আসানসোল পুরসভা
প্রাক্তন মেয়রের বিরুদ্ধে এ বার বেনিয়মের তোপ চেয়ারম্যানের
রিবেশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের সঙ্গে মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়ে দু’দিন আগেই তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছে আসানসোল পুরসভার বিরোধীরা। আর তার পরপরই বিরোধী নেতা তথা শহরের প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের তাপস রায়ের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন পুরসভার চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি। মেয়র থাকাকালীন তিনি এই অনিয়মে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ জিতেন্দ্রবাবুর। বিষয়টি পুরসভার অধিবেশনে আলোচনা করে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে বলেও দাবি করেছেন তিনি। বিরোধী নেতা তাপসবাবু যদিও অভিযোগ উড়িয়ে বিষয়টি প্রমাণ করার জন্য পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন পুর কর্তৃপক্ষের দিকেই।
আসানসোলের পুরনো রামকৃষ্ণ মোড় এলাকায় পার্বতী মার্কেট কমপ্লেক্সের নির্মাণ নিয়ে এই আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। চেয়ারম্যান জিতেন্দ্রবাবু দাবি করেন, ২০০৪ সালের গোড়ায় বাম পরিচালিত পুরসভার তৎকালীন মেয়র শ্যামল মুখোপাধ্যায় আসানসোলের একটি সংস্থাকে ওই কমপ্লেক্সটি ৭৫ লক্ষ টাকায় ১৫ বছরের জন্য লিজ দেন। এর মাস কয়েক পরে পুরভোট হয় ও ফের বোর্ড দখল করে বামেরা। মেয়র হন সিপিএমের তাপস রায়। জিতেন্দ্রবাবু অভিযোগ করেন, মেয়র হওয়ার পরেই তাপসবাবু মার্কেট কমপ্লেক্সের পুরনো লিজ চুক্তি বাতিল করেন। মেয়াদ ১৫ থেকে ৩০ বছর বাড়িয়ে মাত্র ১২ লক্ষ টাকায় ওই সংস্থাকেই লিজ দেন।
এই মাকের্ট কমপ্লেক্স নিয়েই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁর আরও অভিযোগ, এর ফলে পুরসভার প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। জিতেন্দ্রবাবুর বক্তব্য, “আমরা বোর্ডের অধিবেশনে এই অনিয়মের বিষয়টি আলোচনার জন্য তুলব। প্রয়োজনে সবিস্তার তদন্ত করে লিজ চুক্তি বাতিলও করব।” পুর চেয়ারম্যান আরও অভিযোগ করেন, নিজের ও দলের জন্য টাকা জোগাড় করতেই তাপসবাবু পুরসভাকে এ ভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলেছেন।
শাসকপক্ষের এই অভিযোগ অবশ্য মানেননি বিরোধী নেতা সিপিএমের তাপসবাবু। তাঁর পাল্টা দাবি, পুরসভাকে আর্থিক ক্ষতি নয়, বরং অনেক বেশি লাভের মুখ দেখিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেন, ২০০৪ সালে তৎকালীন মেয়র শ্যামলবাবু কমপ্লেক্সটির ৭০ শতাংশ মালিকানা ১৫ বছরের জন্য ৪০ লক্ষ টাকায় ওই সংস্থাকে লিজ দেন। তিনি মেয়র হওয়ার পরে ২০০৭ সালে কমপ্লেক্সের বাকি ৩০ শতাংশের মালিকানাও ওই সংস্থাকে লিজ দেন। পরিবর্তে ১৫ বছরের জায়গায় ৩০ বছরের জন্য এককালীন ৭৫ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়। একই সঙ্গে, বাৎসরিক ৯ লক্ষ টাকা ভাড়াও ধার্য করা হয়। প্রতি তিন বছর অন্তর দশ শতাংশ হারে ভাড়া বৃদ্ধির কথাও লিজ চুক্তিতে বলা রয়েছে। পুরসভার বিরোধী নেতা বলেন, “এখানে ১২ লক্ষ টাকার প্রসঙ্গ কী ভাবে এল, বুঝতে পারছি না। ওরা মিথ্যা বলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। ক্ষমতা থাকে তো পুরসভার অধিবেশনে আর্থিক অনিয়ম প্রমাণ করুক। আমিও সেখানে কাগজপত্র হাজির করব।” তাঁর কটাক্ষ, “আসলে পুরসভায় সাম্প্রতিক কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ায় মেয়র বেকায়দায় পড়েছেন। সাধারণ মানুষ সব বুঝতে পারছেন। তাই মানুষের নজর ঘোরাতে ওরা এ সব বলছে।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন মোড় এলাকায় পুরসভার বহু পুরনো একটি বাজার ছিল। সেটির জায়গায় একটি মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির সিদ্ধান্ত হয় ২০০৩ সালের ২০ নভেম্বর। বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সেটি নির্মাণের আবেদন জানিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ দরপত্র ডাকেন। মোট দশটি সংস্থা আবেদনপত্র জমা দেয়। সর্বোচ্চ দর হাঁকে আসানসোলের ওই সংস্থাটি। সংস্থার কর্ণধার শচীন রায়ের দাবি, “কমপ্লেক্সটি ১২ লক্ষ টাকায় লিজ পাওয়ার কোনও কথা কোনও দিন হয়নি। এ নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছে, তা ভিত্তিহীন।” তাঁর আরও দাবি, পুর কর্তৃপক্ষ চাইলে লিজ সংক্রান্ত বৈধ কাগজপত্রও দেখাতে তিনি তৈরি। মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের যদিও বক্তব্য, “চেয়ারম্যান যা বলেছেন, তা নিশ্চয় জেনেই করেছেন।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.