হাওড়া স্টেশন চত্বর উন্নয়নে নয়া উদ্যোগ
হাওড়া স্টেশনের চারপাশের পরিবেশ ও দুষ্কৃতীমূলক কার্যকলাপ নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ বার তারই প্রতিকার করতে একসঙ্গে মাঠে নামল রেল, কেএমডিএ, হাওড়া সিটি পুলিশ ও রেলপুলিশ। শুধু স্টেশন চত্বরে অপরাধ নিয়ন্ত্রণই নয়, শহরের প্রবেশ পথের সামগ্রিক দৃশ্য-দূষণ ঘুচিয়ে ওই গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সামগ্রিক পরিবেশ দূষণ রোধ করার কথাও ভাবা হয়েছে।
গত জুন মাসে ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা এক দৃষ্টিহীন আইআইএম ছাত্রকে স্টেশন চত্বরে মারধর করে তাঁর জিনিসপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। এর পরেই একটি সমন্বয় বৈঠক ডাকা হয় হাওড়া ডিআরএম অফিসে। ডিআরএম ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রেলরক্ষী বাহিনী, কেএমডিএ, হাওড়া সিটি পুলিশ ও রেলপুলিশের পদস্থ কর্তারা। স্টেশন চত্বরের উন্নতি, যানচলাচল ব্যবস্থা, যাত্রী নিরাপত্তা ও রাস্তা সম্প্রসারণ নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেখানে। এ বিষয়ে হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “হাওড়া স্টেশনের সামগ্রিক পরিবেশের উন্নতি নিয়ে রেলের সঙ্গে যৌথ ভাবে আলোচনা হয়েছে। কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই মতো কাজও শুরু হয়েছে।”
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথম কাজ হল স্টেশন চত্বর ও গঙ্গার তীরে জোরালো আলো দেওয়া যাতে দুষ্কৃতীরা অন্ধকারের সুযোগ নিতে না পারে। ইতিমধ্যে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড ও হাওড়া ব্রিজ থেকে স্টেশনে ঢোকার মুখে জোরালো আলো দেওয়া হয়েছে। ক্যাব রোডে একটি মাত্র টিকিট কাউন্টার থাকায় দিন ও রাতের ব্যস্ত সময়ে গাড়ির লম্বা লাইন বেরিয়ে যায় স্টেশনের বাইরে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড পর্যন্ত। ভিড় কমাতে ক্যাব রোডের দু’পাশে দু’টি টিকিট কাউন্টার হচ্ছে। যাতে দু’টো লাইনে গাড়ি অনায়াসে স্টেশনের ভিতরে ঢুকতে পারে।
স্টেশন চত্বরে নজরদারির সুবিধার জন্য স্টেশন থেকে বাকি সব বেরোবার পথ বন্ধ করে মাতের দু’টি পথ খোলা রাখার কথা ভাবছে রেল। এর মধ্যে একটি হল হাওড়া সাবওয়ে এবং অন্যটি ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের দিকের বেরোবার রাস্তা। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, স্টেশন থেকে বেরোবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হল সাবওয়ে। তাই সেখানে আর বাজার বসতে দেওয়া যাবে না। এ জন্য সর্বক্ষণ পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করছে হাওড়া সিটি পুলিশ। এ ছাড়া, সাবওয়েতে সারাক্ষণ আলোর ব্যবস্থা রাখার কথা ভাবা হয়েছে। তাই কেএমডিএ প্রস্তাব দিয়েছে বিদ্যুৎ চলে গেলে রেল যাতে সঙ্গে সঙ্গে বিদু্যুৎ সংযোগ দিতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা করতে।
হাওড়া স্টেশন থেকে লঞ্চঘাট আসার একটি সাবওয়ে থাকলেও দীর্ঘদিন তা প্রায় অব্যহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ঠিক হয়েছে যাত্রীরা যাতে ওই পথ ব্যবহার করেন সে জন্য লঞ্চঘাট থেকে রাস্তার দিকে যাওয়ার কোলাপসিব্ল গেট বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হবে হুগলি নদী জলপথ সমবায় সমিতিকে। এর ফলে রাস্তায় পথচারীদের ভিড় কমবে। যানজটও হবে না। দিন ও রাতের ব্যস্ত সময়ে বিশেষ করে রাতে হাওড়া শহরমুখী গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায় স্টেশনে ঢোকার মুখে। ঠিক হয়েছে হাওড়া ব্রিজ থেকে স্টেশনে ঢোকার মুখে বাঁদিকে যে বুলের্ভাড রয়েছে তা ভেঙে দিয়ে রাস্তা চওড়া করা হবে। সেই কাজ শুরুও হয়েছে। রাস্তা চওড়া হলে স্টেশনমুখী গাড়ি সহজে যেতে পারবে, আবার যাত্রী নামিয়ে ফের গাড়ি ঘুরিয়ে করে কলকাতা ফিরতে পারবে। পাশাপাশি রেল ও রাজ্য সরকার চাইছে কলকাতা বন্দর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে গঙ্গার তীরে সমস্ত বেআইনি হোটেলগুলিও উচ্ছেদ করতে। কারণ, এক দিকে যেমন হোটেলগুলি দৃশ্য দূষণের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ করে তেমনি হাওড়া সিটি পুলিশের মতে সেগুলিই দুষ্কৃতীদের আশ্রয়স্থল।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.