গেইলের ১৭৫-এর চেয়েও
এগিয়ে রাখব পোলার্ড-ঝড়কে

ক্যারিবিয়ানদের নৃশংস ইনিংস ক্রিকেটে প্রচুর দেখেছি। দেখতাম, ভিভ রিচার্ডসকে ব্যাট হাতে দেখলে কী রকম কাঁপুনি শুরু হত বোলারদের মধ্যে। ভিভের পর অনেক দিন সে রকম বিধ্বংসী কাউকে দেখিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে। এই প্রজন্মের ভাগ্য ভাল, তারা আবার দেখতে পাচ্ছে ক্যারিবিয়ান ঔদ্ধত্য কাকে বলে। গেইল-পোলার্ডকে দেখে আন্দাজ করতে পারছে, ভিভ এক সময় মাঠে কী কাণ্ড ঘটাত! কোনও সন্দেহ নেই, ভিভের ওরা যোগ্য উত্তরসূরি।
আর আজ পোলার্ড যে ইনিংসটা খেলে গেল, সেটা স্বয়ং ভিভও খেলতে পারলে আনন্দ পেত না কী? আমার তো মনে হয়, পেত। মাত্র ২৭ বলে একটা লোক ৬৬ করে ম্যাচ জিতিয়ে দিচ্ছে, তা-ও কখন? না, চার ওভারে জেতার জন্য যখন দরকার সত্তরের কাছাকাছি রান! যখন হাতে ক্র্যাম্প নিয়ে সচিন বসে আছে ডাগআউটে। যখন ঠাসা ওয়াংখেড়ে ঘরের টিমের সম্ভাব্য হার দেখতে হবে ভেবে স্তব্ধ হয়ে বসে!
অবিশ্বাস্য, মহানাটকীয়, বিধ্বংসী ঠিক কোন বিশেষণ সোমবার পোলার্ডের ইনিংসের পাশে বসানো উচিত ভেবে পাচ্ছি না। ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট বলতে লোকে এখন গেইলকেই বোঝে। কিন্তু তবু আজ পোলার্ডকে দেখে মনে হচ্ছে, আইপিএলে গেইলের ১৭৫-কে দু’নম্বরে রাখতে হবে। পরিস্থিতি, চাপ-- সব কিছু ধরলে পোলার্ড এক, গেইল দুই। মনে রাখবেন গেইল কিন্তু ১৭৫ করেছিল প্রথমে ব্যাট করে। রান তাড়া করতে হয়নি। আর পোলার্ড এ দিন যখন নৃশংস ভাবে মারা শুরু করল, তখনও আস্কিং রেট পনেরো। একটা ওভারে রান সামান্য পড়ে যাওয়া মানেই ম্যাচ শেষ। চাপটা ভাবতে পারছেন? ওই অবস্থায় আটটা ছয় মেরে ম্যাচ জেতানো, অমানুষিক কাণ্ডকারখানা ছাড়া আর কী হতে পারে?
বিধ্বংসী ধবন। সোমবার হায়দরাবাদে। ছবি: পিটিআই
রাতের দিকে অনেক কেকেআর সমর্থককে আবার নড়েচড়ে বসতে দেখছি। মুম্বই এ দিন জেতায় লাভটা হল কেকেআরের। ভেসে রইল। কিন্তু আমি অতটা আশাবাদী নই। যে কোনও দিন টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাবে নাইটরা। একটা জিনিস খেয়াল করেছেন কি না জানি না, নাইটদের প্রতিদ্বন্দ্বী যারা, অর্থাৎ আরসিবি বা সানরাইজার্স কেউই কিন্তু খারাপ খেলছে না। দু’টো টিমেরই দু’টো করে ম্যাচ বাকি ঘরের মাঠে।
আর সত্যি কথা বলতে, ম্যাচটা সানরাইজার্স আজ জিততেও পারত। ডেল স্টেইন কী বল করল! ওকে পোলার্ডও খেলতে পারেনি। পোলার্ডের প্রসঙ্গে ঢোকায় আরও একটা কথা বলি। যাঁরা ভাবছেন, সচিনের ক্র্যাম্প ধরে যাওয়াটা মুম্বইয়ের ক্ষেত্রে শাপে বর হয়েছে, তাঁরা ভুল ভাবছেন। সচিন উঠে আসার পর কিন্তু যথেষ্ট বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিল মুম্বই। দীনেশ কার্তিক এক বল পরেই আউট। অম্বাতি রায়াডুও পারল না। পোলার্ডের এমন ইনিংস আসতে পারে, কেউ তো ভাবতে পারেনি। আর সচিন কিন্তু খেলাটা ধরে নিচ্ছিল। ক্র্যাম্প হওয়ার আগে স্টেপ আউট করে করণ শর্মাকে দুর্দান্ত ছয়টাও মেরেছিল। কে বলতে পারে, সচিন থাকলে হয়তো আস্কিং রেটটা এত বেশি হত না।
আসলে পোলার্ড বা গেইল যে দিন খেলে, কারও কিছু করার থাকে না। কেউ ভেবেছিল থিসারা এক ওভারে ২৯ দেবে? ও গোটা টুর্নামেন্টেই ভাল বল করছিল। কিন্তু আজ থিসারার যা দশা করল পোলার্ড, মনোবিদ না ডাকতে হয়! ক্যারিবিয়ান কিং বোঝাল কেন ওকে এত টাকা দিয়ে কিনেছে মুম্বই। গেইলকে যদি ক্যারিবিয়ান দৈত্য বলে ডাকা হয়, তা হলে পোলার্ডের নামের পাশে একটা বিশেষণ বসা উচিত। ও-ই তো এক নম্বরে তুলে দিল মুম্বইকে।
ধন্যবাদ পোলার্ড। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট কাকে বলে তুমি আরও একবার বুঝিয়ে দিলে!





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.