোলনকারীদের ধরপাকড় শুরু হতেই বন্দির জোয়ারে উপচে পড়ে সেই জেলও।
এই অবস্থায় কারা দফতর সিদ্ধান্ত নেয়, পাহাড়ে গ্রেফতার হওয়া মোর্চা নেতাদের শিলিগুড়ি জেলে পাঠানো হবে। কিন্তু সেখানকার অবস্থাও একই রকম। শিলিগুড়ি জেলে ২০০ বন্দি রাখার ব্যবস্থা আছে। সেই জায়গায় পাহাড়ে আন্দোলন শুরু হওয়ার আগেই সেখানে বন্দি ছিলেন ৩১৩ জন। শিলিগুড়ি জেলের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী জানান, গত ১০ দিনে প্রায় ৭০ জন মোর্চা নেতাকে শিলিগুড়ি জেলে পাঠানো হয়েছে।
ওই জেল সূত্রের খবর, পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, জেলে যেখানে নতুন বন্দিদের রাখা হয়, সেই ‘আমদানি ওয়ার্ড’-এও বন্দিদের এখন থাকতে হচ্ছে ঘেঁষাঘেঁষি করে। এমনকী জেলের হাসপাতাল ওয়ার্ডের ১২টি শয্যার মধ্যে ন’টিই ভর্তি হয়ে গিয়েছে। জেলের এক কর্তার কথায়, “নিয়ম অনুসারে প্রত্যেক বন্দিকে দু’টি কম্বল দেওয়ার কথা। সেই জায়গায় শিলিগুড়িতে এখন একটি করে কম্বল দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। গরম চলছে। তাই রক্ষা। কোনও রকমে সামাল দেওয়া হচ্ছে।”
কিন্তু কম্বল-ঘাটতিই একমাত্র সমস্যা নয়। মোর্চা নেতাদের গ্রেফতারি শুরু হওয়ার সময় পাহাড়ে ধর্মঘট চলায় জেলে তাঁদের খাবার দেওয়াই জেল প্রশাসনের সামনে বড়সড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে জেল প্রশাসন বন্দিদের শিলিগুড়ি স্পেশ্যাল জেলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু গত ১০ দিনে সেই জেলও কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এখন জেল প্রশাসন ভাবছে, পাহাড়ে নতুন করে যাঁরা গ্রেফতার হবেন, তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে জলপাইগুড়ি জেলে। কিন্তু তাতেও সুরাহা হবে কি না, সন্দেহ আছে। কারণ, জলপাইগুড়ি জেলে ৮৩৯ জন বন্দি থাকার কথা। অথছ ইতিমধ্যেই সেখানে বন্দি রয়েছেন ১২৩৭ জন!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.