শতবর্ষে গোপাল ঘোষ
স্বভাবত স্বতন্ত্র
চিত্রকরের বয়েস তখন সবে চব্বিশ। হাতে অবনীন্দ্রনাথের পরিচয়পত্র (‘এঁর ড্রয়িংএ যে রূপ অসাধারণ হাত তাতে বিলাতে হলে যথেষ্ট আদর পেতেন...’), সঙ্গে নিজের আঁকা খোয়াই-এর ছবি, শান্তিনিকেতনে দেখা করলেন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে। কবি লিখলেন, ‘শিল্পীর দৃষ্টি নিয়ে তুমি ভারতভ্রমণে বের হয়েছ শিল্পীর চিত্রে তার উদ্দেশ্য সার্থক হোক এই কামনা করি।’ স্টেলা ক্রামরিশের কাছে গোপাল ঘোষ ছিলেন ভারতের সর্বকালের সেরা শিল্পীদের অন্যতম।
কিন্তু এ সবই গৌণ। গোপাল ঘোষের (১৯১৩-১৯৮০) জন্ম কলকাতায়, বাবার সেনাবাহিনীতে চাকরির কারণে ছোটবেলা কাটে সিমলা, বারাণসী, ইলাহাবাদে। শিল্পানুরাগী বাবা ছেলের প্রকৃতি বুঝেই হাতে তুলে দিয়েছিলেন জন রাস্কিন-এর এলিমেন্টস অব ড্রয়িং। শিল্পশিক্ষা জয়পুর আর মাদ্রাজে। দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরী কি যামিনী রায়, ছুঁয়েছেন সবাইকেই, পথ বেছেছেন নিজে। সবাই তেলরঙে কাজ করছে, উনি ধরলেন জলরঙ। উজ্জ্বল রঙ আর বলিষ্ঠ, সাবলীল রেখায় আঁকা নিসর্গচিত্রের জন্যই গোপাল ঘোষ সুপরিচিত, আবার প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গ, যেমন ফুল, পাখি, আবার স্টিল লাইফ-এও তিনি স্বাতন্ত্র্যে ভাস্বর।
বিয়াল্লিশের মন্বন্তরে শহরের রাস্তায় রাস্তায় জয়নুল আবেদিনের সঙ্গে ঘুরে ছবি এঁকেছেন। ‘স্বাধীনতা’ পত্রিকায় ছাপা হত সে সব ছবি, কিন্তু ‘বামপন্থী’ শিবিরে ছিলেন না। ক্যালকাটা গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা-সদস্যও তিনি। শতবর্ষে সঞ্জয়কুমার মল্লিক ও রিনা লাঠ পরিকল্পিত গোপাল ঘোষের ছবির অসামান্য প্রদর্শনীটি দিল্লির ন্যাশনাল গ্যালারি অব মডার্ন আর্ট-এর পর এখন কলকাতায়, হিন্দুস্তান পার্কের ‘আকারপ্রকার’ গ্যালারিতে, ২৭ জুন পর্যন্ত। তাঁকে নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে সঞ্জয়কুমার মল্লিকের গোপাল ঘোষ/ আ জুবিল্যান্ট কোয়েস্ট ফর দ্য ক্রোম্যাটিক (আকারপ্রকার/ মাপিন) বইটিও। ছবিতে, তথ্যে এ বই পথিকৃৎ শিল্পীর যোগ্য শ্রদ্ধার্ঘ্য। সঙ্গের ছবি বই থেকে।

বাংলার ঐতিহ্য
দীনেশচন্দ্র সেন (১৮৬৬-১৯৩৯)। বঙ্গভাষা ও সাহিত্য বা রামায়ণী কথা-র রচয়িতা হিসেবে তো বটেই, সম্ভবত তার চেয়েও তিনি স্মরণীয় গ্রামবাংলার লুপ্তপ্রায় প্রাচীন পুথির সংগ্রহাকাঙ্ক্ষী পরিব্রাজক হিসেবে। পূর্ববঙ্গে মুখে-মুখে প্রচলিত লোকগীতি অবলম্বনে তাঁরই আবিষ্কার মৈমনসিংহগীতিকা বা পূর্ববঙ্গ গীতিকা। সেই অনুসন্ধিৎসু গবেষকের স্মৃতিতে তৈরি ‘আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন রিসার্চ সোসাইটি’ ফি বছর বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের কৃতী মানুষজনকে স্বর্ণপদক অর্পণ করে। এ বারের প্রাপক বাংলাদেশের মহম্মদ নিরো সিরাজুল ইসলাম ও অজন্তা মিত্র বিশ্বাস। ৩১ মে বিকেল ৫টায় প্রেস ক্লাবে এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে দীনেশচন্দ্র সেন স্মারক বক্তৃতা দেবেন তরুণ মুখোপাধ্যায়। সভাপতি বিমলেন্দু চক্রবর্তী, প্রধান অতিথি ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়। দুই বাংলার সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনেই দু’দশকের এ প্রয়াস, জানালেন সম্পাদক, দীনেশচন্দ্রের প্রপৌত্রী দেবকন্যা সেন।

দশমুখ
রাবণের দশটা মাথা কেন? ছোটবেলায় ‘রামায়ণ’ পড়তে গিয়ে বারবার মনে আসত এই প্রশ্ন। আসলে রাবণ চেয়েছিলেন পরিপূর্ণ হয়ে উঠতে। তাই রাগ, দুঃখ, স্বার্থপরতা, উচ্চাকাঙ্ক্ষার মতো যাবতীয় আবেগের প্রকাশ হিসেবেই রাবণের এতগুলি মাথা। রাবণের এই ‘পরিপূর্ণ’ হয়ে ওঠাটাই বেশি পছন্দ তিয়াসা ভট্টাচার্যের। তিয়াসা বিড়লা আকাদেমি অব ফাইন আর্ট-এর প্রাক্তনী। এর আগে যৌথ প্রদর্শনী করলেও এই প্রথম তাঁর একক। ৩০ মে অ্যাকাডেমি-তে শুরু হবে ‘রাবণ- দ্য দশমুখ’। পেন-কালি-অ্যাক্রিলিকে দেখা যাবে রাবণের জীবনের নানা ঘটনা। সঙ্গের ছবি ‘দি ওয়েকিং অব কুম্ভকর্ণ’। চলবে ৫ জুন (৩-৮টা) পর্যন্ত।

নাট্যব্যক্তিত্ব
শরীরচর্চা ও মনঃসংযোগ কীভাবে অভিনয়শিল্পকে সৃজনক্ষম করে তোলে, তা নিয়ে চার দশক হাতেকলমে কাজ করে যাচ্ছিলেন অন্জন্ দাশগুপ্ত (জ. ১৯৪০)। কাজ করতেন অভিনয়শিল্প কীভাবে ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটায় বা মানবিক গুণগুলির শ্রীবৃদ্ধি করে, তা নিয়েও। কলকাতা আর ডেনমার্কের থিয়েটার ইনস্টিটিউট থেকে নাট্যপরিচালনায় প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর বঙ্গরঙ্গমঞ্চে নাট্য প্রযোজনা ও প্রশিক্ষণে যুক্ত ছিলেন। ছিলেন দিশারী, শুভময়, নবনাট্যম নাট্যসংস্থায়। বাংলাদেশের লোকনাট্য ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন কেন্দ্র এবং অসম আর্ট অ্যাকাডেমির আমন্ত্রণে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন সেখানে গিয়ে। ’৭৮-’৭৯-তে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ডেনমার্কে ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার অ্যাকাডেমি ও বালগেরিয়ায় ওয়ার্ল্ড থিয়েটার কংগ্রেস অ্যান্ড ফেস্টিভ্যাল-এ। নাট্যপ্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বই, নানা নাট্যআন্দোলনের উৎস আর বিকাশ নিয়েও রচিত গ্রন্থ আছে তাঁর সংলাপ ও কণ্ঠস্বর, দেহের ভাষা, মন ও সৃজন, স্মরণীয় বিশ্বনাট্য। প্রচুর পুরস্কার ও সম্মান পেয়েছেন। মস্তিষ্ক প্রখর ও সজাগ থাকা সত্ত্বেও ৭৩ বছর বয়সে চলে গেলেন হঠাৎ। ১ জুন বাংলা আকাদেমিতে সন্ধে ছ’টায় স্মরণানুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা ও পরিবারের মানুষজন শ্রদ্ধা জানাবেন তাঁকে।

উদযাপন
বছর পঞ্চান্ন আগে ‘ম্যাগনাম’-এর হয়ে ভারতে ছবি তুলতে আসেন মেরিলিন সিলভারস্টোন। কাজ ছিল তিন মাসের, কিন্তু এ দেশ তাঁকে এমনই টানল যে ১৯৭৩ পর্যন্ত দিল্লিতেই থেকে গেলেন তিনি। আবার, ‘ম্যাগনাম’-এর হয়েই বার বার ভারতে এসেছেন আব্বাস। বিশ্বধর্ম নিয়ে ক্যামেরায় তাঁর যে গবেষণা তার একটা বড় অংশই ভারত। এমনকী এই আলোকচিত্র-সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা অঁরি কার্তিয়ে ব্রেসঁ-র তোলা গাঁধী-র ছবিও ইতিহাস হয়ে আছে। সেই সম্পর্কের উদ্যাপন এ বার এক প্রদর্শনীতে। রঘু রাই-সহ আট জন ‘ম্যাগনাম’ আলোকচিত্রীর ক্যামেরায় ভারত নিয়ে এক প্রদর্শনী চলছে সিগাল-এ। ‘ম্যাগনাম’ ও ‘তসবির’ আয়োজিত প্রদর্শনীটি শেষ হচ্ছে আগামিকাল।

মৈত্রেয়ী
এ রাজ্যের নারী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ ছিলেন তিনি। ১৯৮৩-তে মৈত্রেয়ী চট্টোপাধ্যায় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চ গড়ে তুলেছিলেন, কলকাতায় তখন এমন সংগঠন অতি বিরল। সমাজকর্মীদের কাছে তিনি ছিলেন অত্যন্ত কাছের মানুষ, নির্ভরতার মানুষ। গত বছর জানুয়ারিতে প্রয়াত হন তিনি। ২৭ মে ইন্দুমতী সভাগৃহে প্রথম মৈত্রেয়ী চট্টোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করছে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চ। যশোধরা বাগচী বলবেন ‘মাইগ্র্যান্ট উইমেন অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ নিয়ে।

ইন্দ্রদা
কলেজ স্ট্রিটের এক বিখ্যাত পুরনো বইয়ের দোকান। নিয়মিত যেতেন অনেকেই, ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্কটা ব্যবসার সীমা ছাড়িয়ে গড়িয়ে যেত অনেক দূর। একটা দুর্লভ বই পছন্দ হল, দাম জানতে চাওয়ায় বিক্রেতা বললেন, ‘এই বই নিয়ে তুমি কী করবে, এ তো অমুকের কাজে লাগবে। শুধু শুধু পুরনো বই জমিয়ো না।’ দোকানে বসে এমন কথা বলার লোকটি সব ছেড়েছুড়ে হঠাৎই চলে গেলেন। ‘সুবর্ণরেখা’র ইন্দ্রনাথ মজুমদার আর ফোন করে বলবেন না, ‘যে বইটা খুঁজছিলে সেটা এসেছে, চলে এসো একদিন’। আজ সন্ধে ছ’টায় তাঁর কাছে শেষ বারের মতো যাবেন বন্ধুরা, কলেজ স্কোয়্যারের পিছনে মহাবোধি সোসাইটি-র সভাকক্ষে, ‘ইন্দ্রদা’র স্মরণসভায়।

সংস্কৃতিপ্রেমী
হৃষীকেশ সেনগুপ্তের জন্ম ১৯২৯-এ। ভাগলপুরে পড়াশোনা, জার্মানি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরি করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্বপূর্ণ পদে। অবসরের পর মন দেন অন্য সৃজনে, গত দু-দশকে লেখেন প্রায় দু’শোর ওপর ছোটগল্প। প্রকাশিত হয়েছে নানা পত্রপত্রিকায়। প্রকাশিত হয়েছে ১১টি গল্প সংকলন ও দুটি উপন্যাস। এক যুগ ধরে সম্পাদনা করেছেন সাহিত্য পত্রিকা ‘উন্মেষ’, প্রতি মাসে নিজের বাড়িতে আয়োজন করতেন সাহিত্যসভা। যুক্ত ছিলেন শহরের নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। এই জানুয়ারিতেই পেয়েছিলেন সর্বভারতীয় সাহিত্য পুরস্কার। এর সঙ্গে গত দশ বছরে এঁকেছেন অন্তত ষাটটি প্রাকৃতিক দৃশ্য, প্রদর্শনীও হয়েছে তার। ২৫ বৈশাখ সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষটি ৮৪ বছর বয়সে চলে গেলেন।

গীতাঞ্জলি
‘গীতাঞ্জলি’ এশিয়ার প্রথম নোবেল পদক এনে দেওয়ার পর পেরোল একশো বছর, কিন্তু তা নিয়ে মনন-সৃজনের ধারাটি বয়েই চলেছে। গীতাঞ্জলির কবিতার উপরে নানা প্রযোজনা নিয়ে ২৮ মে হো চি মিন সরণির রবীন্দ্রনাথ টেগোর সেন্টার-এ শুরু হচ্ছে ‘গীতাঞ্জলি উৎসব’। নাটক, নৃত্যনাট্য, আবৃত্তি, গান যেমন থাকছে, তেমনই থাকবে সেমিনার, প্রদর্শনী, আর একটি মাল্টিমিডিয়া প্রযোজনা, ‘রবীন্দ্রনাথ ও আন্তর্জাতিক মানবতাবাদ’। উৎসবের আয়োজন করছে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক নৃত্য চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্র। থাকছে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিকোলজি বিভাগ, বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবন আর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পারফর্মিং আর্টের নানা বিভাগ। উপাচার্য সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরীর উপস্থিতিতে তিন দিনের উৎসবের উদ্বোধন করবেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন।

তথ্যচিত্র
সারা দুনিয়ায় সাড়া ফেলেছে এবং নানান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে, তরুণ পরিচালকদের এমন সব শর্ট ও ডকুমেন্টারি ছবির উৎসব। ছবিগুলো বিরক্তিকর বা একঘেয়ে নয়, রীতিমতো কৌতূহল জাগানো। যেমন ডেনমার্কের ওলে বেন্ডটজেন-এর ছবি ‘ফুটবল ইজ গড’, আর্জেন্টিনার বোকা জুনিয়র্স ক্লাবের তিন পাগল ফুটবল-সমর্থককে নিয়ে, তাঁদের মধ্যে একজন আবার বৃদ্ধা, তিনি মনেই করেন ওই ক্লাবের খেলোয়াড়রা তাঁর সন্তান। আবার অন্য দেশের ছবির সঙ্গে রয়েছে এ দেশের পরিচালকদের ছবিও, যেমন সুপ্রিয় সেনের ‘ওয়াঘা’, ভারত-পাকিস্তানের সীমান্তের গল্প। ফয়জা আহমদ খানের অত্যম্ত উপভোগ্য ছবি ‘সুপারম্যান অব মালেগাঁও’। আই সি সি আর অডিটোরিয়ামে একদিনের ‘আত্মন ফিল্ম কার্নিভ্যাল’ ৪ জুন, দুপুর ১টা থেকে রাত ৯টা।

ধ্রুপদী
জেমস বন্ডের নায়কের মতো তাঁকে মনে হয়েছিল অনেকের। আশির দশকের ‘শান’ ছবিতে শকলের ভূমিকায় সেই অভিনয়ের পরে। কিন্তু তিনি, তাঁর অভিনয়ের গুণেই একেবারে নিজের মতো। রমেশ সিপ্পির ‘শান’ থেকে শুরু করে তাঁর কেরিয়ারের তালিকায় অনেক উজ্জ্বল তারা। কিন্তু প্রথম প্রেম থিয়েটারকে কখনও ভুলতে পারেননি কুলভূষণ খারবান্দা। উচ্চশিক্ষার পরে কলেজের বন্ধুদের নিয়ে তৈরি করেছিলেন নাট্যদল ‘অভিযান’। তার পরে যোগ দেন দিল্লিতে জো মাইকেলের নাট্যদল ‘যাত্রিক’-এ। আর সেই প্রথম প্রেম ভুলতে পারেননি বলেই বোধহয় এ শহরের ‘মুখোমুখি’ যখন তাঁকে সংবর্ধনা-র সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাল তখন তিনি থিয়েটার এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় সে দলে অভিনয় করেন শুনেই রাজি। সত্তরে পড়বেন আগামী বছর, কিন্তু এখনও অটুট সৃজনের তারুণ্য। ‘মুখোমুখি’-র ধ্রুপদী থিয়েটার উৎসবে শহরে আসছেন তিনি। ৩১ তারিখ ‘শ্যামবাজার মুখোমুখি’র ধ্রুপদী থিয়েটার উৎসবের প্রথম দিনে অ্যাকাডেমিতে সংবর্ধনা দেওয়া হবে তাঁকে।

শিল্পনির্দেশক
একটা ‘মডার্ন ড্রয়িংরুম’ বানিয়ে দিন, বা একটা ‘সেকেলে বৈঠকখানা’ করতে হবে, এ পর্যন্ত বলেই থেমে যান পরিচালকরা। কিন্তু এগুলো ছবিতে কোথায় কী ভাবে কাজে লাগবে, অথবা এগুলোকে জড়িয়ে কোন ঘটনা ঘটবে, খুঁটিয়ে সে সব না জানলে শিল্প-নির্দেশনায় খামতি থেকে যায়, প্রায়ই এ রকম অস্পষ্ট ধারণা নিয়ে সেট তৈরি করতে হয়, ছবিটাও ভাল ভাবে তৈরি হয় না। এই নিয়ে খেদ ছিল কার্তিক বসুর, বাংলা ছবির অবিসংবাদী শিল্পনির্দেশক। প্রসঙ্গত বলেছেন ‘‘দক্ষ শিল্পনির্দেশক ছিলেন বংশী চন্দ্রগুপ্ত। সেই সেটগুলি হয়ে উঠত আশ্চর্যরকম ‘স্বাভাবিক’। সেটে ছোটোখাটো খুঁটিনাটির উপর, প্রত্যেকটা ডিটেলের উপর তাঁর কড়া নজর থাকত। তাঁর কাছ থেকেই আমি ডিটেলিং-এর কাজ শিখেছি।” ১৯২৩-এ ভবানীপুরে জন্ম। ’৪৬-এ বীরেন নাগের সহকারী হয়ে যোগ দেন স্টুডিয়োপাড়ায়। সামান্য মাসমাইনেয় রাজি হন ভাল ভাবে শেখার জন্যে। ছবি বানানোর সব বিভাগেই কাজ করেছেন। ’৭০-এ বীরেন নাগের আহ্বানে কলকাতা ছেড়ে বম্বে পাড়ি দেন, পরে ফের কলকাতায়। এন টি ওয়ান-এ নিজস্ব ঘর ছিল তাঁর, ছিল সেট ডিজাইন-এর ড্রইং টেবিল। তাঁর অনবদ্য শিল্পকর্ম আছে হারানো সুর, দুই ভাই, সপ্তপদী, থানা থেকে আসছি, পথে হল দেরী, কায়াহীনের কাহিনী, আতঙ্ক, নৌকাডুবি, কড়ি দিয়ে কিনলাম, আপনজন, হাটে বাজারে, এখনই, বৈদূর্য্য রহস্য, এমন অনেক ছবিতে। হিন্দিতে গীত গাতা চল, রাজা জনি, বেনারসীবাবু, লোফার ইত্যাদি। প্রেমেন্দ্র মিত্র, অজয় কর, তপন সিংহ, অসিত সেন, বিজয় বসু, সলিল দত্ত, দীনেন গুপ্ত, বাসু চট্টোপাধ্যায়, বীরেশ চট্টোপাধ্যায়, শক্তি সামন্তের মতো পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন। বি এফ জে এ পুরস্কার-সহ বহু সম্মানের সঙ্গে পেয়েছেন সরকারি স্বীকৃতিও। চলে গেলেন ১৩ মে, বয়স হয়েছিল ৯১।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.