এসজেডিএ
দুর্নীতি নিয়ে যে কোনও তদন্তে প্রস্তুত, জানালেন রুদ্র
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির মামলার ব্যাপারে তিনি যে কোনও রকম তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত বলে জানিয়ে দিলেন সংস্থার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। বুধবার শিলিগুড়ির প্রধাননগরে নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি এ কথা জানান। সম্প্রতি সিপিএম এবং কংগ্রেসের তরফে আলাদা ভাবে ওই দুর্নীতির ঘটনায় প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক গোদালা কিরণ কুমারকে গ্রেফতারের দাবি উঠেছে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ না করায় তা নিয়েও অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছে কংগ্রেস, সিপিএম উভয়পক্ষই।
সেই প্রেক্ষাপটে রুদ্রনাথবাবু বলেন, “এসজেডিএ’র দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নানা প্রশ্ন তুলেছে। তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। কিন্তু তাদের মনে রাখা দরকার চেয়ারম্যান থাকার সময় জোড়াপানির ঘটনায় দুর্নীতি নিয়ে আমিই প্রশ্ন তুলেছিলাম। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে তাঁর দফতরের অভিজ্ঞ বাস্তুকারকে দিয়ে তদন্তের জন্য বলেছিলাম। আমি কোথাও চলে যাচ্ছি না। পালিয়ে যাব না। যে কোনও রকমের তদন্তের মুখোমুখি হতে আমি প্রস্তুত।”
পাশাপাশি ১৯৯১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান থাকার সময় বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ নিয়ে তদন্তের দাবি করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “বাম জমানায় দফতরে না এসে, খাতায় হাজিরা না দিয়েও কেউ কেউ বেতন নিয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে। তদন্তে হলেই সে সব অনেক কিছুই স্পষ্ট হবে। বাসিন্দারাও অনেকে সেই দাবি করছেন।”
প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, “এ সব দেখে আমার সেই প্রবাদের কতা মনে যাচ্ছে। তা হল, ‘চোরের মার বড় গলা’।” তাঁর দাবি, তিনি দায়িত্বে থাকার সময় বা তার আগেও বাম জমানায় প্রতি বছর কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ক্যাগ)-কে দিয়ে অডিট করানো হয়েছে। বিজ্ঞাপন দিয়েও তাদের রিপোর্ট নিয়ে কারও কিছু বলার আছে কি না তা-ও জানতে চাওয়া হতো। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘রুদ্রবাবুর সময় তাঁর জ্ঞাতসারেই বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে। তিনি নিজেই তা স্বীকার করেছেন। কী ভাবে দুর্নীতি হল সেটাই প্রশ্ন। তা নিয়ে ওঁর বিরুদ্ধে তদন্তই হচ্ছে না। আমরা সেই দাবি তুলেছি।”
ত্রিফলা আলো থেকে জোড়াপানি নদী খাত সংস্কার করা, মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে নিকাশি তৈরি, শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানোর কাজ, বিধাননগরে আনারস কেন্দ্র তৈরি এবং আনারস উৎসব করা, শহরে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো-সহ এসজেডিএ’র বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের মান, খরচ, টেন্ডার না করে কোটেশনের মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদার সংস্থাকে দিয়ে কাজ করানো নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন অশোকবাবুরা।
জেলা কংগ্রেস এবং যুব কংগ্রেসের তরফেও এসজেডিএ’র দুর্নীতির নিয়ে সিবিআই তদন্ত, রুদ্রবাবু এবং প্রাক্তন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিককে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে। এ দিন দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শঙ্কর মালাকার বলেন, “তদন্ত হচ্ছে। সত্য উৎঘাটিত হোক। দোষীদের শাস্তির দাবি করছি।” রুদ্রবাবু সাংবাদিক বৈঠক করে বক্তব্য রাখলেও এ মুহূর্তে এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চান না গোদালা কিরণ কুমার। তিনি বর্তমানে মালদহের জেলাশাসক। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না কেন তা নিয়ে বোর্ড মিটিংয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি।
অন্য দিকে এ দিন অভিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা নন্দিনী কনস্ট্রাকশনের অন্যান্য কর্ণধার তথা ধৃত শঙ্কর পালের ভাই সিদ্ধার্থ পাল, পার্থ পাল এবং ভাইয়ের ছেলে সঞ্জয় পালকে খুঁজতে খেলাঘর মোড় এলাকায় তাঁদের বাড়ি যায় পুলিশ। পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এসজেডিএ’র বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার একাংশ কাজ করত শঙ্কর পালের নামে থাকা একটি ঠিকাদার সংস্থা এবং নন্দিনী কনস্ট্রাকশন নামে শঙ্করবাবুর আত্মীয়দের নামে থাকা ঠিকাদার সংস্থা। নন্দিনী কনস্ট্রাকশনের ওই কর্ণধারদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলেও তাঁরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ। তাতেই পুলিশের সন্দেহ বেড়েছে। পরিবারের লোকদেরও তা জানিয়ে সিদ্ধার্থবাবু, পার্থবাবু সঞ্জয়বাবুকে দ্রুত পুলিশের সঙ্গে দেখা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে। পুলিশ কমিশনার বলেন, “তদন্ত চলছে। তার জন্য যেমন প্রয়োজন হবে সেই মতো বিভিন্ন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.