বিয়ে করেই স্বামীর আসনে মনোনয়ন নববধূর
ঞ্চায়েতে নিজের আসনে নিজের স্ত্রীকে দাঁড় করানোর ঘটনা নতুন নয়। তা বলে স্ত্রীকে জিতিয়ে আসন ধরে রাখতে প্রায় রাতারাতি বিয়ে, এমন শোনা যায়নি। জনতার দাবিতে শেষ পর্যন্ত তাই করলেন কোচবিহারের দিনহাটার বামনহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা ধীরেন বর্মন। পাত্রী খুঁজে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হলেও, বউভাত হবে ভোটের পর। রবিবার ওই গ্রাম পঞ্চায়েত কালমাটির বাসিন্দারা অনেকেই ছিলেন সেই রেজিস্ট্রি বিয়ের সাক্ষী। ওই গ্রামেরই পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন ধীরেনবাবু। তাঁর সদ্য-বিবাহিতা স্ত্রী সান্ত্বনা বর্মন ওই পঞ্চায়েত আসনের জন্য সোমবার মনোনয়ন পত্র তুলেছেন। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন ধীরেনবাবু। আজ, মঙ্গলবার ওই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কথা।
সান্ত্বনা ও ধীরেন বর্মন। —নিজস্ব চিত্র।
নববধূ কী বলছেন? উচ্চ মাধ্যমিক পাশ সান্ত্বনার কথায়, “আমার স্বামী পরোপকারী বলে এলাকায় পরিচিত। আমাদের পরিবারও ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে যুক্ত। ওঁরা পণ চাননি, বরং আমাকে প্রার্থী করবেন বলেছেন। গ্রামের মানুষের জন্য কাজেও ওঁর সঙ্গে সামিল হতে পারব।”
মাধ্যমিক-পাশ ধীরেনবাবু পেশায় কৃষিজীবী ও পাট-তামাকের কেনাবেচা করেন। বিধবা মাকে নিয়ে সংসার। ধীরেনবাবু বললেন, “সব সময় গাঁয়ের লোকের কথাই ভাবি। তাঁদের আপদে-বিপদে থাকার চেষ্টা করি। সকলে আমাকে ভালবাসেন। সংসারে সময় দিতে পারব কি না ভেবে বিয়ে করিনি। এখন গাঁয়ের লোকজন চাপ দিল। আমি ভেবে দেখলাম ভালই হবে। দু’জনে মিলেই গ্রামের লোকজনের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পাব। তাই রাজি হলাম।”
বিয়ে তো হল। কিন্তু বউভাত, গাঁয়ের লোকজনকে খাওয়ানো তা কবে হবে? নতুন বরের জবাব, “রবিবার রাতেই মিষ্টিমুখ হয়েছে। এখন সময় কোথায়? বাকি খাওয়া-দাওয়া, নানা আচার পালন সব ভোটের পরে হবে।”
ফরওয়ার্ড ব্লক সূত্রের খবর, ধীরেনবাবুর আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় দলের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ সেখানে এক মহিলা প্রার্থীর নাম বাছাই করতে যান। সেটা দিন চারেক আগের ঘটনা। সেই সময়ে দলের সদস্যরা, গ্রামের মানুষের একাংশ জানিয়ে দেন, ধীরেনবাবুর জায়গায় কাউকে প্রার্থী করা যাবে না। উদয়নবাবু তখন ধীরেনবাবুকে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী করার প্রস্তাব দেন। তাতেও এলাকার মানুষ রাজি হননি। তাঁরা জানিয়ে দিলেন, গাঁয়ের কারও সমস্যার কথা শুনলে যাঁকে পাশে পাওয়া যায়, তাঁকে সরানো যাবে না। উদয়নবাবু বলেন, “তখনই গ্রামবাসীদের কয়েকজন ধীরেনের বিয়ে দিয়ে তাঁর স্ত্রীকে প্রার্থী করার কথা বললেন। এর পরেই পাত্রী খোঁজা শুরু হল।”
বেশ কয়েকজন পাত্রী দেখার পরে ফব সমর্থক নরেশ বর্মনের মেয়ে সান্ত্বনার খোঁজ মেলে। দুই পরিবারের তরফে আলোচনা এগোয় দ্রুত। তারপরেই রেজিস্ট্রি। ওই বিয়ের অন্যতম উদ্যোক্তা তথা গ্রাম পঞ্চায়েতের ফব-র বিদায়ী উপপ্রধান শিবেন রায় বলেন, “কালমাটিরই বাসিন্দা নববধূ সান্ত্বনা। তাই এখানে তার প্রার্থী হওয়া নিয়ে সমস্যা নেই। সব কিছু ভেবেই রবিবার রেজিস্ট্রি করে ওদের বিয়েটা দেওয়া হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.