অভাবের সঙ্গে দৌড়, সিঙ্গুরের আশার লক্ষ্য এশিয়াড
মির লড়াই জিতল সিঙ্গুরের মেয়ে। রাজনীতির জমি নয়, খেলার ময়দানে জিতে কৃতিত্বের সাক্ষর রাখল সিঙ্গুরের ঘনশ্যামপুরের আশা রায়।
অভাবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়তে দৌড়তে আশা এ বছর রুপো জিতেছেন এশিয়ান অ্যাথলেটিকসে। সোমবার মোহনবাগান তাঁবুতে ‘মোহনবাগান দিবস’ অনুষ্ঠানে ‘সেরা ক্রীড়াবিদ’ হিসেবে তাঁকে শৈলেন মান্না পুরস্কার দিল মোহনবাগান। মঙ্গলবার রাজ্য ক্রীড়া দফতর থেকে তাঁকে একটি গাড়ি ও এক লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।

রুপো জেতার পর।—ফাইল চিত্র।
তবে লড়াইটা সহজ ছিল না। ছোট থেকেই অভাবকে নিত্যসঙ্গী করে শুরু হয়েছিল দাঁতচাপা লড়াই। বাবা ভোলানাথ সব্জি বিক্রেতা। মা গৃহবধূ। চার মেয়ের দু’জনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ২ জুলাই যখন পুনেতে এশিয়ান অ্যাথেলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হয়েছিল তখন কেউ ভাবতে পারেননি পদক জিতবেন আশা। এর আগে তিনি চেন্নাইয়ে সিনিয়র আন্তঃরাজ্য মিটে দু’দুটো সোনা জিতেছিলেন। পুনের চ্যাম্পিয়নশিপের খেলায় সোনা জিততে না পারলেও ২০০ মিটার দৌড়ে রুপো জেতেন আশা। অল্পে হাতছাড়া হয় সোনা।
মেয়ের সাফল্যে খুশি বাবা মা। জল চিকচিক করছে চোখের কোণে। কাঁপা গলায় মা বুলুদেবী বলেন, “ছোট থেকেই মেয়ের খেলায় মন। দেশের মুখ উজ্জ্বল করুক ও।” কিন্তু ক্ষোভ চাপতে পারেননি আশার কোচ প্রবীর চন্দ্র। বললেন, “ঠিকমতো সুষম খাবার দিতে পারিনি। আর্থিক সমস্যায় অনেক কিছুই ওর জন্য করে ওঠা যায়নি। কিন্তু তাতে কী? এ বার ওর হাতে এশিয়াডে ২০০ মিটারে সোনা দেখতে চাই।”
পুরস্কার পাওয়া বা রুপো জেতা, কোনও কিছুই কিন্তু বদলায়নি আশার জীবন। প্রতিদিন সকালে তাঁর মাটির বাড়ি থেকে বেরিয়ে দৌড় শুরু হত। ১২ তারিখ যখন হাওড়া ফিরলেন, একটা গাড়িও তাঁর জন্য রাখা ছিল না স্টেশনে। লোকাল ট্রেনেই বাড়ি ফেরেন আশা। যদি তাতে কিছু যায় আসে না আশার। কলকাতার সাই-তে অনুশীলনের ফাঁকে শুধু বলেন, “শৈলেন মান্নার নামে পুরস্কার পেয়ে খুব ভাল লাগছে। রাজ্য সরকারও পাশে দাঁড়িয়েছে। আমার দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল।”

সিঙ্গুরে আশাদের মাটির বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
আশাকে এই সম্মান দিতে পেরে খুশি মোহনবাগানও। ক্লাবের সচিব অঞ্জন মিত্র বলেন, “আমাদের দেশে অনেক খেলা থাকলেও ক্রিকেট ছাড়া কোনও খেলাই তেমন গুরুত্ব পায় না। জেলার অনেক প্রতিভাই প্রচারের অভাবে শেষ হয়ে যায়। আশা করি, বাংলার গ্রামে গ্রামে এমন আরও আশা তৈরি হবে।”
প্রিয় ক্লাবের এই উদ্যোগে খুশি হুগলির মোহনবাগান সমর্থকেরাও। শ্রীরামপুরের মোহনবাগান সমর্থক ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “একজন মোহনবাগান সমর্থক ও হুগলির বাসিন্দা হিসেবে আমি গর্বিত।”
মতি নন্দীর কোনি অভাব জয় করে সাফল্য পেয়েছিলেন। সিঙ্গুরের আশা, তাঁদের মেয়েও পারবেন।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.