পাক হামলায় বিপাকে মনমোহন সরকার
ংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হতে না হতেই জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টরে ভারতীয় সেনা হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল চাপের মুখে পড়ে গেল মনমোহন সিংহ সরকার।
লোকসভা নির্বাচনের ঢাকে কাঠি কার্যত পড়ে গিয়েছে। তার আগে পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি স্থাপনের একটা শেষ চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সরকার ইসলামাবাদে ক্ষমতায় আসার পরে কিছুটা সাড়া দিয়েছিল পাকিস্তানও। ঠিক সেই সময়েই পুঞ্চের ঘটনা বিপাকে ফেলে দিয়েছে সরকারকে।
আজ গোটা দিন সংসদের দু’টি কক্ষেই দফায় দফায় বিরোধীরা আক্রমণ শানিয়ে একাধিক বার অধিবেশন অচল করেছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি সংসদে এ বিষয়ে বিবৃতি দিলেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। বরং পাকিস্তানের সন্ত্রাসকে কেন্দ্র আড়াল করার চেষ্টা করছে— লোকসভায় এমন অভিযোগও তুলেছেন প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ যশোবন্ত সিন্হা।
আগামী মাসে নিউ ইয়র্কে নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সুংসংহত আলোচনা ফের শুরু করার কথা ছিল। বিদেশ মন্ত্রকের অফিসাররা জানিয়েছেন, নির্ধারিত বৈঠক বন্ধ করা হবে না। তবে তা থেকে আর বড় কোনও ফল পাওয়ার সম্ভাবনা কার্যত নেই। সাউথ ব্লক চাইছে, ওই বৈঠকেই পাকিস্তানের উপরে চাপ তৈরি করতে।
রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, নয়াদিল্লি যে হকচকিয়ে গিয়েছে তা আজ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পরস্পরবিরোধী বিবৃতি থেকেই স্পষ্ট। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সংসদে তড়িঘড়ি যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, পাক সেনার পোশাক পরে জঙ্গিরাই এই হামলা চালিয়েছে। আবার সেনাবাহিনীর বিবৃতি অনুযায়ী, এটা পাক সেনা ও জঙ্গিদের যৌথ হামলা। বিজেপির অরুণ জেটলি থেকে সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, সকলেরই প্রশ্ন, পাক সেনা যে হামলায় যুক্ত নয় তা অ্যান্টনি জানলেন কী করে? তাঁদের দাবি, কোনও তদন্ত না করেই এই মন্তব্য করায় ইসলামাবাদকে দোষ অস্বীকার করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
নভেম্বর মাসে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। অনেকের মতে, এ বার নরেন্দ্র মোদী-সহ বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব বিদেশনীতি নিয়ে সরকারকে আক্রমণ করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে গেল। আজ নরেন্দ্র মোদী থেকে সমাজবাদী নেতা মুলায়ম সিংহ যাদবসকলে সাম্প্রতিক পাকিস্তানি ও চিনা অনুপ্রবেশগুলিকে একই সমীকরণে এনে সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণের চেষ্টা করেছেন। মোদীর কথায়, “চিনা অনুপ্রবেশ থেকে পাকিস্তানি হামলাএই সব ঘটনা থেকেই প্রমাণ হচ্ছে ভারত সরকার সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। আর কখন ঘুম ভাঙবে কেন্দ্রের?”
মনমোহন সরকারের অবস্থা এখন শাঁখের করাতের মতো। এক দিকে পাকিস্তানকে ‘মুখের মতো জবাব’ দেওয়ার জন্য দলের পক্ষ থেকে চাপ আসছে। রাহুল গাঁধী আজ মনমোহনকে ফোন করে জানিয়েছেন যে এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। কঠোর পদক্ষেপ করা প্রয়োজন। সনিয়া গাঁধীও বিবৃতি দিয়ে বলেছেন এই ধরনের আক্রমণের বিরুদ্ধে ‘যথোপযুক্ত’ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। বিজেপির প্রবল আক্রমণের মুখে প্রকাশ্যে প্রবল পাকিস্তান-বিরোধিতার অবস্থান নিতে বাধ্য হচ্ছে সনিয়া গাঁধীর দল। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে নামা অবিমৃশ্যকারিতারই সামিল বলে মনে করে সাউথ ব্লক।
এই দোটানার মধ্যে পড়ে আজ বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ জানিয়েছেন, “আমাদের যথেষ্ট দায়িত্ববোধ রয়েছে। আমরা এমন কিছু করতে চাই না যার ফলে দীর্ঘমেয়াদি ভাবে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। জাতীয় স্বার্থে যেটা উচিত হবে ঠিক সেটাই আমরা করব।” বিরোধীদের আক্রমণের মোকাবিলায় তাঁর বক্তব্য, “বিরোধীদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জাতীয় স্বার্থ কী ভাবে অক্ষুন্ন রাখতে হয় সে ব্যাপারে আমাদের ধারণা রয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.