মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, বলল উচ্চ আদালত
নির্দেশে খুশি সন্তোষের পরিবার
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছাত্র নেতা সন্তোষ সাহানির পায়ে বেড়ি দেওয়ায় ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ জানতে পেরে খুশি তাঁর পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার এ খবর পৌঁছতে সন্তোষ সাহানিকে ঘিরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর সদস্যরা। আদালতের পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানান শিলিগুড়ির গণতান্ত্রিক অধিকারিক রক্ষা সমিতিও।
শিলিগুড়িতে সিপিএম-তৃণমূলের সংঘর্ষের পর প্রতিবাদ মিছিল বার করা হয়। মিছিলে যোগ দিয়ে গ্রেফতার হন সন্তোষ। গত ১৫ এপ্রিল জেলে অসুস্থ হলে তাঁকে চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাতে হাসপাতালেই তাঁর পায়ে বেড়ি পরানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। তা নিয়ে হইচই পড়ে গেলে বেড়ি খুলে দেওয়া হয়। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয় রাজ্যের স্বারাষ্ট্র দফতর এবং মানবাধিকারি কমিশন।
এ দিন আদালতের পর্যবেক্ষণ -এর কথা জানতে পেরেই এসএফআইয়ের ছাত্র নেতারা অনেকে সন্তোষের বাড়ি যান। যদিও সন্তোষ রাজগঞ্জে তাঁর দিদির বাড়িয়ে গিয়েছিলেন। সতীর্থ ছাত্র নেতাদের ফোন পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই শিলিগুড়িতে এসএফআইয়ের হিলকার্ট রোড কার্যালয়ে চলে আসেন সন্তোষ। এর পরেই তাকে নিয়ে হুল্লোড় করেন সদস্যরা। সিপিএম-তৃণমূল ওই গোলমালের ঘটনায় পুলিশ সিপিএম নেতা কর্মীদের অনেককেই ধেরেছিল। এদিন শুনানি থাকায় সদস্যদের সঙ্গে আদালত চত্বরে যান সন্তোষ।
খুশি সন্তোষ।—নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ি সূর্যসেন কলেজের কলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সন্তোষ। বাবা রঘুনাথবাবু পেশায় এক জন সব্জি বিক্রেতা। সন্তোষরা ৬ ভাই ২ বোন। সন্তোষের ঘটনা নিয়ে এই দিন আদালতের পর্যবেক্ষণ জানার পর তাঁর মা ফুলদেবী বলেন, “অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালেই ওর পায়ে বেড়ি পড়িয়ে রাখা হয়েছিল। পরে হইচই হওয়ায় খুলে দেওয়া হয়েছিল। এ দিন আদালত যা জানিয়েছে তাতে আমরা সকলেই খুশি।” সন্তোষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল শিলিগুড়ির গণতান্ত্রিক অধিকারিক রক্ষা সমিতি। সংগঠনের শিলিগুড়ি শাখার সম্পাদক অভিরঞ্জন ভাদুড়ি বলেন, “হাসপাতালে সন্তোষ সাহানির পাড়ে বেড়ি দেওয়ার ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালত তাদের যে পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন তা গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি আদালত ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিলে সরকার সেটা মানবে।” তাঁর যুক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতে বন্দির পায়ে যে বেড়ি দেওয়া যায় না তা অনেকেই জানেন না। আপাতত দৃষ্টিতে তাঁরা ভাবেন পুলিশ-আদালতের ব্যাপার বলে হয়ত বেড়ি পরিয়ে রাখার কথা। কিন্তু তা যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে বাসিন্দাদের তা বুঝতে হবে।” এ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস জানান, তাঁদের কাছে এ ব্যাপারে এখনও কোনও নির্দেশ পৌঁছয়নি। তাঁর দাবি, হাসপাতালে চিকিৎসারত বন্দির পায়ে যে বেড়ি দেওয়া যায় না অনেক চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা স্পষ্ট জানতেন না। পরে সন্তোষের বেড়ি খুলে দেওয়া হয়। তার পরেও ৩ বন্দির পায়ে বেড়ি পরিয়ে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আসতেই জেল কর্তৃপক্ষকে তা খুলে দিতে বলেন তাঁরা। তা নিয়েও গণতান্ত্রিক অধিকারি রক্ষা সমিতি মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ করেছে। এ প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির বিশেষ সংশোধনাগারের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “সন্তোষের ওই ঘটনা নিয়ে আদালত কোনও নির্দেশ দিলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.