পৃথক রাজ্যের দাবি
সেনা ও কার্ফু সত্ত্বেও জ্বলছে কার্বি আংলং
পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি নিয়ে আন্দোলনের তৃতীয় দিনেও কার্বি আংলং, কোকরাঝাড়-সহ অসমের বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে। কার্বি আংলঙে অনির্দিষ্টকালীন কার্ফু অগ্রাহ্য করেই গত কাল গভীর রাত থেকে ফের শুরু হয়েছে হিংসা, অগ্নিসংযোগের ঘটনা। পুড়েছে বহু সরকারি ভবন ও গাড়ি। বন্ধ হয়ে গিয়েছে লামডিং থেকে উজানি অসমের ট্রেন যোগাযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আজ থেকে কার্বি আংলঙে সেনাবাহিনীর টহলদারি শুরু হয়েছে।
পাশাপাশি, কোকরাঝাড়ে রেল লাইন অবরোধে থমকে গিয়েছে রাজ্যের জন-জীবন। কার্যত মূল ভূখণ্ড থেকে আজ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় অসম-সহ উত্তরপূর্ব ভারত। কার্বি ছাড়াও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে বিভিন্ন জনজাতি আন্দোলন। তার মধ্যে যেমন রয়েছে কোচ-রাজবংশী, তেমনই রয়েছে বড়ো জনজাতি। তবে হিংসায় সব কিছুকে ছাপিয়ে শিরোনামে চলে এলেছে কার্বি আংলং।
গত কাল রাতে কার্ফুর মধ্যেই বোকাজানে একটি ছাগলের খামারে আগুন লাগানো হয়। পুরো খামারটিই ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। এরপর রাত সাড়ে তিনটে থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চলতে থাকে অগ্নিসংযোগের ঘটনা। হামরেনে পূর্ত ভবন ও বিদুৎ ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। তরালাংসুতে বন বিভাগের কার্যালয়, উমলাফে পূর্ত দফতর, ডলামারায় বন বিভাগের দফতর, হামরেনে বয়ন বিভাগের রেশম কেন্দ্র, হাওড়াঘাটে কংগ্রেস ভবন ও জনস্বাস্থ্য কারিগরী বিভাগের অফিস এবং ডেনগাঁওতে ভূমি সংরক্ষণ বিভাগে আগুন লাগায় প্রতিবাদকারীরা। নিলিপে পোড়ানো হয় আইসিডিএস কেন্দ্র ও স্থানীয় কংগ্রেস ভবন। উমলাফ থেকে ডিফুগামী বাস, ডলামারায় বনবিভাগের জিপ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে, দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেস ডিব্রুগড় থেকে নিরালাং আসার কিছুক্ষণ আগে নিরালাং-এ রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়। তার জেরে লামডিং থেকে তিনসুকিয়া অবধি রেল যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খবর রটে যায়, গত কাল রেল লাইন ওপড়ানোর সময় পুলিশের গুলিতে জখম এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। যদিও পুলিশ তা স্বীকার করেনি। প্রতিবাদকারীদের হাতে ডিফুর বিধায়ক বিদ্যা সিংহ এংলেং ও সাংসদ বীরেন সিংহ ইংতির রবার বাগান তছনছ হয়ে যায়। এর মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ডংকামুকা থেকে কার্বি ছাত্র সংগঠনের সভাপতি লাইসেন ইংলেং ও চার সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নেতাদের মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদে নামে কার্বি স্টুডেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশন-সহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। রেডিও স্টেশনের স্যাটেলাইট ডিশ্ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ডংকামুকামে থানা ঘেরাও হঠাতে পুলিশকে গুলি চালাতে হয়।
জেলার পরিস্থিতি সামলাতে গত রাতেই গুয়াহাটি সার্কিট হাউসে মুখ্যসচিব পি পি বর্মা, ডিজি জয়ন্তনারায়ণ চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব শৈলেশ, এডিজি (এসবি) খগেন শর্মা-সহ তাবড় কর্তারা বৈঠকে বসেন। শৈলেশ জানিয়েছেন, কেন্দ্রের কাছে আরও ১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে পাঠানো হয়েছে। এখন অবধি পাঁচ কোম্পানি এসেছে। ট্রেনে নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারেও কথা চলছে। পুলিশ এদিন দাবি করে, প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে মিশে জঙ্গিরাই হানাহানি ও নাশকতায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। কার্বি আংলঙের এসপি মুগ্ধজ্যোতি মহন্ত আজই জেলার দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি বলেন, “যেখানে সরকারি সম্পত্তি পোড়ানো হয়েছে, অধিকাংশ স্থানে সশস্ত্র, জংলা পোশাক পরা ব্যক্তিদের দেখা গিয়েছে। এ থেকেই মনে হচ্ছে জঙ্গি নেতৃত্বেই এই সব কার্যকলাপ চলছে।”
ইতিমধ্যে, কার্বি আংলং স্বশাসিত পরিষদ ঘোষণা করেছে, চেয়ারম্যান ধনসিংহ ক্রোর নেতৃত্বে ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল ১৪ অগস্ট দিল্লি গিয়ে পৃথক কার্বি রাজ্য গড়ার ব্যাপারে কেন্দ্রের উপরে চাপ দেবে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.