কুপির আলোয় আধাঁর মুছে ৫৮০
কাঠা দুয়েক জমির উপর টালির চালাঘরের আঁধার দূর করতে কেরোসিনের কুপিই ভরসা। দমকা হাওয়ায় নিভে যায় সেই ভরসার আলো। তবুও বাবার মুখে খুশির আলো ফোটাতে হাল ছাড়েনি বহরমপুরের কোদলা গ্রামের বাসিন্দা হারাধন পাল। কোদলা বিজয়কৃষ্ণ আদর্শ বিদ্যামন্দিরের এই ছাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছে।
হারাধন পাল
তার প্রাপ্ত নম্বর ৫৮০। সে লেটার পেয়েছে ৫টিতে। হারাধনের বাবা নন্দদুলাল পাল পেশায় রাজমিস্ত্রি। কাজ মিললে দিনে রোজগার হয় ২০০ টাকা। ওই আয়েই স্ত্রী, পুত্র-কন্যা, মা, বোনকে নিয়ে সংসার চালান তিনি। নিজের জমি বলতে কিছুই নেই। বাড়িতে পানীয় জলের ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার পাশের সরকারি নলকূপই ভরসা। নন্দদুলালবাবু জানান, “গ্রামের প্রাথমিক শিক্ষক কম টাকায় ওকে সাহায্য করেছেন।” কীভাবে পড়াশোনা করত হারাধন? লাজুক হেসে হারাধন বলে, “স্কুলের স্যারেরা আমাদের খুব যত্ন নিয়ে পড়াতেন।” ভবিষ্যতে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নের কথাও বলে ওঠে সে। বলে, “আমি শিক্ষকতা করতে চাই।”
পাশাপাশি তার মনে উঁকি দেয় শঙ্কাও। বলে, “কী ভাবে পড়াশোনা করতে পারব জানি না। বাবার কম রোজগার। সেই টাকায় আমার-বোনের পড়ার খরচ জোগানো অসম্ভব। আর আমার স্কুলে তো উচ্চমাধ্যমিক নেই।” নন্দদুলালবাবু বলেন, “ছেলে তো বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়। মেয়েরও পড়ার খরচ রয়েছে। এত টাকা কী ভাবে জোগাড় করব ভেবে পাচ্ছি না।” নিজের জীবনের স্মৃতিচারণ করে মুহূর্তে সুর বদলান তিনি। বলেন, “আমার বাবার একটা পা ছিল না। তাই মাধ্যমিকের পর আমাকে মজুরি খাটতে হয়েছিল। ছেলের ভবিষ্যত নষ্ট হতে দেব না।” গর্বিত কোদলা বিজয়কৃষ্ণ আদর্শ বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক সুভাষ সিমলান্দি। তিনি বলেন, “হারাধনদের কৃতিত্বে আমারও গর্বিত। তার সাফল্য কামনা করি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.