গণ্ডি ভেঙে বায়ুসেনায় যোগদান পাক তরুণীর
র্দানশিনতার আড়ালেই থেকে যায় সে দেশের মেয়েদের ব্যক্তিত্ব। হাজারো নিষেধাজ্ঞা তাঁদের নিত্য সঙ্গী। ধর্মের অজুহাতে বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, ধর্ষণের মতো সামাজিক ব্যাধি নিয়েই দিন কাটান তাঁরা। প্রতিবাদে জোটে শাস্তি, অপমান, এমনকী মৃত্যুদণ্ডও।
সে দেশেরই মেয়ে আয়েশা ফারুক। কিন্তু ২৬ বছর বয়সেই পরিচিত গণ্ডি ভেঙে, পাকিস্তান বায়ুসেনায় যুদ্ধবিমান চালক হিসেবে যোগদান করে তিনি সংবাদমাধ্যমের নজর কেড়ে নিয়েছেন।
পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের বাহওয়ালপুর শহরের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের তরুণীর সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার রাস্তাটা সহজ ছিল না মোটেই। দেশের হয়ে যুদ্ধ করার জন্য রীতিমতো কঠিন লড়াই করতে হয়েছে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের জগদ্দল রক্ষণশীলতার সঙ্গে। লিঙ্গবৈষম্যের লড়াই, আকাশ ছুঁতে চাওয়ার লড়াই।
সাত বছর আগে যখন প্রথম বায়ুসেনায় যোগ দেওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন, সে দিন আর পাঁচ জন মায়ের মতোই অবাক হয়েছিলেন আয়েশার বিধবা মা। অক্ষরপরিচয়হীন মায়ের কাছে একটুও প্রশ্রয় পায়নি মেয়ের এই ইচ্ছে। কিন্তু তা যে কোনও ভাবেই দমাতে পারেনি আয়েশার মনের জোরকে, তার প্রমাণ তো পাওয়াই গিয়েছে। তিনি নিজেই বললেন, “আমাদের সমাজে মেয়েদের এই কাজে যোগ দেওয়া দূরের কথা, এ ধরনের চিন্তাটাই বেশ কঠিন। আর এই দেশের ভৌগোলিক পরিবেশও এ ধরনের কাজের অনুপযুক্ত। সব কিছুর পরে সন্ত্রাসবাদের ভয় তো আছেই।”
আয়েশা অবশ্য একা নন। গত দশ বছরে ১৯ জন মহিলা পাকিস্তান বায়ুসেনায় বিমানচালক হিসেবে যোগ দিয়েছেন। আয়েশার সঙ্গেই রয়েছেন আরও পাঁচ জন, যাঁরা অপেক্ষা করছেন বিমানচালক পদে যোগ দেওয়ার চূড়ান্ত পরীক্ষা দেওয়ার জন্য।
পাক বায়ুসেনার স্কোয়াড্রন ২০-এর উইং কম্যান্ডার নাসিম আব্বাস বললেন, “সেনাবাহিনীতে মহিলাদের সংখ্যাটা কিন্তু দিন দিন বাড়ছে। রক্ষণশীলতার সীমা পেরিয়ে অন্য ভাবে ভাবতে শিখছে আমাদের দেশ। বদলাচ্ছে সমাজের চিন্তাধারাও।”
তিনি আরও জানালেন, পাক সেনাবাহিনীতে এখন প্রায় চার হাজার মহিলা কর্মরত। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই চিকিৎসা-সংক্রান্ত কাজে এবং আধিকারিক কাজে নিযুক্ত হলেও, গত দশ বছরে যোদ্ধা হিসেবেও নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন অনেকেই। বায়ুসেনাতেই মহিলা যোদ্ধার সংখ্যাটা এখন ৩১৬, যেটা পাঁচ বছর আগেও শ’খানেকের বেশি ছিল না।
বায়ুসেনার আর এক আধিকারিক জানালেন, পারিবারিক চাপের সঙ্গে লড়াইটাই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সংস্কারের নামে সমাজে জায়গা করে নেওয়া অবিচারগুলোকে পাশ কাটিয়ে মেয়েরা যে এই ধরনের পদক্ষেপ করে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য তৈরি করছে, তা নারীশক্তিরই পরিচয়।
আয়েশা কিন্তু সে ভাবে আলাদা করে চিহ্নিত করেন না নিজেকে। “আমার অন্য রকম কিছু মনেই হয় না। আমরা একই কাজ করি, ছেলেদের মতো করেই বোমা ছুড়তে পারি আমরাও।” এক মুখ হেসে বললেন আত্মবিশ্বাসী আয়েশা।
প্রকৃত যুদ্ধক্ষেত্রে নামার আগের যুদ্ধটা জিতে ফেলেছেন আয়েশা। এ বার শুরু আসল যুদ্ধ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.