অভিযুক্ত তৃণমূল
কর্মী খুনের প্রতিবাদে স্বরূপনগরে বনধ্‌ সিপিএমের
শাসক দল ও বিরোধেীদের মধ্যে ভোট পরবর্তী সংঘর্ষে মৃত্যু হল আর এক সিপিএম সমর্থকের। গত ৩১ জুলাই উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে সিপিএমের এক পঞ্চায়েত প্রার্থীর ভাই ও দাদা গুরুতর জখম হন। আহতদের একজন জলিল গাজিকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতাল ও অন্যজন রফিকুল গাজিকে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রবিবার রাতে মারা গিয়েছেন রফিকুল গাজি (৩৬)।

নিহত রফিকুল।
এই ঘটনায় স্বরূপনগর পঞ্চায়েত সমিতির জয়ী তৃণমূল প্রার্থী হাবিবুর রহমান গাজী ওরফে মুকুল-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ সঞ্জয় রায়-সহ পাঁচজনকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করে। ধৃত সঞ্জয় রায় তৃণমূলের কর্মী বলে পুলিশ জানায়। সোমবার গ্রামে রফিকুলের মৃত্যুর খবর পৌঁছলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা। সকাল থেকেই দফায় দফায় তেঁতুলিয়া থেকে স্বরূপনগর পথ অবরোধ শুরু হয়। পুলিশ গেলে বিক্ষোভকারীরা তাদের উপরেও চড়াও হয়। পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মুকুল-সহ অন্য অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে আজ, মঙ্গলবার স্বরূপনগরে ১২ ঘণ্টার বন্‌ধের ডাক দিয়েছে সিপিএম। এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিত্‌ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তেরা এলাকা ছাড়া, তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশ সূত্রের খবর, স্বরূপনগরের শাঁড়াপুল বাজারে মুকুলের একটি হার্ডওয়ারের দোকান রয়েছে।
ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে শোকার্ত মা। ছবি: নির্মল বসু।
অভিযোগ, ৩০ জুলাই, মঙ্গলবার সকালে দোকানের সামনে বাজি ফাটায় সিপিএমের লোকজন। বুধবার সকালে তা নিয়ে দু’পক্ষে বচসা বাধে। সিপিএমের অভিযোগ, এর পরে সাত্তার বিডিও অফিসের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তৃণমূলের লোকজন। কিন্তু তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। সাত্তারকে গুলি করার খবর শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান রফিকুল, একটু পরে জলিলও। দিন কয়েক আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়া জলিল গাজি এ দিন বলেন, “গিয়ে দেখি রফিকুলের সঙ্গে মুকুলের বচসা বেধেছে। গণ্ডগোল থামাতে এগিয়ে যেতেই হঠাত্‌ মুকুল ও তার সঙ্গীরা গুলি চালাতে শুরু করে। একটা গুলি রফিকুলের পেটে লাগে। একটা লাগে আমার কোমরে। গুলি চালিয়ে মুকুল ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে গেলেও সঞ্জয়কে ধরে ফেলে গ্রামবাসীরা।”
এ দিন ছেলের মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা সাহিদা বিবি। একমাত্র ছেলে রাজকে (রাফিন) বুকে জড়িয়ে ধরে বাকশক্তি হারিয়েছেন সদ্য স্বামীহারা সাবিনা ইয়াসমিন।নিজেকে কোনওরকমে সামলে সাহিদা বিবি বলেন, “ঘটনার দিন সকালে ছেলেটা বাড়িতে শুয়ে ছিল। ঘুম থেকে ওঠার পরে চা দিই। সেই সময়েই খবর আসে যে ছোট ছেলে সাত্তারকে কারা গুলি করেছে। শুনেই ও ছুটে বেরিয়ে গেল। আর ফিরল না।” স্বরূপনগর ব্লক বামফ্রন্ট কমিটির আহ্বায়ক হামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, “পঞ্চায়েতে পায়ের নীচে মাটি হারিয়ে এলাকাকে অশান্ত করতে চাইছে তৃণমূল। তাই আমাদের সমর্থককে গুলি করে খুন করল ওরা। এরই প্রতিবাদে বন্‌ধের ডাক দেওয়া হয়েছে।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষ বলেন, “যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। স্বরূপনগর ব্লকে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে অধিকাংশ আসন দখল করার পর সিপিএমের লোকজন চারদিকে হামলা শুরু করেছে। তারই প্রতিরোধ করেছেন মানুষ। তবে এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল জড়িত নয়। তা ছাড়া বন্‌ধ করে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না।”

এই সংক্রান্ত আরও খবর...


পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.