সন্ত্রাসের নালিশ সিপিএমের
শিল্পাঞ্চলে পাঁচ পঞ্চায়েতের দখল যাচ্ছে তৃণমূলের হাতে
বিরোধী প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে পাঁচটি পঞ্চায়েত দখল করতে চলেছে তৃণমূল। সোমবার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। সন্ধ্যায় জানা যায়, কাঁকসা, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ও বারাবনি ব্লকের একটি করে পঞ্চায়েতে এবং জামুড়িয়ার দু’টি পঞ্চায়েতে অর্ধেকের বেশি আসনে তৃণমূলের প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনও প্রার্থী নেই। সিপিএম নেতারা অভিযোগ তুলেছেন, মনোনয়ন জমা দেওয়া সত্ত্বেও হুমকি দিয়ে তা প্রতাহ্যারে বাধ্য করা হয়েছে তাঁদের প্রার্থীদের। তৃণমূলের অবশ্য পাল্টা দাবি, হারার ভয়ে আগেই সরে দাঁড়িয়েছেন বিরোধী প্রার্থীরা।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষে দেখা গিয়েছিল, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির দু’টি আসনে বিরোধীরা কোনও প্রার্থী দেয়নি। এ ছাড়া জেমুয়া পঞ্চায়েতে ৪টি, গোগলা পঞ্চায়েতে দু’টি এবং লাউদোহা ও ইছাপুরে একটি করে আসনে প্রার্থী দেয়নি সিপিএম। এ দিন মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা পেরোনোর পরে দেখা যায়, লাউদোহা পঞ্চায়েতের আরও ১১টি আসন থেকে মনোনয়ন তুলে নিলেন সিপিএমের প্রার্থীরা। ফলে, কার্যত ওই পঞ্চায়েত চলে গেল তৃণমূলের দখলে। গৌরবাজার পঞ্চায়েতের ৯টি আসনের মধ্যে ৪টির মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন সিপিএম প্রার্থীরা। সেখানে নির্বাচনে আর একটি আসন জিতলেই ওই পঞ্চায়েতও চলে আসবে তৃণমূলের দখলে। এ ছাড়া সিপিএম প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় জেমুয়া পঞ্চায়েতের ৪টি, গোগলা পঞ্চায়েতে ৬টি এবং ইছাপুর পঞ্চায়েতের ৬টি আসনে লড়াই হচ্ছে না। একমাত্র প্রতাপপুর পঞ্চায়েতের ১৩টি আসনের সব ক’টিতেই সিপিএমের সঙ্গে লড়াই হবে তৃণমূলের। সিপিএম প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় এই ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির ১৭টি আসনের ৮টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলেছে তৃণমূল। জেলা পরিষদের দু’টি আসনেই অবশ্য লড়ছেন সিপিএম প্রার্থীরা।
কাঁকসা ব্লকের ছ’টি পঞ্চায়েতের সব আসনে, ২১টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং দু’টি জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল সিপিএম। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় পেরোনোর পরে দেখা গেল, বিদবিহার পঞ্চায়েতের ১২টি আসন থেকেই সরে গিয়েছেন সিপিএম প্রার্থীরা। এ ছাড়া আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের ৭টি এবং গোপালপুর পঞ্চায়েতের ৬টি আসনেও মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন সিপিএমের প্রার্থীরা। আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের প্রার্থী ক্ষেত্রপাল বাগদি, বনকাটি পঞ্চায়েতের অমল লোহার, গোপালপুর পঞ্চায়েতের নিমাইচন্দ্র দাসেরা অভিযোগ করেন, “শাসকদলের লাগাতার চাপ, গ্রামছাড়া করার, প্রাণনাশের হুমকিকে অগ্রাহ্য করার সাহস পাইনি।”
তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সম্পাদক দেবদাস বক্সী, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায় বা কাঁকসা ব্লক যুব সভাপতি পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায়দের অবশ্য বক্তব্য, “পায়ের তলায় মাটি সরে গিয়েছে সিপিএমের। হারের ভয়ে মুখ লুকোতে এমন অভিযোগ তুলছে ওরা।”
এ দিন মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় পেরোনোর পরে দেখা যায়, জামুড়িয়ায় দু’টি পঞ্চায়েতে দখল যেতে চলছে তৃমমূলের হাতে। কেন্দা পঞ্চায়েতে ৮টি আসনের মধ্যে ৭টিতেই তৃণমূল ছানা অন্য কোনও দলের প্রার্থী নেই। শ্যামলা পঞ্চায়েতে ১৪টি আসনের মধ্যে ১১টিতে তৃণমূলের বিপক্ষে কোনও প্রার্থী নেই। রানিগঞ্জ ব্লকে এগারা পঞ্চায়েতে ১৪টি আসনের মধ্যে সাতটিতে শুধু তৃণমূলের প্রার্থী রয়েছেন। অর্থাৎ, বাকি সাতটি আসনের একটিতে তাদের প্রার্থী জিতলেই পঞ্চায়েতের দখল নেবে তৃণমূল। জামুড়িয়ায় তিনটি, রানিগঞ্জে তিনটি ও পাণ্ডবেশ্বরে দু’টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন বিরোধীদের কোনও প্রার্থী নেই। বারাবনির পাঁচগাছিয়া পঞ্চায়েতে সাতটি আসনের মধ্যে ছ’টিতে তৃণমূল প্রার্থীরা ছাড়া অন্য কেউ মনোনয়ন জমাই দেয়নি। তাই এই পঞ্চায়েতের ক্ষমতাও যাচ্ছে তৃণমূলেরই হাতে। সিপিএম নেতৃত্ব আসানসোল মহকুমার এই সব পঞ্চায়েতগুলিতে প্রার্থী না দিতে পারার কারণ হিসেবে তৃণমূলের ‘হুমকি’কেই দায়ী করেছেন। যদিও তৃণমূল তা মানতে নারাজ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.