ফের কাঠগড়ায় ইউকো ব্যাঙ্ক
এ বার সমবায় ব্যাঙ্কের ৪০ কোটি উধাও
শুধু রাজ্য পরিকাঠামো উন্নয়ন বিত্ত নিগমের ১২০ কোটিই নয়। এ বার টাকা লোপাট রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কেরও। উধাও হওয়া টাকার পরিমাণ ৪০ কোটি। ঘটনাচক্রে দু’টি ক্ষেত্রেই জড়িত ইউকো ব্যাঙ্ক এবং দু’টি প্রতারণার খবরই জানা গিয়েছে চলতি মাসের ১২ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে। সমবায় ব্যাঙ্কের টাকা লোপাটের সঙ্গে অবশ্য ইউকো ব্যাঙ্ক ছাড়াও ইলাহাবাদ ব্যাঙ্ক ও ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্কের (আইওবি) নাম জড়িয়েছে।
বিত্ত নিগমের টাকা যে ভাবে তছরুপ হয়, ঠিক সে ভাবেই লোপাট হয়ে গিয়েছে সমবায় ব্যাঙ্কের টাকা। ২০ কোটি করে মোট ৪০ কোটি টাকা ইউকো ব্যাঙ্ক এবং ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ককে স্থায়ী আমানতে জমা রাখার জন্য দিয়েছিল তারা। দু’টি ক্ষেত্রেই টাকা জমা পড়ে ভুয়ো অ্যাকাউন্টে।
সমবায় ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, অন লাইনে ‘রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট’ (আরটিজিএস) ব্যবস্থার মাধ্যমে গত ৭ জানুয়ারি আইওবি-র গড়িয়া শাখায় এবং ১৫ জানুয়ারি ইউকো ব্যাঙ্কের হেস্টিংস শাখায় টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু সেই টাকা সমবায় ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে জমা না-পড়ে চলে যায় ভুয়ো অ্যাকাউন্টে। আইওবি থেকে টাকা অন্যত্র না গেলেও ইউকো ব্যাঙ্ক থেকে টাকা আরটিজিসি-র মাধ্যমেই চলে গিয়েছে ইলাহাবাদ ব্যাঙ্কের নিউ আলিপুর শাখার দু’টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টে। আশীর্বাদ ট্রেড এবং গজরাজ সেলস কর্পোরেশন নামে দু’টি ভুয়ো সংস্থার নামে ওই অ্যাকাউন্ট দু’টি খোলা হয়েছে। ১৬ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে টাকা স্থানান্তরিত হয়। তার পর তা কোথায় গিয়েছে, জানা যায়নি। এ ব্যাপারে তাঁরা কিছুই জানেন না, দাবি ইলাহাবাদ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের।
তছরুপের কথা জানা গেল কী ভাবে? সমবায় ব্যাঙ্কের এক কর্তা বলেন, বিত্ত নিগমের টাকা লোপাট হওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর গত ১৫ মার্চ তাঁরা নিজেদের স্থায়ী আমানতের ব্যাপারে ইউকো ব্যাঙ্কের কাছে খোঁজখবর করেন। আইওবি-র ভুয়ো অ্যাকাউন্টে জমা থাকা ২০ কোটি টাকা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ওই ব্যাঙ্কের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন সমবায় ব্যাঙ্কের কর্তারা। কিন্তু ইউকো ব্যাঙ্ক থেকে টাকা অন্যত্র চলে যাওয়ায় এ ক্ষেত্রে কী হবে তা পরিষ্কার নয়।
এ দিকে, বিত্ত নিগমের টাকা তছরুপের ব্যাপারে এ দিন নিগমের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ইউকো ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। লোপাট হওয়া টাকা নিগমকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে কি না, তা-ও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তাঁরা। সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার চিন্ময়কুমার মুখোপাধ্যায় ও তছরুপের মামলা দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা অফিসার এস সি শর্মা বলেন, “এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত।”
বিত্ত নিগমের বিরুদ্ধে চিন্ময়বাবুদের অভিযোগ, “শিল্প সংস্থার সঙ্গে লেনদেন করার জন্য আমাদের নির্দিষ্ট কিছু শাখা রয়েছে। বিবাদি বাগ এলাকায় ওই ধরনের একটি শাখা আছে বিত্ত নিগমের দফতর থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে। কিন্তু সেই শাখার সঙ্গে যোগাযোগ না-করে তাঁরা আমাদের সার্কাস অ্যাভিনিউ শাখার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।” ওই শাখা ১% সুদ বেশি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়াতেই সেখানে টাকা রেখেছিলেন বলে দাবি নিগম কর্তৃপক্ষের। তা নস্যাৎ করে চিন্ময়বাবু বলেন, “আমাদের সমস্ত শাখায় একই হারে সুদ দেওয়া হয়।”
তবে তাঁদের ব্যাঙ্কে কী ভাবে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলা হল, তার ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ইউকো ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ে যে সব নথি দেওয়া হয়েছিল, তা ঠিক ভাবে যাচাই করা হয়েছিল কিনা, এই প্রশ্নের জবাব মেলেনি। যদিও প্রতারণার সঙ্গে সার্কাস অ্যাভিনিউ শাখার ম্যানেজারের যুক্ত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি তাঁরা। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ সোমবার জানান, ধৃত ম্যানেজার মধ্যমগ্রামে ৭০ লক্ষ টাকা রেখেছিলেন। রবিবার সেই টাকা উদ্ধার হয়েছে। পাশাপাশি, ইউকো ব্যাঙ্কের মানিকতলা ও ইন্ডিয়ান এক্সচেঞ্জ প্লেস শাখার অ্যাকাউন্টে ৫৭ লক্ষ টাকা রেখেছিলেন তিনি। সেগুলিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.