সেজেগুজে তৈরি এসি ট্রাম, চালানোর আশ্বাস বছরের শেষে
যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য আট মাস আগে এসি ট্রাম নামানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। সেজেগুজে সেই ট্রাম প্রায় ১০০ দিন ধরে ডিপোয় পড়ে আছে। কবে রাস্তায় নামবে, জানা নেই কারও।
সাধারণ ট্রামের চেয়ে আয়তনে এই ট্রাম সামান্য বড়। প্রায় ৩৬ ফুট দীর্ঘ, ৭ ফুট চওড়া, ৭ ফুট উঁচ এই এসি ট্রাম পড়ে আছে নোনাপুকুর ডিপোয়। তৈরি হয়েছে সেখানেই। খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। রঙিন ফাইবার গ্লাসের জানলা। গদিতে মোড়া ৩৬টি আসন। চালক-নিয়ন্ত্রণের উপযোগী স্বয়ংক্রিয় দরজা। মিউজিক সিস্টেম, মোবাইল চার্জার প্রভৃতি সুযোগ। কেন পড়ে আছে এটি? ট্রাম সংস্থার চেয়ারম্যান (সিটিসি) শান্তিলাল জৈন বলেন, “সাধারণ যাত্রীদের জন্য না রেখে ট্রামটি আমরা পর্যটন দফতরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে চালাতে চাইছি। তাই সময় লাগছে।”
সময় লাগার কারণ হিসেবে রাজ্যের পর্যটনসচিব বিক্রম সেন বলেন, “সম্প্রতি ট্রামটির মহড়া হয়েছে। যাত্রীদের পা ছড়িয়ে বসার সুযোগ দিতে আমরা ট্রামের আসনসংখ্যা কমিয়ে দিতে বলেছি। এ ছাড়া ট্রামের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ঠিক মতো কাজ করছে না। এটিও ঠিক করে দিতে হবে ওঁদের।”
পর্যটন দফতরের চাহিদা মতো প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা শান্তিবাবু দ্রুত নেওয়ার আশ্বাস দিলেও কবে ওই ট্রাম চলবে, তা তিনি বলতে পারেননি। তিনি বলেন, “ট্রামটি কী ভাবে চলবে, তা ঠিক করবে পর্যটন দফতর। আমরা ওই দফতরের কাছ থেকে কিছু আয় করব।”
সেই এসি ট্রাম। নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোয়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
মহাকরণ সূত্রের খবর, সপ্তাহে পাঁচ দিনের জন্য ওই ট্রাম-বাবদ সিটিসি মাসে পাঁচ লক্ষ টাকা চেয়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি সিটিসি-র চেয়ারম্যান বলেছিলেন, “সাধারণ ট্রাম ভাড়া দিয়ে তিন ঘণ্টায় পাঁচ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এসি ট্রামে এর দ্বিগুণ পাওয়া সম্ভব।” কেন সেই লক্ষ্য পূর্ণ হল না? চেয়ারম্যান বলেন, “প্রথম বার এসি ট্রাম ভাড়া দিচ্ছি। কতটা বাণিজ্যিক সাফল্য পাওয়া যায়, দেখে নিতে চাইছি।”
পর্যটন দফতরের ভাবনা রূপায়িত হলে সকালে এসপ্ল্যানেড থেকে এসি ট্রামটি যাবে বেলগাছিয়া পর্যন্ত। মূলত মধ্য ও উত্তর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ভবনগুলি দেখতে আগ্রহীদের জন্যই ওই ব্যবস্থা। বিকেলে ট্রামটি হয়ে উঠবে রেস্তোরাঁ। এসপ্ল্যানেড থেকে যাবে খিদিরপুর। খাবার সরবরাহ করবে ‘ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড ট্রাভেলিং কর্পোরেশন’।
এ শহরে বিভিন্ন রুটে বেশ কিছু এসি ভলভো বাস নেমেছে। এসি ট্যাক্সিও চলছে। এক লপ্তে এক হাজার এসি ট্যাক্সির নতুন পারমিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এসি ট্রামের আশ্বাস দিলেও কেন যাত্রীরা সেই সুযোগ পাচ্ছেন না? শান্তিলালবাবু স্বীকার করেন, “ট্রামটি আদতে সাধারণ যাত্রীদের জন্য ভাবা হলেও পর্যটন দফতর আগ্রহ দেখানোয় ওটি ওদের জন্য বরাদ্দ করেছি। অদূর ভবিষ্যতে সাধারণ যাত্রীদের জন্য এসি ট্রাম নামাব।” পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “সিটিসি কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের শেষ দিকে চারটি এসি ট্রাম নামানোর আশ্বাস দিয়েছেন।” কিন্তু বছর শেষের ঠান্ডায় এসি ট্রাম চালিয়ে যাত্রী টানা যাবে কি? মন্ত্রী বলেন, “দেখা যাক! ধীরেসুস্থে ট্রামের সার্বিক মানোন্নয়নের চেষ্টা হচ্ছে।”

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.