৯৯% সাফল্য কি সাঁইবাবার বিভূতি, কটাক্ষ জয়রামের
দিনদশেক আগেই রাজ্যে একশো দিনের কাজের জন্য ১৭০০ কোটি টাকা পাঠিয়েছিল তাঁর মন্ত্রক। হাওড়ায় উপনির্বাচনের প্রচারে এসে সেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশই তুলোধোনা করে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে! আহ্বান জানালেন, এই উপনির্বাচন হোক তৃণমূলের হুঁশ ফেরানোর লড়াই!
কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগে সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা। হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রচারেও সেই বঞ্চনা-বৈষম্যের সুর অব্যাহত রেখেছেন তিনি। হাওড়াতেই বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের পরপর তিনটি নির্বাচনী সভা থেকে তার জবাব ফিরিয়ে দিয়েছেন রমেশ। বলেছেন, ক’দিন আগেই তাঁর গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে ১৭০০ কোটি টাকা রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে। ওই টাকা গ্রামের মানুষের বদলে তৃণমূল নেতাদের পকেটে যেতে পারে বলে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের আশঙ্কা সত্ত্বেও তাঁরা অর্থ মঞ্জুর করতে কার্পণ্য করেননি সাংবিধানিক দায়িত্ব মেনেই। রমেশের বরং পাল্টা অভিযোগ, দিল্লি থেকে ধারাবাহিক ভাবে নানা প্রকল্পের টাকা এলেও গ্রামে গ্রামে তা পৌঁছচ্ছে না। গত এক বছরেই পশ্চিমবঙ্গে দশ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কের অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু রমেশের দাবি, এ রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় তিনি নিজে ঘুরে দেখেছেন, কোনও কাজের প্রতিফলনই বাস্তবে নেই। মন্দিরতলার সভায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্য, “প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যে ভাষা মুখ্যমন্ত্রী প্রয়োগ করেছেন, তার পরেও কেন্দ্র টাকা দিতে কোনও বৈষম্য করেনি!”
প্রচারে জয়রাম রমেশ।
কেন্দ্রীয় সাহায্য পেয়েও কাজ করতে না পারাই শুধু নয়, ‘পরিবর্তনে’র জমানাকেও চাঁছাছোলা ভাষায় বিঁধেছেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁর কথায়, “মানুষ বামফ্রন্টের রাজনীতিতে তিতিবিরক্ত হয়ে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিল। দু’বছরে আপনারা পরিবর্তন দেখেছেন। নাটক দেখেছেন, বিজ্ঞাপন দেখেছেন! পরিবর্তনের পক্ষে রায় দিয়ে মানুষ তো সরকার চালাতে বলেছিল, সার্কাস নয়!” দু’বছরে মুখ্যমন্ত্রীর সাফল্যের খতিয়ানকে তীব্র কটাক্ষ করে রমেশের মন্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ৯৯.৯৯% কাজ শেষ! আগে সাঁইবাবার কথা শুনেছিলাম। তিনি নাকি শূন্য থেকে বিভূতি নামিয়ে আনতে পারতেন! এখন এক জন মুখ্যমন্ত্রী হাওয়া থেকে ৯৯% সাফল্য এনে দিচ্ছেন!”
বস্তুত, কেন্দ্রীয় সাহায্য, ভূমিপুত্র এবং বিজেপি-র সঙ্গে আঁতাঁত এই তিন যুক্তিতেই হাওড়ার বৈতরণী পার হতে চাইছে কংগ্রেস। এই তিন বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সি এ দিন মন্দিরবাজারে কটাক্ষ করেছেন, “একটা কথা চালু হয়েছে,
তৃণমূল করলে বেল, না-করলে জেল! কত জেলে পাঠাবেন?
আমাদের সনাতন মুখোপাধ্যায় (হাওড়ায় দলের আইনজীবী-প্রার্থী) আছেন। বেল (জামিন) করে বার করে আনবেন!” অতীতে হাওড়া থেকে সাংসদ হয়েছিলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। সেই আবেগ কাজে লাগাতে চেয়েই প্রিয়-ঘরণীর আবেদন, “প্রিয়দা সুস্থ হয়ে যে দিন সামনে আসবেন, সে দিন যেন মাথা উঁচু করে বলতে পারি, আমরা ভুল করিনি!”
হাওড়া সদর লোকসভা উপ-নির্বাচনের প্রচারে পাঁচলার পানিয়াড়ায় কংগ্রেস প্রার্থী
সনাতন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ।
পাঁচলা, মন্দিরবাজার ও চিন্তামণি পার্কের তিন সভাতেই রমেশ বলেছেন, “দেখে মনে হচ্ছে, তৃণমূল, সিপিএম আর কংগ্রেসের লড়াই হচ্ছে। কিন্তু মনে রাখবেন, তৃণমূলেরই অন্য পিঠে বিজেপি আছে! বিজেপি-র সঙ্গে ওরা যে ভাবে সমঝোতা করেছে, সেটাই তৃণমূলের আসল চেহারা!” বিধায়ক মানস ভুঁইয়া তার সঙ্গে যোগ করেছেন, “প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় খুব ভাল খেলোয়াড়। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডান মাঠে তাঁকে মানায় ভাল। কিন্তু হাওড়ার কি এমনই অবস্থা যে, কলকাতা থেকে লোক আনতে হবে? উলুবেড়িয়ার সাংসদ বাইরের লোক, হাওড়ার তৃণমূল প্রার্থীও তা-ই!” প্রদেশ কংগ্রেস প্রদীপ ভট্টাচার্যের আহ্বান, উপনির্বাচন ও পঞ্চায়েত ভোট থেকেই ‘পরিবর্তনে’র পরিবর্তন শুরু হোক।

—নিজস্ব চিত্র।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.