চার মাসে গেলেন পাঁচ শিক্ষক
কাজের সুযোগ নেই, ফের ইস্তফা প্রেসিডেন্সিতে
প্রেসিডেন্সি থেকে চলে যাওয়ার তালিকায় নাম উঠে গেল আরও এক শিক্ষকের।
রসায়ন, প্রাণিবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা ও বাংলার পরে এ বার বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়লেন শারীরবিদ্যা বিভাগের এক শিক্ষক। গত ৪ জুন কর্তৃপক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করেছেন শারীরবিদ্যা বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর সুদীপ্ত সরস্বতী। এক মাসের আগাম নোটিস দিয়ে ওই শিক্ষক ব্যক্তিগত কারণে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে শারীরবিদ্যা বিভাগ সূত্রের খবর, গবেষণার যথেষ্ট সুযোগ না-পাওয়াতেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত।
গত ২৭ মে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর দাশগুপ্তের কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করেন বাংলার শিক্ষক প্রকাশকুমার মাইতি। তিনিও ব্যক্তিগত কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে চান বলে চিঠিতে লিখেছিলেন। কিন্তু উপাচার্য মালবিকা সরকার জানান, বেতন নিয়ে মোহভঙ্গ হওয়াতেই পদত্যাগ করেছেন তিনি।
আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ বা ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির মতো আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন সুদীপ্তবাবু। পদত্যাগপত্রে বেতন নিয়ে কোনও সমস্যার কথা জানাননি তিনি। তবে শারীরবিদ্যা বিভাগ সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্সিতে এসে তিনি যথেষ্ট কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না বলে হতাশ হয়েছেন। সহকর্মীদের কারও কারও কাছে অনুযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্সিতে গত ছ’মাসে তিনি গবেষণা করা, গবেষণাপত্র তৈরি করা ইত্যাদি কাজের সুযোগই পাননি। সেই হতাশা থেকেই সুদীপ্তবাবু ইস্তফা দিয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করছেন তাঁর সহকর্মীদের অনেকে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্সিতে শিক্ষকতার থেকে ভাল কোনও কাজের সুযোগ পেয়ে ইস্তফা দিয়েছেন সুদীপ্তবাবু। ওই শিক্ষক অবশ্য নিজের ইস্তফার ব্যাপারে কোনও কথাই বলতে চাননি।
সুদীপ্তবাবুকে নিয়ে গত চার মাসে প্রেসিডেন্সি ছেড়ে গিয়েছেন পাঁচ জন শিক্ষক। সকলেই পদত্যাগপত্রে ব্যক্তিগত কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার কথা জানিয়েছেন। যদিও ইস্তফার প্রকৃত কারণ হিসেবে কখনও কাজ করেছে বেতন নিয়ে হতাশা, কখনও পদ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোলমাল, কখনও বা কাজের যথেষ্ট সুযোগ না-পাওয়া। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বিজ্ঞান শাখার অন্য কয়েক জন শিক্ষক এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ক্যাম্পাসে আসছেন না। তাঁরাও প্রকাশবাবু বা সুদীপ্তবাবুর পথ ধরতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে সম্প্রতি বাধ্য হয়ে ইস্তফা দিয়েছেন ইতিহাসের অধ্যাপক বেঞ্জামিন জাকারিয়া। এ ভাবে একের পর এক শিক্ষকের ছেড়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রেসিডেন্সির ছাত্রছাত্রীদের একাংশও হতাশ।
প্রেসিডেন্সিকে বিশ্ব মানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে মেন্টর গ্রুপ গড়েছে রাজ্য সরকার। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষক নিয়োগ করতে উদ্যোগী হয়েছেন মেন্টর গ্রুপ ও বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সফরের শুরুতেই এ ভাবে শিক্ষকদের ইস্তফা দেওয়ার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রেসিডেন্সির শিক্ষকদের একাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ অবশ্য এতে খুব একটা আতঙ্কিত নন। উপাচার্য মালবিকাদেবী মঙ্গলবার বলেন, “কেউ কেউ ছেড়ে যাচ্ছেন ঠিকই। তাঁরা না-গেলেই ভাল হয়। তবে এতে শিক্ষকের অভাব তৈরি হচ্ছে না। কারণ, অনেকে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতেও চাইছেন।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.