স্ত্রী-পুত্রকে মেরে আত্মঘাতী পুলিশকর্মী
স্ত্রী-পুত্রকে খুন করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন রাজ্য পুলিশের কর্তব্যরত এক কনস্টেবল। কানু ঘোষ (৫০) নামে ওই পুলিশকর্মী কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে কর্মরত ছিলেন। বছর খানেক ধরে তিনি কৃষ্ণনগর রাধানগর এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকছিলেন। সোমবার বাড়িওয়ালা সুব্রত দাস অনেক বেলাতেও কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভাঙেন। সুব্রতবাবু বলেন, “দরজা ভাঙতেই দেখি কানুবাবুর স্ত্রী রীতা ঘোষ (৪২) ও ছেলে সুব্রত ঘোষের (২২) দেহ পড়ে রয়েছে বিছানায়। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।” প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, রীতাদেবীকে শ্বাসরোধ করে ও সুব্রতকে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছে। পুলিশ দেহ তিনটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, “মনে হচ্ছে, পারিবারিক অশান্তির জেরেই এই ঘটনা। সুইসাইড নোটে কানুবাবু তাঁর শ্বশুরকে দায়ী করেছেন। ঘটনার তদন্ত এগোচ্ছে।” এ দিকে মৃতের জ্যাঠতুতো দাদা স্বপন ঘোষ ভাইয়ের শ্বশুর পূর্ণচন্দ্র ঘোষের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করছেন। পুলিশ অভিযুক্তকে জেরার জন্য আটক করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসুস্থ হয়ে পড়ায় পুলিশ তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। পূর্ণচন্দ্রবাবুও উল্টে মৃত জামাইয়ের বিরুদ্ধে মেয়ে ও নাতিকে খুনের অভিযোগ করেছেন।
তদন্তে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রের খবর, কালীগঞ্জের বড়কুলবেড়ে এলাকার বাসিন্দা কানুবাবুর বিয়ে হয় পড়শি গ্রাম হরিনাথপুরের রীতা ঘোষের সঙ্গে। রীতাদেবীর বাবা নন-গেজেটেড পুলিশকর্মী অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি ছিলেন। শ্বশুরের কারসাজিতেই বিয়ের পর কানু ঘোষ চাকরি পান। বিয়ের পর থেকেই বনিবনা ছিল না ঘোষ দম্পত্তির। বছর খানেক আগে বধূ নির্যাতনের মামলা করেন রীতাদেবী। জেল হয় কানুবাবরু। জেল থেকে বেরিয়ে বৌ-এর সঙ্গে বিবাদের নিরসন হয়। রাধানগরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। এলাকায় পরিবারটি মিশুকে বলেই পরিচিত ছিল। তবে নিজেদের মধ্যে কলহও বাধত। কানুবাবু আগে যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়ির মালিক সাধনা বেরা বলেন, “নিজেদের মধ্যে হট্টগোল লেগেই থাকত। তাই আমি বাড়ি ছেড়ে দিতে বলি।” রীতাদেবীর মা রেখা ঘোষের বক্তব্য, “বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর বাড়িতে মেয়ের কোনও কদর ছিল না। জামাইয়ের ভাই বোনেরা ছিল সংসারের হত্তাকর্তা। তাই বছর পাঁচেক আমার কাছেই ছিল মেয়ে।” শ্বশুর পূর্ণচন্দ্রবাবু অবশ্য বলেন, “মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে একটা ঝামেলা ছিল। মিটমাটও হয়ে গিয়েছিল। তারপরেও কেন এমনটা ঘটল বুঝতে পারছি না।” তদন্তকারী এক অফিসারের মন্তব্য, “শ্বশুরের সুপারিশে চাকরি পাওয়ায় নিত্য অপমান সহ্য করতে হত কানুবাবুকে। পারিবারিক বিষয়ে কারণে-অকারণে শ্বশুরবাড়ির হস্তক্ষেপ লেগেই থাকত। এ সব সহ্য করতে না পেরেই চরম পথ বেছে নেন কানুবাবু।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.