দু’দলকেই দুষছে বামেদের সংগঠন
তৃণমূল নেতার সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন, জমি দখলে অভিযুক্ত কংগ্রেস
তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হলেন শিলিগুড়ি পুরসভার ইনটাক সমর্থিত পুর কর্মচারি সংগঠন। সোমবার দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জীবন মজুমদার অভিযোগ করেন, তৃণমূলের কাউন্সিলরদের একাংশ প্রভূত সম্পত্তির অধিকারী হয়েছেন। কোথা থেকে, কী ভাবে তাঁদের এত সম্পত্তি হল সেই হিসেব মানুষের সামনে বুঝিয়ে দিতে হবে বলে তিনি দাবি করেন। কিন্তু, তৃণমূলের কোন কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ তা স্পষ্ট করতে রাজি হননি জীবনবাবু। এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে জীবনবাবুর দাবি, “কে, কী সম্পত্তি কী ভাবে করেছেন সেই মুখোশ ঠিক সময়ে খুলে দেওয়া হবে।”
সোমবার শিলিগুড়ি পুর ভবনে কর্মচারিদের আন্দোলনের সময়ে প্রকাশ্যে জীবনবাবু ওই অভিযোগ করায় শহরেও আলোড়ন পড়েছে। শহরবাসীদের অনেকেরই বক্তব্য, জীবনবাবু যদি জেনে থাকেন, তৃণমূলের কোনও কাউন্সিলর অসদুপায়ে একাধিক গাড়ি, প্রাসাদোপম বাড়ি, জমি-পুকুর কিংবা নানা সম্পত্তির অধিকারী হয়েছেন তা হলে প্রকাশ্যে সে কথা স্পষ্ট করে জানানো উচিত। শহরবাসীদের মতে, বিষয়টি জেনেও গোপন করে রাখলে জীবনবাবুর অন্যায় কাজকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উঠতে পারে। আবার ভিত্তিহীন অভিযোগ করে থাকলে তা নিয়েও মিথ্যেচারিতার দোষে দুষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার মহাসচিব কৃষ্ণ পাল বলেন, “যিনি এই অভিযোগ গুলি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে জমি দখলের মতো অন্যায় কাজের অভিযোগ রয়েছে।” কিন্তু, কোথায়, কার জমি জীবনবাবু দখল করেছেন, সেই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য কৃষ্ণবাবু দিতে পারেননি। ফলে, তাঁর অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে কি না অথবা জেনেও তিনি জীবনবাবুকে আড়াল করছেন কি না সেটা নিয়ে শহরে প্রশ্ন উঠেছে।
এমতাবস্থায়, বামেরা কংগ্রেস-তৃণমূল, দু-দলের কাউন্সিলরদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন। বামেদের অভিযোগ, শহরের নাগরিক পরিষেবা কিংবা উন্নয়নের কথা না ভেবে কারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কী ধরনের কাজ করে চলেছেন তা কংগ্রেস-তৃণমূলের পরস্পর বিরোধী অভিযোগ থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে। ঘটনাচক্রে, পুরসভার অচলাবস্থার জন্য কংগ্রেস তৃণমূল উভয় পক্ষই দায়ী বলে অভিযোগ করেন দার্জিলিং জেলা ইনটাকের সভাপতি অলক চক্রবর্তী।
এদিনের সভায় তিনি বলেন, “জোট করে ক্ষমতায় আসার পর বোর্ড ভেঙে দেওয়ায় দায়ী উভয় দলই।” তবে এক্ষেত্রে তৃণমূলের দায় বেশি। এবিষয়ে তিনি বলেন, “রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল, তাই এই অচলাবস্থা কাটাতে বেশি দায়িত্ব নিতে হবে তাঁদের। তাঁর কথায়, “দায়বদ্ধতার জন্য এক জায়গায় আসতে হবে দুই দলকেই। যদি তৃণমূল ভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি করে প্রশাসক বসাবে তা ঠিক নয়।” শুধুমাত্র কংগ্রেস আর মেয়রকে বিপাকে ফেলতেই এমন কাজ করছে তৃণমূল। এদিন পুর কর্মচারীদের নানা দাবিদাওয়া নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ করেন পুর কর্মচারীরা। ৬৬০০ টাকার দাবি পূরণ না হলে আদালতে যাওয়ার কথা জানান পুর কর্মচারী কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সৌমেন দাস রায়।
অন্যদিকে শনিবারের মুলতুবি সভায় মেয়রের অপসারণ প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন তৃণমূলের ১১ জন কাউন্সিলর। সভায় প্রস্তাব গৃহীত হলেও সিদ্ধান্তের জন্য রাজ্য পুর দফতরে তা পাঠান হবে বলে জানিয়েছিলেন চেয়ারম্যান নান্টু পাল। এই পরিস্থিতিতে এদিন পুরসভায় মেয়রের উপস্থিতি নিয়ে তীব্র নিন্দা করেন তৃণমূল। এ বিষয়ে তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল বলেন, “গঙ্গোত্রী দত্ত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ক্ষমতায় বসে আছেন। ভবিষ্যতে তিনি ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য কী ভাবে আইনকে উপেক্ষা করা যায় তার দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত হতে পারেন। আমরা সাধারণ মানুষকে সব জানাব।” তৃণমূলের এই অভিযোগ মানতে নারাজ গঙ্গোত্রী দেবী। তিনি বলেন, “এভাবে মেয়রকে অপসারণ করা যায় না। এই কাজ অসাংবিধানিক। পুর আইন অনুযায়ী এই ঘটনা অনৈতিক।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.