আইনজীবীদের কর্মবিরতি, থমকে বিচার ব্যাঙ্কশালে
র্মসংস্কৃতি ফেরাতে অকারণে সময় নষ্ট না-করার কথা বারবার বলছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। সেই অনুরোধ উড়িয়ে দিয়ে বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিলেন ব্যাঙ্কশাল কোর্টের আদালতের আইনজীবীদের একাংশ। বুধবারের কর্মবিরতিতে দিনভর সমস্যায় পড়লেন কয়েকশো বিচারপ্রার্থী। এই আদালতের চারটি আইনজীবী সংগঠনের তিনটি অবশ্য বৃহস্পতিবার থেকে কাজ করবেন বলে দাবি করেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
জোড়াসাঁকো থানার ওসি ব্যাঙ্কশালের এক প্রবীণ আইনজীবীকে হেনস্থা করেছেন এই অভিযোগে মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন ওই আদালতের আইনজীবীরা। ওই ওসি নিজে আদালতে গিয়ে ক্ষমা না চাইলে বুধবার থেকে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায় এ বিষয়ে রিপোর্ট তলব করেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহের কাছে। বুধবার বিকেলে তা জমা পড়ে আদালতে।
ব্যাঙ্কশাল আদালতের মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বরূপ শেঠ, নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্য বিচারকরা বিক্ষুব্ধ আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ডিসি (সেন্ট্রাল)-এর রিপোর্ট পড়ে শোনানো হয়। তাতে বলা হয়েছে, ঘটনার সময় ওসি থানাতেই ছিলেন না। পুলিশের এই রিপোর্ট ‘বিকৃত’ বলে অভিযোগ তুলে কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড় থাকে ব্যাঙ্কশালের আইনজীবীদের একটি সংগঠন। নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য বিচারক, আইনজীবীদের প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি তদন্তকারী দল গঠনেরও দাবি তোলা হয়।
বন্ধ আদালত। তাই সালকিয়া থেকে এসেও ফিরে যেতে বাধ্য হলেন বীণা ঠাকুর। —নিজস্ব চিত্র
প্রতি দিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে গড়ে ২০০-২৫০টি মামলার শুনানি হয়। প্রায় হাজারখানেক বিচারপ্রার্থী ও বাড়ির লোকজন থাকেন আদালতে। ফলে কর্মবিরতির কথা না জেনেই আদালতে এসে এ দিন হয়রান হন অনেকে। ব্যাঙ্কশাল আদালতের ১৭টি, নগর দায়রা আদালতের ১৫টি এজলাস আর সিবিআই এবং ইসি কোর্টে কাজকর্ম ব্যাহত হয়। বিচারক ও সরকারি আইনজীবীদের অনেকে থাকলেও ছিলেন না বিচারপ্রার্থীদের আইনজীবীরা। মুখ্য সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায়-সহ বিশ্বজিৎ বর্ধন, প্রবীর মুখোপাধ্যায়, মিঠু দাস, সমর সেনরা এ দিন কাজ করেছেন। সরকার পক্ষের আইনজীবী অনিন্দ্য রাউতের বক্তব্য, “আইনজীবী হেনস্থার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। আবার আদালতের অবমাননা হয়, এমন কাজও অনুচিত। বিচারপ্রার্থীরা যাতে সমস্যায় না পড়েন সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।”
দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আইনজীবী মহলে কর্মসংস্কৃতি ফেরানোর চেষ্টা করছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র। তাঁর বক্তব্য, ‘আদালতে লক্ষ লক্ষ মামলা পড়ে রয়েছে। অকারণে তা-ই সময় নষ্ট করা উচিত নয়। নির্দেশ দিয়ে কর্মসংস্কৃতি ফেরানো যায় না। অন্তরের তাগিদেই তা করতে হয়। বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য প্রশান্তকুমার বাগচি প্রধান বিচারপতির বক্তব্য মেনে নিয়েও কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড়। তাঁর কথায়, “প্রধান বিচারপতি ঠিক কথাই বলেছেন। কিন্তু এটি একটি অন্যরকম ঘটনা। মক্কেলের সামনে আইনজীবীর সঙ্গে পুলিশ এ রকম ব্যবহার করলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হবে!”
বিক্ষুব্ধ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে এ দিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে যান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আনসার মণ্ডল, ওই সংগঠনের সদস্য অশোক দেব। পরে জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত অনৈতিক। আদালতে গিয়ে ওসি-কে ক্ষমা চাইতে হবে, এ দাবিও যুক্তিহীন।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.