রাস্তা চওড়া করতে কাটা হয়েছে লক্ষ লক্ষ গাছ
বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নেই পশ্চিমে
রিবেশের কথা না ভেবেই রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য লক্ষ লক্ষ গাছ কাটা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। নিয়মমতো কাটা গাছের অনুপাতে নতুন গাছ লাগানোর কথা। কিন্তু কোথায় কী!
একশো দিনের প্রকল্পে মূলত বর্ষাকালে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদ রাস্তার দু’ধারে গাছ লাগায়। কিন্তু এবার বর্ষা এসে গেলেও গাছ লাগানো শুরু হয়নি। কারণ পঞ্চায়েত নির্বাচন দেরিতে হওয়ায় এখনও পঞ্চায়েত গঠন হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আদৌ গাছ লাগানো যাবে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। যদিও একশো দিনের প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা প্রকল্প আধিকারিক প্রিয়াঞ্জন দাস জানান, “সর্বত্রই গাছ লাগানোর জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। বন দফতরকে দিয়ে চারাও তৈরি করানো হয়েছে। পঞ্চায়েতে নির্বাচিত সদস্যরা না থাকলেও গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”
কেশপুরের এই রাস্তায় আর গাছ লাগানো হয়নি। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
এটা ঠিক যে, চলতি আর্থিক বছরের শুরুতেই কোন গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় কত পরিমাণ গাছ লাগানো হবে সে বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। বার্ষিক পরিকল্পনা রিপোর্টেও তা রয়েছে। সেই হিসেবে গাছ লাগানোর জন্য বন দফতরকে দিয়ে ২৯ লক্ষ ৭৯ হাজার চারা গাছও তৈরি করানো হয়েছে। বৃক্ষরোপণের জন্য বরাদ্দও ধরা হয়েছে ৫৪ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা। যা দিয়ে ৪০২১টি প্রকল্পে ৪৫২১ হেক্টর জমিতে বৃক্ষরোপণ করার কথা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ব্লকই বৃক্ষরোপণের কাজ শুরু করেনি! প্রশ্ন উঠছে, এখনও গাছ লাগানো শুরু না হলে কিভাবে বিভিন্ন এলাকায় লক্ষ লক্ষ চারা পোঁতা সম্ভব? প্রিয়াঞ্জনবাবুর অবশ্য দাবি, “এখনও বৃক্ষরোপণের সময় রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্তও গাছ লাগানো যায়।” কিন্তু চলতি বছরে আদৌ কী তা সম্ভব হবে। যাঁরা উদ্যোগী হয়ে এই কাজটি করার কথা সেই বিডিও-রা অবশ্য অন্য কথা বলছেন। তাঁদের মতে, সবে নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখনও পঞ্চায়েতই গঠন হয়নি। বার্ষিক পরিকল্পনা রিপোর্টে গাছ লাগানোর কথা থাকলেও তা নিয়ে ভাবার সময় কোথায়? গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি গঠন করতে হবে। এবার আবার পঞ্চায়েতে সর্বত্রই তৃণমূলের আধিক্য। জয়ী সদস্যদের সিংহভাগ একেবারেই নতুন। তাঁদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তারই মধ্যে আবার লোকসভা নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ রয়েছে। এক বিডিও-র কথায়, “এসব করব, না গাছ লাগানো নিয়ে ভাবব।”
সব মিলিয়ে এ বছর আদৌ বৃক্ষরোপণ সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য বজায়ের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হবে। অন্য দিকে, প্রচুর অর্থ ব্যয় করে তৈরি চারাগুলি নষ্ট হলে সরকারি অর্থের অপচয় হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সবং-ডেবরা রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য কয়েক কিলোমিটার জুড়ে রাস্তার দু’ধারে থাকা গাছ কাটা হয়েছে। একই ভাবে কেশপুর, দাসপুর, চন্দ্রকোনা ১ সহ একাধিক ব্লকে এমন ঘটনা ঘটেছে। একদিকে যেখানে গাছ কাটা হয়েছে সেইসব রাস্তায় গাছ লাগানো হয়নি। অন্য দিকে, যে সব রাস্তায় গাছ লাগানো যায়নি সেখানেও গাছ লাগনোর প্রয়োজন রয়েছে। গাছ লাগালে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি আরও নানা সুবিধে হয়। রাস্তার ধারে গাছ লাগালে বৃষ্টিতে রাস্তার ক্ষতি কম হয়। আবার গাছ বড় হলে তা কেটে বিক্রি করে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির আয়ও হয়। এছাড়াও গাছ লাগানোর জন্য স্থানীয় মানুষরা কাজ পান। নানা সমস্যায় বৃক্ষরোপণ না করা গেলে সব দিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে জেলা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.