জানেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
চড়া দরে রক্ত বিক্রির চক্র কাঁথি ব্লাড ব্যাঙ্কে
কে বেহাল পরিকাঠামো। তায় ভোট বাজারে শিবির না হওয়ায় চরম রক্ত সঙ্কট। কাঁথি মহকুমা ব্লাড ব্যাঙ্ক যেন ‘নেই’ রাজ্য। আর সেই সুযোগে চড়া দরে রক্ত বিক্রি করছেন এক শ্রেণির দালাল। যদিও দালালদের বিষয়টি নজরে নেই বলেই জানিয়েছেন কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে সদ্য আসা সুপার সব্যসাচী চক্রবর্তী। তবে, রক্তদান শিবিরের অভাবে ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সংগ্রহ তলানিতে এসে ঠেকেছে বলে মেনে নিয়েছেন তিনি।
কাঁথি ও এগরা মহকুমার ২টি মহকুমা হাসপাতাল, একটি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, ১৩টি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র-সহ অসংখ্য নার্সিংহোমের একমাত্র ভরসা কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক। এখানে প্রায় সাতশো থেকে আটশো ইউনিট রক্ত রাখার ব্যবস্থা থাকলেও বতর্মানে একশো ইউনিট রক্তও মজুত নেই বলে ব্লাড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এক দিকে গরম আর সামনে পঞ্চায়েত ভোট থাকায় গ্রামগঞ্জে বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠনগুলি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে পারছে না। চলতি বছরে রক্তদান শিবিরের সংখ্যা কম হওয়ায় গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকেই রক্তের আকাল দেখা দেয়। এখন তা চরমে উঠেছে।
রক্তদান শিবির আয়োজকদের অন্যতম সাতমাইল মানব কল্যাণ কৃষ্টি সংস্থার সুব্রত মাইতি ও গৌরাঙ্গ মণ্ডলদের অবশ্য বক্তব্য, “শুধু শিবির কম হওয়াকেই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা যায় না। যখন শিবির হয়, তখনও ব্লাড ব্যাঙ্কে কর্মীর অভাব ও পর্যাপ্ত কিট না থাকার ফলে আমরা বেশি পরিমাণে রক্ত সংগ্রহ করতে পারি না।”
কারণ যাই হোক না কেন, রক্তের এই সঙ্কটে চরম অসুবিধায় পড়েছে কাঁথি ও এগরা মহকুমার হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলি। জরুরি অস্ত্রোপচার ও প্রসূতিদের জন্য রক্ত সংগ্রহে রাখতে হয় প্রতিটি হাসপাতালকেই। দিঘা-কলকাতা সড়ক পথ-সহ বিভিন্ন সড়কগুলিতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটায় এই এলাকায় রক্তের চাহিদা এমনিতেই বেশি। এছাড়াও কাঁথি ও এগরা মহকুমার প্রায় ৪৫০ জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীর পরিবারও প্রয়োজনীয় রক্তের জন্য কাঁথি ব্লাড ব্যাঙ্কের উপর নির্ভরশীল। পূর্ব মেদিনীপুর দেশপ্রাণ নার্সিংহোম ওনার্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রবীর মিশ্র বলেন, “ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের অভাবের সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির দালাল রোগীর পরিবারের লোকেদের দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা দরে রক্ত কিনতে বাধ্য করছে।”
ব্লাডব্যাঙ্কের পরিকাঠামো নিয়ে রক্তদান শিবির আয়োজকদের অভিযোগও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ২০১০ সালের পর থেকে ব্লাডব্যাঙ্কে কোনও স্থায়ী চিকিৎসক নেই।
কাঁথির সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তরুণকান্তি খাটুয়া জানান, ২০১০ সালে ব্লাডব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত চিকিসক অনিল মুর্মু বদলি হয়ে যান। এর পর ২০১১ সালে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অমিত সাহাকে কাঁথি ব্লাডব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত তিনি কাজে যোগ দেননি। তাই প্রবীণ দুই অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক বাদল কুমার নন্দ ও হেমকান্ত দে-কে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করে কাজ চালানো হচ্ছে। সাত থেকে আট জন কর্মীর জায়গায় রয়েছেন মাত্র পাঁচ জন। তা-ও প্রত্যেকেই অস্থায়ী। কোনও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ও সাফাইকর্মী নেই ব্লাডব্যাঙ্কে। মহকুমা হাসপাতালের একজন নার্সকে দিয়ে কোনও রকমে কাজ চালানো হচ্ছে। ন্যূনতম পরিকাঠামো না থাকায় এক সময় ওই ব্লাডব্যাঙ্কের লাইসেন্স পর্যন্ত বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.