শেষ হল মনোনয়ন জমা
সন্দেহ হলেই জিজ্ঞাসাবাদ বাইক বাহিনীর
ঞ্চায়েত নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় মনোনয়ন পর্বের শেষ দিন সোমবারও বোলপুর মহকুমাশাসকের দফতর এলাকায় গণ্ডগোল ও টানটান উত্তেজনা অব্যাহত রইল। সকাল ৯-৩০টা থেকে তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর লোকজন গোটা শহর দাপিয়ে বেড়িয়েছে। ৪০টির মতো মোটরবাইকে ৮০ জন যুবক বোলপুর, শান্তিনিকেতন-শ্রীনিকেতন ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোথাও পথ চলতি মানুষ দেখে সন্দেহ হলেই বাইক থামিয়ে নাম, ঠিকানা থেকে শুরু করে নাড়িনক্ষত্র জানতে চাইছে তারা। বিরোধী গোষ্ঠী বা অন্য কোনও দলের লোক বলে সন্দেহ হলেই ফিরে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। শুধু তাই নয়, কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক শহরের মোড়ে মোড়ে বাস আটকে কার্যত চিরুনি তল্লাশি করছিল। গোষ্ঠী সংঘর্ষ হতে পারে এই আশঙ্কায় পুলিশ প্রশাসনের ব্যাস্ততাও ছিল তুঙ্গে। জেলার এক পুলিশ কর্তার কথায়, “গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্ট পাওয়ার পর গোষ্ঠী সংঘর্ষ এড়াতে নিরাপত্তা ব্যাবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। ছিল র্যাফ, কমব্যাটফোর্স ও জল কামান। বোলপুর মহকুমা এলাকার গোটা নিরাপত্তার দায়িত্ব ছিলেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবস্মিতা দাস।
সারাদিন এ ভাবেই চলল দাদাগিরি। বোলপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
দুপুর গড়াতেই চোখে পড়ে বোলপুরের প্রভাতসরনি এলাকার একটি বেসরকারি হোটেল এবং পানশালার সামনে তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর লোকেরা অন্য গোষ্ঠীর এক মহিলা জেলাপরিষদ প্রার্থী, এক মহিলা গ্রাম পঞ্চায়েত-সহ ৮ জন প্রার্থী এবং প্রস্তাবক, সমর্থকদের মারধর করে মনোনয়ন সংক্রান্ত কাগজপত্র কেড়ে নেয়। আবার জামবুনি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছিল তৃণমূলের ব্যারিকেড়। ফলে বিরোধীরা অনেকে প্রাণের ভয়ে মনোনয়ন করতে পারেনি বলে অভিযোগ।
বিকেল ৩টা ৪০ মিনিট: মহকুমাশাসকের দফতরের মুখ্য ফটকের বাইরে এ-দিক ও-দিক তাকিয়ে এসইউসির জেলা পরিষদ প্রার্থী অধ্যাপক বিজয় দলুই বলেন, “খুব ভাল লাগছে এই মুহূর্তে। এত বাধা ও মারধরের পরেও আমরা অন্তত শেষ দিনে ১১টি আসনের মধ্যে বোলপুর মহকুমায় ৬টিতে মনোনয়ন দাখিল করতে পারলাম।” একরাশ মুখে আতঙ্ক নিয়ে, বিজয়বাবুর সঙ্গীদের সংযোজন, “জানি না এর পর কী অপেক্ষা করছে। অন্য দিকে, তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর দুই প্রার্থী ছাপিয়া বিবি ও কল্পনা দাস বলেন, “জাতিগত সংশাপত্র নিতে বোলপুরে এসেছিলাম। এমন চিরুনি তল্লাশি হবে জানলে আসতে-ই পারতাম না। তবে আমাদের কাছে অনেক কিছু জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমরা কিন্তু বলিনি। বললেই কী হত জানি না।”
এ দিন দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবস্মিতা দাসের নির্দেশে বোলপুরের এসড়িপিও প্রশান্ত চৌধুরী পুলিশ নিয়ে কয়েকবার তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর লোকজনকে সরিয়ে দেন ওই এলাকা থেকে। যাত্রীবাহী বাস থামিয়ে তল্লাশির অভিযোগ পেয়ে খোদ দেবস্মিতা দাস দুপুরে বাহিনী নিয়ে এলাকায় অভিযানে নামেন। জেলা কংগ্রেসের সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মির অভিযোগ, “আমাদেরকে বোলপুর মহকুমায় মনোনয়ন করতে দেওয়া হইনি। আমাদের সব প্রার্থী, প্রস্তাবক ও সমর্থকদের মারধর করা হয়েছে। শেষ দিনেও ব্যারিকেড করে আটকে দেওয়া হয়েছে।” বোলপুর মহকুমাশাসক প্রবালকান্তি মাইতি বলেন, “বোলপুর মহকুমার জেলা পরিষদে মোট ১১টি আসনের জন্য ২৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তৃণমূলের পক্ষে ১৩ জন, সিপিএম ৯ জন, এসইউসি ৬ জন ও বিজেপির একজন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। কংগ্রেসের পক্ষে কেউ জমা দেননি। তবে মনোনয়ন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কাউকে বাধা দেওয়ার খবর নেই। যাঁরা সহায়তা চেয়েছিলেন, তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।”
অন্য দিকে, মনোনয়ন ঘিরে দুবরাজপুর ব্লকে ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। কারণ, মনোনয়নপত্রের সিংহভাগই দখিল করা হয়ে গিয়েছিল শনিবারের মধ্যেই। দুবরাজপুর ব্লকের মধ্যে থাকা গ্রামপঞ্চায়েতগুলির মোট ১২৬টি আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩৮২ জন। এই ৩৮২ জনের মধ্যে এ দিন জমা পড়েছে মাত্র ৩৭টি এবং পঞ্চায়েত সমিতির ২৯টি আসনের জন্য ৯১জন দিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.