পর্যটক টানতে ফের একবার ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন পর্যটন স্থলগুলির মধ্যে বিমান পরিষেবা চালুর চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। বণিক সভা ও ঝাড়খণ্ড সরকারের অসামরিক উড়ান ও পর্যটন দফতর— এই তিন বিভাগ যৌথভাবে এই প্রকল্পে কাজ করবে বলে ভাবা হয়েছে। আপাতত জুলাই মাসে, দেওঘরের শ্রাবণী মেলার সময় রাঁচি-দেওঘর বিমান পরিষেবা চালুর কথা ভাবা হয়েছে। এর জন্য পরীক্ষমূলক উড়ানও করা হয়েছে। এর আগেও বেশ কয়েকবার সরকারের তরফে এমন পরিকল্পনা নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা কাগজে-কলমেই থেকে গিয়েছে। এ বার অবশ্য আগাম ‘হোম ওয়ার্ক’ করেই মাঠে নেমেছে সরকার।
ঝাড়খণ্ড বণিকসভা জানাচ্ছে, আগামী ২২ জুলাই থেকে দেওঘরে শুরু হচ্ছে শ্রাবণ মেলা। সেদিন থেকে পরবর্তী এক মাস অর্থাত্ ২২ আগস্ট পর্যন্ত এই বিমান পরিষেবা চালানো হবে। নয় আসন বিশিষ্ট তিনটি বিমান প্রতিদিন রাঁচি থেকে দেওঘরের মধ্যে যাতায়াত করবে। বিমানে দেওঘর গিয়ে মন্দিরে পুজো দিয়ে ফের রাঁচি ফিরে আসা---একটি সার্বিক প্যাকেজের পরিকল্পনা করা হয়েছে। মাথা পিছু খরচ ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৯৯৯ টাকা। বিমান ভাড়া, গাড়ি ভাড়া, গেস্ট হাউসের ভাড়া, দেওঘরের বৈদ্যনাথ মন্দির তথা বাবাধামে ‘ভিআইপি’ ব্যবস্থায় পুজো দেওয়া এবং ফের দেওঘর থেকে রাঁচি ফিরে আসার সব খরচই ধরা থাকবে এর মধ্যে। সকালে গিয়ে বিকেলে ফিরে আসা। বণিক সভার সভাপতি রঞ্জিত কুমার টিব্রেওয়াল জানান, “এই প্যাকেজে পর্যটকরা শ্রাবণী মেলার সময় মন্দিরে গেলেও বিরাট লাইনে তাঁদের দাঁড়াতে হবে না। পুজো দেওয়ার জন্য ধাক্কাধাক্কিও করতে হবে না। পর্যটকরা মন্দিরে গিয়ে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় পুজো দিতে পারবেন।” তিনি বলেন, “পর্যটনের উন্নতির জন্যই এই পরিকল্পনা। এ পর্যন্ত প্রচুর লোকজনের সাড়া পাওয়া গিয়েছে। যদি এই পরিকল্পনা সফল হয় তবে পারশনাথ যাওয়ার জন্য বিমান পরিষেবা চালুর কথা ভাবা হয়েছে।” মাওবাদী আতঙ্কে দীর্ঘদিন ধরেই ঝাড়খণ্ডের পর্যটন ব্যবস্থা মার খাচ্ছে। সেই অবস্থা থেকে যে কোনও উপায়ে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে সরকার। বেতলা, নেতারহাট, পারশনাথের মতো দর্শনীয় জায়গাগুলিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। রাজ্য পর্যটন দফতরের হিসেব, ঝাড়খণ্ডে দেওঘরই একমাত্র জায়গা, যেখানে সারা বছর পর্যটকদের ভিড় হয়। প্রাথমিক পরীক্ষাটা তাই দেওঘর দিয়েই শুরু করা হচ্ছে। পযর্টন দফতর এবং অসামরিক উড়ান দফতরের প্রধান সচিব সজল চক্রবর্তী জানান, বিমানে রাঁচি থেকে দেওঘর পৌঁছতে সময় লাগবে পঞ্চাশ মিনিট। এই প্যাকেজে পর্যটকদের সব ধরনের স্বাচ্ছন্দ্যের দিকেই নজর রাখা হবে। |