বধূহত্যার অভিযোগ ঘিরে তুলকালাম আসানসোলে
ধূহত্যায় অভিযুক্তকে জনতার হাত থেকে বাঁচাতে র্যাফের পোশাক পরিয়ে তোলা হল পুলিশের গাড়িতে।
ঘটনাস্থল আসানসোল। মঙ্গলবার সকালে শ্বশুরবাড়িতে বধূর ঝুলন্ত দেহ মেলার পরেই তুলকালাম বাধে সেখানে। ওই বধূকে খুন করা হয়েছে অভিযোগ তুলে বাড়িতে ভাঙচুর, লুঠপাট চালায় জনতা। ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ইটের ঘায়ে জখম হন দুই পুলিশকর্মী। র্যাফ নেমে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। মৃতার স্বামী, শাশুড়ি ও ননদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আসানসোলে রেলপাড়ের জাহাঙ্গির মহল্লায় বধূর ঝুলন্ত দেহ মেলার পরে শ্বশুরবাড়ির উপরে চড়াও হল জনতা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঝাড়খণ্ডের বাসুরিয়া থানার ভুলি গ্রামের বাসিন্দা তারানা পারভিনের (২০) সঙ্গে আসানসোলের রেলপাড় এলাকার মহম্মদ মুমতাজের বিয়ে হয় গত ৭ মে। তারানার বাবা পিয়াস আলির অভিযোগ, “সোমবার সন্ধ্যায় মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোন করে পণ বাবদ দেড় লক্ষ টাকা দিতে বলা হয়। আমি মঙ্গলবার টাকা পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিই। কিন্তু এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ ফোনে খবর দেওয়া হয়, মেয়ে অসুস্থ। তড়িঘড়ি রওনা দিই। কিছু ক্ষণের মধ্যে আবার ফোনে জানানো হয়, মেয়ে মারা গিয়েছে।”
ভাঙচুর, জিনিসপত্রে আগুন লাগানো, পুলিশের উপরে হামলা, জিপ ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী মুমতাজ সকালে প্রতিবেশীদের জানান, তাঁর স্ত্রী গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বাড়ির সামনে লোকজন জড়ো হন। এলাকাবাসীর দাবি, পরিবারটি পড়শিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। ওই বাড়িতে এর আগেও বধূহত্যার অভিযোগ উঠেছে। তারানাকেও খুন করা হয়েছে অভিযোগ তুলে বাসিন্দারা মুমতাজের বাড়িতে চড়াও হন। এরই মধ্যে সেখানে পৌঁছন তারানার বাবা। তাঁর মুখে পণ চেয়ে ফোনের কথা শোনার পরে আরও ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা। মুমতাজ, তার মা ফিরোজা খাতুন ও দিদি ইসরাজ জাহানকে মারধর করে একটি ঘরে বন্দি করে রাখা হয়। ঘরের কিছু জিনিসপত্র টেনে বের করে করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় দরজা, জানালা, আসবাবপত্র।
শেষে পুলিশ ও র্যাফ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সকাল ১০টা নাগাদ আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ পৌঁছলে ঘটনাস্থলে যেতে বাধা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সুরেশকুমার চাডিয়া এবং এসিপি (সেন্ট্রাল) অজয় প্রসাদ পুলিশ ও র্যাফ নিয়ে এলাকায় যান। তাঁরা এগোতে চাইলে ইট-পাটকেল ছোড়ে জনতা। দু’টি জিপ ভাঙচুর করা হয়। দফায় দফায় পুলিশ-জনতা ধাক্কাধাক্কি চলে। চার ঘণ্টা ধরে এই পরিস্থিতি চলার পরে দুপুর সওয়া ১টা নাগাদ বেশ কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। জনতা যাতে ছিনিয়ে নিতে না পারে সে জন্য র্যাফের পোশাক পরিয়ে ও কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে মুমতাজকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায় পুলিশ। মৃতদেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়। এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সুরেশকুমার চাডিয়া জানিয়েছেন, মৃতার বাবা খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে তিন জনকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
ছবি: শৈলেন সরকার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.