মারধরের অভিযোগ মেমারিতে
প্রার্থীরা আক্রান্ত, নালিশ সিপিএমের
প্রার্থীদের উপরে হামলা ও ঘরছাড়া করার অভিযোগ তুলল সিপিএম। প্রচারে বেরিয়ে তাঁদের প্রার্থীরা আক্রান্ত হচ্ছেন, থাকতে দেওয়া হচ্ছে না গ্রামেওপুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানিয়েছেন রায়নার সিপিএম নেতারা। এরই মধ্যে শনিবার মেমারিতে প্রচারে গিয়ে দুই সিপিএম মহিলা প্রার্থী প্রহৃত হন বলে অভিযোগ।
সিপিএমের সদর জোনাল কমিটির সম্পাদক মেহবুব আলম অভিযোগ করেন, মেমারির খাঁড়গ্রামে প্রচারে গেলে নবস্থা ২ পঞ্চায়েতের দুই প্রার্থী টুকটুকি মণ্ডল ও সোমাই বেসরার উপরে হামলা হয়। তাঁরা দু’জন ছাড়াও সঞ্জয় মণ্ডল নামে আর এক সিপিএম কর্মী এই ঘটনায় জখম হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাতপাতালে ভর্তি। মেহবুব আলমের দাবি, পুলিশ আহতদের হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে পালশিট মোড়ে ছেড়ে দেয়। হাসাপাতালের মহিলা জরুরি বিভাগে ভর্তি ওই দুই মহিলা প্রার্থীর অভিযোগ, “ভোটের প্রচারে আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়েছিলাম। পটলডাঙার কাছে প্রায় তৃণমূলের প্রায় ২৫ জন আমাদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে মারধর শুরু করে।” টুকটুকিদেবী অভিযোগ করেন, গোলমালের মধ্যে তাঁর শাড়ি খুলে নেওয়া হয়। গ্রামের একটি বাড়ি থেকে শাড়ি নিয়ে তিনি হাসপাতালে পৌঁছন।
‘গ্রামছাড়া’ সিপিএম প্রার্থী আমিনুল হক ও তাঁর পরিবার।
মেমারি থানা সূত্রে জানানো হয়, অভিযোগ দায়েরের জন্য ওই মহিলাদের মেমারি থানায় যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা তাতে রাজি হননি। তাই তাঁদের পালশিট মোড়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা সঞ্জয় কোনারের পাল্টা দাবি, “হাটগোবিন্দপুরে দলের সভা সেরে আমাদের কিছু সমর্থক বাড়ি ফেরার সময়ে সিপিএমের লোকজন খাঁড়গ্রামে হামলা চালায়। আমাদের একটি অফিসও ভাঙচুর করা হয়। তাতে ক্ষুব্ধ গ্রামের মানুষজনই হামলাকারীদের মারধর করেছে।”
শনিবারই সিপিএমের রায়না জোনাল কমিটির তরফে পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার কাছে তাঁদের প্রার্থীর আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ জানানো হয়। ওই জোনাল কমিটির সম্পাদক আক্তার আলি, স্থানীয় বিধায়ক বাসুদেব খাঁ-সহ সাত জন সিপিএম নেতা পুলিশ সুপারের কাছে যান। তাঁরা অভিযোগ করেন, রায়না ১ ব্লকের হিজলনা পঞ্চায়েতের জোৎসাদি গ্রামে বাবর আলি মল্লিক, চাঁদনি বেগম, সফিকুল হক শেখ ও সমীরণ বেগম শেখ এবং রায়না পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী আমিনুল হক সিপিএমের প্রার্থী হওয়ার ‘অপরাধে’ গ্রামে ঢুকতে পারছেন না। ভোটের প্রচারও চালাতে পারছেন না, বাধ্য হয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। তাঁদের বাড়ির লোকেদের উপরে হামলা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানান সিপিএম নেতারা।
বর্ধমান মেডিক্যালে আহত টুকটুকি মণ্ডল।
আক্তার আলিদের অভিযোগ, সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী আমিনুল হক। তিনি জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচন আধিকারিক ওঙ্কার সিংহ মিনার কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, তিনি প্রার্থী হওয়ার পরেই গত ৬ জুন জোৎসাদি গ্রামের কিছু তৃণমূল কর্মী তাঁর বাবা শেখ মইনুল হককে মারধর করে। অভিযোগ জানাতে তাঁর বাবা রায়না থানায় গেলে গেলে পুলিশ অপমান করে বের করে দেয়। হামলার হাত থেকে বাঁচতে তিনি সপরিবারে বর্ধমানের খাগড়াগড় এলাকায় ভাড়া থাকছেন। কিন্তু সেখানেও তৃণমূলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাঁকে মারধর করে বাড়িতে তালা লাগিয়ে দেয়। এমনকী, বর্ধমানের নবাবহাটে শিবপুর দিঘিরপাড়ে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে গিয়েও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে আমিনুলের অভিযোগ। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ভাড়াবাড়িতে বইপত্র আটকে থাকায় তাঁর ছেলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সাইফুল হকের স্কুলে যাওয়া বন্ধ। বইপত্র আনতে তাঁর শ্যালিকা মেহেরুন্নেসা খাতুন খাগড়াগড়ে গেলে তৃণমূলের কর্মীরা তাঁকে হুমকি দেয়, ৪০ হাজার টাকা জরিমান না দিলে এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না।
জেলাশাসকের দফতর সূত্রে জানা যায়, এই অভিযোগের তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে পুলিশকে। পুলিশ সুপার বলেন, “রায়নার সিপিএম নেতাদের কাছে অভিযোগ পেয়েছি, পাঁচ জন প্রার্থী এলাকায় ঢুকতে পারছেন না। রায়না ও বর্ধমান থানাকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” জেলা তৃণমূল নেতা সৈয়দ মেহবুব রহমান বলেন, “আমিনুল হকের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। রাজনৈতিক হানাহানিতে একটি শিশুর লেখাপড়া ক্ষতি হওয়া ঠিক নয়।” তৃণমূলের বর্ধমানের অন্যতম পর্যবেক্ষক অলোক দাসের বক্তব্য, “আমাদের লোকজনের বিরুদ্ধে রায়নায় সিপিএম প্রার্থীদের গ্রামছাড়া করা বা তাঁদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ ঠিক নয়।”

—নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.