পিছিয়ে জঙ্গলমহল
বহু মৌজায় বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি এখনও
কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১০ সালের মধ্যে। সেই সময়সীমা পেরিয়েছে অনেক দিন। অথচ এখনও পশ্চিম মেদিনীপুরের সাড়ে চারশোরও বেশি মৌজায় বিদ্যুদয়নের কাজ শুরু হয়নি। অধিকাংশই এলাকাই জঙ্গলমহলে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দ্রুত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হবে বলে বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর। দফতরের মেদিনীপুর জোনাল ম্যানেজার বিনয় সেন বলেন, “বেশ কিছু মৌজায় এখনও বিদ্যুদয়নের কাজ বাকি রয়েছে। বৈঠকে প্রকল্প নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে।” সেই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, “যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষের চেষ্টা চলছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৯টি ব্লক রয়েছে। এ জেলায় ২০০৭-’০৮ সালে রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন যোজনার কাজ শুরু হয়। সব মিলিয়ে ৩টি সংস্থা কাজ করার দায়িত্ব পায়। এল এন্ড টি নামে একটি সংস্থা পেয়েছিল ১১টি ব্লকের দায়িত্ব। যার মধ্যে রয়েছে কেশপুর, ঘাটাল, চন্দ্রকোনা ১ ও ২, দাসপুর ১ ও ২, মেদিনীপুর সদর, পিংলা প্রভৃতি। এনটিপিসি নামে একটি সংস্থা পেয়েছিল খড়্গপুর ১ ও ২, এই দু’টি ব্লকে দায়িত্ব। অন্যদিকে, জঙ্গলমহল এলাকার ১০টি সহ বাকি ১৬টি ব্লকের দায়িত্ব পেয়েছিল মাইতাস নামে একটি সংস্থা। এই ১৬টি ব্লকের ২ হাজার ৮৮৮টি মৌজায় বিদ্যুদয়নের কাজ হওয়ার কথা। কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ২৪২৯টিতে। ৪৫৯টি মৌজায় কাজ শুরু হয়নি। অভিযোগ, বাকি দু’টি সংস্থা স্বাভাবিক গতিতে কাজ করলেও মাইতাস কাজের ক্ষেত্রে গড়িমসি করেছে। এরফলেই এই পরিস্থিতি। এক সময় এই সংস্থার বদলে অন্য কোনও সংস্থাকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া নিয়েও জেলায় আলোচনা হয়। তারপর আইএল এন্ড এফএস নামে একটি সংস্থা এ কাজের দায়িত্ব পেয়েছে বলে জেলা পরিষদ সূত্রে খবর। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়নি, এটা ঠিক।” তাঁর কথায়, “শুরুর দিকে কাজের গতি স্বাভাবিকই ছিল। সর্বত্র কাজ চলছিল। পরে একটি সংস্থার কাজ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কাজের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দেয়।” সভাধিপতি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আগে বহুবার আলোচনা হয়েছে। আশা করি, যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষের চেষ্টা হবে।”
প্রশাসনের এক সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, এক সময় জঙ্গলমহল এলাকায় কাজের পরিবেশ ছিল না। দীর্ঘদিন ধরে অশান্তি জিইয়ে ছিল। এরফলে ওই এলাকায় স্বাভাবিক গতিতে কাজ এগোনো যায়নি। এখন অবশ্য সেই পরিস্থিতি নেই। কাজ স্বাভাবিক গতিতে এগোচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার এক আধিকারিক মানছেন, “দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য আমাদের উপর প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক চাপ রয়েছে। আমরাও সব রকম ভাবে চেষ্টা করছি, যাতে যত দ্রুত সম্ভব প্রকল্পের কাজ শেষ করা যায়।” জানা গিয়েছে, গোপীবল্লভপুর ১ ব্লকের ৮৩টি মৌজায় বিদ্যুদয়নের কাজ হওয়ার কথা। হয়েছে ৭৩টিতে। নয়াগ্রামে ১১৬টি মৌজায় বিদ্যুদয়নের কাজ হওয়ার কথা। হয়েছে ৬৪টিতে। নারায়ণগড়ে ৩১১টির মধ্যে ২৩৮টি, বিনপুর ১ ব্লকে ৩০৫টির মধ্যে ১৯৪টি, বিনপুর- ২ ব্লকে ২২৬টির মধ্যে ১৩৮টি, সাঁকরাইলের ১১৬টির মধ্যে ১০০টিতে কাজ হয়েছে। প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ারও বক্তব্য, “একটি সংস্থা স্বাভাবিক গতিতে কাজ এগোতে পারেনি। এরফলে এই পরিস্থিতি। জঙ্গলমহল এলাকার বহু মৌজায় এখনও প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি।” যত দ্রুত সম্ভব ওই সব মৌজায় কাজ শেষের দাবিও জানান তিনি। জেলার সবমিলিয়ে ৫ হাজার ৫৯৮টি মৌজায় রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন যোজনার কাজ হওয়ার কথা। এরমধ্যে এল এন্ড টি যে ১১টি ব্লকের দায়িত্ব পেয়েছে, সেখানে ২ হাজার ৩৭৮টি মৌজা রয়েছে। জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, এই সব ব্লকে কাজ শেষের মুখে। এনটিপিসি যে ২টি ব্লকের দায়িত্ব পেয়েছে, সেখানে ৩৩২টি মৌজা রয়েছে। ওই দু’টি ব্লকে কাজ শেষ। তবে ৪৫৯টি মৌজায় কাজ শুরু হয়নি। কথা ছিল, ২০১০ সালের মধ্যে কাজ শেষ হবে। তা হয়নি। এ বার ২০১৩ সালের মধ্যেও কাজ শেষ হয় কি না, সেটাই দেখার। বিদ্যুৎ দফতরের মেদিনীপুর জোনাল ম্যানেজার অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছেন, “পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছি। সমস্যার কিছু নেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.