রাস্তা থেকে উদ্ধার মাধ্যমিকের উত্তরপত্র, দোষ স্বীকার শিক্ষকের
রীক্ষা বিভ্রাট চলছেই। উচ্চ মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড বিভ্রাটের পর এ বার মাধ্যমিকের অঙ্কের উত্তরপত্র উদ্ধার হল রাস্তা থেকে। বুধবার রাতে সদ্য শেষ হওয়া মাধ্যমিক পরীক্ষার অঙ্কের উত্তরপত্র মিলল উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায়। তবে যে শিক্ষকের কাছ থেকে ওই উত্তরপত্র খোয়া গিয়েছিল তিনি বৃহস্পতিবার সকালে থানায় এসে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এক ব্যক্তি মাধ্যমিকের খাতা জমা দিয়েছেন। পর্ষদের প্রতিনিধিরা এসে ওই খাতা নিয়ে গিয়েছেন।”
খাতাগুলি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সল্টলেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দফতরে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানান পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। প্রশাসক তলব করায় অভিযুক্ত শিক্ষকও এ দিন হাজির হন পর্ষদ-অফিসে। সেখানে তিনি লিখিত ভাবে গোটা ঘটনাটা জানান। পরে কল্যাণময়বাবু বলেন, “চরম গাফিলতির কারণেই এমন ঘটনা ঘটে। ওই শিক্ষকের স্কুলে পরিচালন সমিতিকে সেটা জানানো হবে। ওঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হবে পরিচালন সমিতিকে।” তবে অভিযুক্ত শিক্ষককে খাতা দেখা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না বলে প্রশাসক জানান। তিনি বলেন, “শাস্তি হিসেবে যদি ওঁকে খাতা দেখার দায়িত্ব না দেওয়া হয়, তা হলে তো সেটা ওঁর কাছে এক রকম পুরস্কারই হবে। তাই খাতা ওঁকে দেখতেই হবে।”
মাধ্যমিকের উত্তরপত্র এ ভাবে হারিয়ে ফেলায় শিক্ষক যথেষ্ট অনুতপ্ত। এটা একেবারেই ‘অনিচ্ছাকৃত’ বলে পর্ষদ অফিসে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ কয়েকজন যুবক বাদুড়িয়ার কাজীর দোকান ও জোড়া অশথ্বতলার মাঝে একটি পেট্রোল পাম্পের সামনে একটি চটের ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করছিলেন। সেই সময় সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন সন্দেশখালির উত্তর আখড়াতলা সহদেব মেমোরিয়াল স্কুলের শিক্ষক ইলিয়াস ওবাইদুল্লা। সন্দেহ হওয়ায় তিনি ওই যুবকদের কাছ থেকে ব্যাগটি নিয়ে খুলে দেখেন। দেখা যায়, ব্যাগের মধ্যে রয়েছে ২০১৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার অঙ্কের উত্তরপত্র। তিনি তখনই ব্যাগটি নিয়ে বাদুড়িয়া এলএমএস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপক রায়ের বাড়িতে যান। তারপর দীপকবাবুর সহযোগিতায় ওই রাতেই ব্যাগটি বাদুড়িয়া থানার ওসি কল্লোল ঘোষের কাছে জমা দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে হিঙ্গলগঞ্জের একটি স্কুলের এক শিক্ষক বাদুড়িয়া থানায় এসে জানান, বুধবার রাতে স্কুল থেকে তিনি যখন বাড়ি ফিরছিলেন, সেই সময় তাঁর কাছ থেকে মাধ্যমিকের খাতার একটি বান্ডিল হারিয়ে গিয়েছে।
ইলিয়াস ওবাইদুল্লা বলেন, ‘‘বাড়ি ফেরার পথে কয়েকজন যুবককে একটি ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করতে দেখে সন্দেহ হয়। কাছে গিয়ে ব্যাগটি খুলতেই দেখি দেখা যায় বাঁশপাতার কাগজে মোড়া একটি প্যাকেট। উপরে লেখা ছিল মাধ্যমিক ২০১৩। দেখে বুঝতে পারি এগুলি মাধ্যমিকের অঙ্কের উত্তরপত্র। গুরুত্ব বুঝে এলএমএস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপক রায়ের বাড়িতে যাই। তার পর তাঁকে সঙ্গে নিয়ে থানায় গিয়ে ব্যাগটি জমা দিই।” দীপকবাবু বলেন, “মাধ্যমিকের খাতাগুলি হারিয়ে গেলে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতি হয়ে যাবে বুঝতে পেরে আমরা বাদুড়িয়া থানায় গিয়ে ব্যাগটি জমা দিই।” এই বিষয়ে থানায় অভিযোগও করা হয়েছে। তিনি বলেন, “১২ মার্চ বারাসতের প্রধান পরীক্ষকের কাছ থেকে আমি দেড়শোর উপর অঙ্কের খাতা নিয়ে আসি। বুধবার ওই অঙ্কের খাতা ব্যাগের মধ্যে নিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। মোটরবাইকের পিছনে খাতার ব্যাগটি বাঁধা ছিল। বাড়ি ফিরে দেখি খাতা নেই। অনেক রাত পর্যন্ত খোঁজাখুজি করেও না পেয়ে থানায় যাই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.