দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া
ফের দখলের গ্রাসে
বিপাকে পথচারী
পূর্ত দফতরের খাতায় ‘জিরো পয়েন্ট’ হিসেবে চিহ্নিত। পুরসভার হিসেবে দুই পুর এলাকার সংযোগস্থল। পথচারীদের কথা ভেবে বছর কয়েক আগে সম্প্রসারণ করা হয়েছিল গড়িয়া মোড়ের। কিন্তু সম্প্রসারিত অংশ-সহ রাস্তার দু’ধার ফের দখলদারদের কবলে। পথচারী স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টিও শিকেয় উঠেছে।
নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, রাস্তার দু’ধারে বিভিন্ন রকমের দোকান, হকারদের পসরা, একাধিক অটোস্ট্যান্ড, রিকশা, বাস— সব মিলিয়ে দিনের ব্যস্ত সময়ে গড়িয়া মোড় বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, বহু চেষ্টার পরে গড়িয়া মোড়ের বড় একটা অংশ থেকে দখলদার হটিয়ে সম্প্রসারণ করা হয়েছিল। সেই সম্প্রসারিত অংশ ফের দখলদারদের হাতে চলে যায় কী করে?
রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রোডের সংযোগস্থল গড়িয়া মোড়। কিছুটা দূরেই গড়িয়া স্টেশন এবং বোড়াল মেন রোড মিশেছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রোডে। সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে কবি নজরুল মেট্রো স্টেশন এবং দু’টি সরকারি বাস ডিপো। ফলে নিত্য দিন কয়েক হাজার পথচারীর যাতায়াত এই পথে।
এক নিত্যযাত্রী রাজপুরের অর্ক সরকার বললেন, “সকাল-সন্ধ্যে গড়িয়া মোড় দিয়ে হাঁটতে হয় প্রাণ হাতে নিয়ে। ঠ্যালা বা গুঁতো না খেয়ে এখান দিয়ে হাঁটা কার্যত অসম্ভব। হাঁটার সময়ে ভয় লাগে কখন ঘাড়ের উপরে যাত্রী বোঝাই বাস কিংবা অটো এসে পড়ে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গড়িয়া মোড়ের এই সমস্যা নিয়ে বার বার পুর প্রতিনিধিদের জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি। গড়িয়া মোড়ের এমন হাল যে একটা বড় ধরনের দুর্ঘটনা যে কোনও সময়ে ঘটে যেতে পারে।
কলকাতা পুরসভার ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই সমস্যা দীর্ঘ দিনের। গড়িয়া মোড়ের যে অংশ আমার ওয়ার্ডে পড়ছে সেই অংশ দখলমুক্ত করার জন্য বহু বার উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের চয়ন ভট্টাচার্য বলেন, “কলকাতা পুরসভায় বাম বোর্ডের আমলে এক বার দখলমুক্ত করা হয়েছিল। বর্তমান বোর্ডের নজরদারির অভাবেই গড়িয়া মোড়ের ফের এই হাল।’’
গড়িয়া মোড়ের এক অংশে কলকাতা পুরসভার এলাকা শেষ হচ্ছে। শুরু হচ্ছে রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, দুই পুরসভা এলাকার সংযোগস্থলের মতো এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দীর্ঘ দিন বিপজ্জনক অবস্থায় থাকে কী করে?
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার উপ-পুরপ্রধান এবং উত্তর সোনারপুরের বিধায়ক তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম বলেন, ‘‘ওই এলাকার সমস্যা নিয়ে আমরা কলকাতা পুরসভার সঙ্গে কথা বলেছি। খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ছবি: সুব্রত রায়




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.