সাড়া দিচ্ছে না ইনফোসিস, অনড় রাজ্যও
রাজ্য থেকে ইনফোসিসের বিদায়ঘণ্টা কার্যত বেজে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের প্রস্তাবের জবাব দিতে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়েছিলেন সংস্থার কর্তারা। তার পর আড়াই মাস কেটে গেলেও কোনও উত্তর আসেনি। যাকে পশ্চিমবঙ্গে প্রকল্প গড়ার ব্যাপারে অনীহার ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছেন শিল্প দফতরের আধিকারিকেরা।
শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বুধবারও বিধানসভায় দাঁড়িয়ে দাবি করেছেন যে, ইনফোসিসকে ধরে রাখতে সরকার উদ্যোগী। যদিও সেই উদ্যোগ কার্যত অর্থহীন বলেই শিল্পমহলের একাংশের মত। কারণ, ইনফোসিসকে বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের (এসইজেড) তকমা দিতে যে রাজ্য সরকার রাজি নয়, সে কথা এ দিনও জানিয়েছেন পার্থবাবু। আর ওই তকমা না-পেলে তাদের পক্ষে যে প্রকল্প গড়া সম্ভব নয়, সে কথা একাধিক বার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে ইনফোসিস। সুতরাং, খাতায়কলমে এখনও বেঁচে থাকলেও দু’পক্ষের কেউই যে হেতু নিজের অবস্থান থেকে নড়ছে না, সে হেতু প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলেই শিল্প দফতরের আধিকারিকদের মত।
ইনফোসিসের কর্তারা রাজ্যের শিল্প দফতরকে একাধিক বার জানিয়েছেন, এসইজেড প্রকল্পকে কেন্দ্রীয় সরকার যে সব সুযোগ সুবিধা দেয় সেগুলি না-পেলে তাঁদের পক্ষে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা অসম্ভব। শ্রমিক শোষণ-সহ যে সব কারণে এসইজেড-কে ছাড়পত্র দিতে তৃণমূলের আপত্তি, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে সেগুলি প্রযোজ্য নয় বলেই শিল্পমহলের দাবি। কিন্তু তা সত্ত্বেও এসইজেড-বিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শিল্পমন্ত্রী এ দিনও বিধানসভায় সেই পুরনো অবস্থান আঁকড়ে থেকেই বলেন, রাজ্য যে এসইজেড-এর বিরুদ্ধে সে কথা ইনফোসিস-কে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু রফতানির জন্য প্রকল্প না-গড়ে তারা যদি দেশের বাজারও ধরার চেষ্টা করে, তা হলে প্রয়োজনে রাজ্য সরকারের কর ছাড়ের সুবিধাও তাদের দেওয়া হবে। পার্থবাবুর কথায়, ‘‘আমরা প্রায় দশ বার বেঙ্গালুরুতে গিয়ে ইনফোসিসের সঙ্গে কথা বলে এসেছি। ওদের মূল কাজ রফতানি-কেন্দ্রিক। আমরা বলেছি, এসইজেড ছেড়ে এখানে আসুন, শিল্প গড়ুন।” তবে শিল্পমহলের বক্তব্য, যে ছাড়ের কথা রাজ্য সরকার বলছে, তা খুবই নগণ্য।
ইনফোসিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতছাড়া হলেও শিল্পায়নের পথে রাজ্য এগিয়ে চলেছে বলেই এ দিন বিধানসভায় দাবি করেছেন পার্থবাবু। কংগ্রেসের অসিত মিত্রের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, রাজ্যে এই মূহূর্তে ৫০৩টি তথ্য-প্রযুক্তি কেন্দ্রে ১ লক্ষ ২০ হাজার কর্মী চাকরি করছেন। রাজ্যের প্রতিটি জেলাতেই তথ্য-প্রযুক্তি কেন্দ্র বা আইটি-হাব তৈরি হচ্ছে। আইটিসি-ইনফ্রাস্ট্রাকচার রাজ্যে আসছে এবং তার জন্য ১৬ হাজার ৫০০ কর্মসংস্থান হবে। তাঁর কথায়, “কগনিজেন্ট আসছে, উইপ্রো আসছে, অ্যাকসেঞ্চার-এরিকসন কত নাম বলব! নৈহাটিতে ৭০ একর জমিতে হার্ডওয়্যার পার্ক হবে, ওয়েব ডিজাইন-অ্যানিমেশনের কাজও হবে। আমাদের রাজ্যের যে মেধাশক্তি বাইরে চলে গিয়েছেন তাঁরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে ফিরতে চাইছেন। শুধু বানতলা-রাজারহাট নয়, দুর্গাপুর, হলদিয়া, শিলিগুড়ি এমনকী বাঁকুড়াতেও শিল্প গড়ে উঠবে।”
শিল্পমন্ত্রীর আরও দাবি, এক সময়ে দেশের মোট শিল্পের ৩ শতাংশ ছিল পশ্চিমবঙ্গে। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৭ শতাংশ। রাজ্যের লক্ষ্য তা বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.