বিস্ফোরক নয় পাউডার ও তরল, সিআইডির রায়ে মুক্ত বিমানযাত্রী
ক্স-রে মেশিন এবং প্রশিক্ষিত কুকুরের সন্দেহ ছিল। তবে রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ সিআইডি সোমবার জানিয়ে দিয়েছে, রবিবার কলকাতা বিমানবন্দরে এক বিমানযাত্রীর কাছে পাওয়া সন্দেহজনক পাউডার ও তরল আদতে বিস্ফোরক নয়। সেগুলি ওষুধ। এ দিন ভবানী ভবনে ওই তরল ও পাউডার পরীক্ষা করা হয়। আটক যাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এডিজি (সিআইডি) শিবাজী ঘোষ অবশ্য বলেন, “আমাদের এখানে আটক জিনিসপত্রের যে-পরীক্ষা হয়েছে, সেটা প্রাথমিক। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করালে আসল তথ্য পাওয়া সম্ভব।”
রবিবার সন্ধ্যায় এয়ার এশিয়ার বিমানে কুয়ালা লামপুর যাওয়ার পথে মহম্মদ হাসান নামে এক যাত্রীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় কলকাতা বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ। বিমানবন্দরের এক্স-রে মেশিন জানায়, হাসানের হাতব্যাগে যে-তরল ও পাউডার পাওয়া গিয়েছে, সেগুলি বিস্ফোরক। প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়েও তরল ও পাউডার যাচাই করানো হয়। কুকুরের আচরণে অফিসারদের মনে হয়েছিল, ওই তরল ও পাউডারে বিস্ফোরক আছে।
হাসানকে সোমবার রাত পর্যন্ত আটকে রাখে পুলিশ। শুধু সিআইএসএফের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। এ দিন সকালে সেই তরল ও পাউডার সিআইডি-র কাছে পাঠানো হয়। সিআইডি সূত্রের খবর, ভবানী ভবনে আটক জিনিসগুলি পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে বিস্ফোরকের প্রমাণ মেলেনি। তা ছাড়া কলকাতা পুলিশের প্রশিক্ষিত কুকুরকে দিয়ে যাচাই করিয়েও অফিসারদের মনে হয়েছে, ওই সব জিনিসে বিস্ফোরক নেই।
প্রশ্ন উঠেছে, বিমানবন্দরের পরীক্ষার ফল কী করে এমন উল্টো হল? তা হলে কি সেখানকার যন্ত্র খারাপ? যাত্রীদের আশঙ্কা, সত্যিই যদি ওই সব যন্ত্র খারাপ হয়, তা হলে অন্য কেউ ভুল করে (কারণ হাতব্যাগে তরল বা পাউডার বহন বারণ) তরল বা পাউডার নিয়ে গেলে হাসানের মতো হেনস্থা হতে পারেন। তাঁদের প্রশ্ন, বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এমন যন্ত্র রাখা হবে কেন?
বিমানবন্দরের অফিসারদের বক্তব্য: এখানকার মেশিন একটু বেশি সংবেদনশীল। ফলে অনেক সময়েই বহু নিরাপদ জিনিস পরীক্ষার সময়েও সন্দেহজনক সঙ্কেত মেলে। তাই তা পুলিশকে দিয়ে আবার পরীক্ষা করতে বলা হয়। ওই অফিসারেরা বলেন, “আমাদের পক্ষে কোনও রকম ঝুঁকি নেওয়া সম্ভব নয়। বিস্ফোরক সন্দেহে নিরীহ জিনিস ধরা পড়লে ক্ষতি কম। কিন্তু নিরীহ জিনিস বিস্ফোরক হিসেবে বেরিয়ে গেলে ক্ষতি অনেক বেশি।” তাঁরা জানান, রবিবার আটক করা জিনিসপত্র তো শুধু যন্ত্রেই যাচাই করা হয়নি। প্রশিক্ষিত কুকুরও সেগুলো পরীক্ষা করেছিল। কুকুর হয়তো ওই তরলে রাসায়নিকের গন্ধ পেয়ে ইঙ্গিত করেছে। তার ইঙ্গিতে সন্দেহ বেড়েছে।
আর হাসানের হয়রানির কী হবে?
বিধাননগর কমিশনারেটের অতিরিক্ত ডিসি সন্তোষ নিম্বলকার জানান, হাসান সম্পর্কে সবিস্তার খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “ওঁর বাড়ি উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে। সেখানে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে হাসানের কোনও যোগ নেই। এমনকী হাসান মালয়েশিয়ায় যে-মহিলার কাছে কাজ করেন, তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনিও বলেছেন, হাসান নিরীহ।” হাসানের বন্ধু, আত্মীয়দের সঙ্গেও কথা বলেছে পুলিশ। নিম্বলকরের কথায়, “পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মনে হচ্ছে, হাসান নিরপরাধ।” তার উপরে সিআইডি-ও পরীক্ষা করে জানিয়েছে, ওই তরল ও পাউডারে বিস্ফোরক নেই। সেগুলি ওষুধ। যে-চিকিৎসক সেই ওষুধ দিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গেও কথা বলেছে বিধাননগরের পুলিশ। সোমবার রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয় হাসানকে।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.