আদিবাসী বধূকে বিবস্ত্র
করে মার, ফেরার স্বামী
দিবাসী পরিবারের এক বধূকে বিবস্ত্র করে মারধর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল তাঁর বিএসএফ জওয়ান স্বামী, দুই দেওর এবং এক দেওরের ছেলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতের ওই ঘটনায় অবশ্য পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি। বর্ধমানের কালনা ১ ব্লকের বেগপুর পঞ্চায়েতের কুলদা গ্রামের ওই মহিলা আপাতত কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। তিনি জানিয়েছেন, বছর কুড়ি আগে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের বছর আঠারোর একটি মেয়ে আছে। স্বামী রামাই মান্ডি ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রথম থেকেই তাঁকে টাকার জন্য চাপ দিত বলে অভিযোগ।
পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে মহিলা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ রামাই মদ্যপ অবস্থায় ঘরে ঢুকে বাপের বাড়ি থেকে দশ হাজার টাকা আনার জন্য তাঁকে চাপ দিতে থাকে। তিনি রাজি না হওয়ায় রামাই, দুই দেওর কাইলু ও রবীন এবং রবীনের ছেলে অরবিন্দ তাঁকে মারধর করে। তাঁর মেয়ে বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। বধূটির অভিযোগ, এর পরে বিবস্ত্র করে বাড়ি থেকে প্রায় ছ’কিলোমিটার দূরে শিমুলগড়িয়া মাঠে ক্যানালের পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে রামাই তাঁকে দিয়ে লিখিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে যে, তারা নয়, তৃণমূল কৃষাণ সেলের ব্লক সভাপতি ইনসান মল্লিক এবং আলতাব হোসেন এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি তা লিখতে অস্বীকার করলে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে তাঁকে খুন করার চেষ্টা হয়। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে রামাইরা পালায়। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে।
মহিলার ছোট দেওর অশোক মান্ডি অবশ্য দাবি করেছেন, বৌদির সঙ্গে তাঁর ‘সম্পর্ক’ নিয়ে সন্দেহই এই মারধরের অন্যতম কারণ। তাঁর কথায়, “আমাকে এবং বৌদিকে নিয়ে দুই দাদা কুৎসা রটাত। তারাই বড়দাকে ভুল বুঝিয়ে বাড়িতে ডেকে এনেছিল। ওই রাতে বৌদি, ভাইঝি এবং আমি টিভি দেখছিলাম। আমায় ঘর থেকে বের করে দিয়ে ওরা বৌদি আর ভাইঝিকে মারধর করে। ভাইঝি কোনও রকমে চিলেকোঠার ছাদ দিয়ে নীচে লাফিয়ে পড়ে।” তাঁর দাবি, “আসলে বৌদির নিজের কিছু জমি আছে। সেটা দখল করে চাষবাস করবে বলেই আমার দুই দাদা ষড়যন্ত্র করেছে।” রামাই যে দুই তৃণমূল নেতার নাম জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল অভিযোগ, তার পিছনে আবার ‘প্রতিহিংসা’ দেখছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল। অভিযুক্ত রবীন মান্ডি এ বার বেগপুর পঞ্চায়েতের ধেড়েপাড়া গ্রামের আসনে সিপিএমের হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। পরে তিনি তা প্রত্যাহার করে নেন। তৃণমূলের চাপেই তা করতে হয়েছিল বলে সিপিএম সূত্রের দাবি। ইনসান মল্লিকের বক্তব্য, “এই পঞ্চায়েত এলাকা প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথের বিধানসভা এলাকায় পড়ে। আমাদের জড়িয়ে সিপিএম তাঁর গায়েই কালি ছিটানোর চেষ্টা করছে।” সিপিএমের কালনা জোনাল কমিটির সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কী ঘটেছে, জানি না। তবে বেগপুর হল তৃণমূলের মুক্তাঞ্চল। সেখানে ভয় দেখিয়ে আমাদের প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি। মিথ্যা মামলায় জড়ানো এবং বাড়ি ভাঙচুরের জেরে আমাদের নেতা-কর্মীরা ঘরছাড়া। ওখানে যা-ই ঘটুক, তাতে অন্তত আমাদের কেউ নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.