হু ল্লো ড়
দেব টনিক

শুনলাম রোম্যান্স ছেড়ে এ বার থ্রিলার। সঙ্গীত পরিচালক শান্তনু মৈত্রকে বাদ দিয়ে অন্য কেউ। বিদেশে শ্যুটিং-ট্যুটিং না করে বাজেট অনেক কমিয়ে আনা। দেব-এর মতো সুপার হিট নায়ক সঙ্গে। মানে ‘অপরাজিতা তুমি’র তিক্ত ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এ বার আপনার ছক সব কিছু অন্য রকম!

প্রথমটা ঠিক আছে। বাকিগুলো নেই (হাসি)। হার্ডকোর থ্রিলার করছি ঠিক খবর। সমরেশ মজুমদারের ‘বুনোহাঁস’ অবলম্বনে। আন্ডারওয়ার্ল্ডের গল্প। কিন্তু শান্তনুও আছে। বিদেশে শ্যুটিংও আছে।

তবু ‘যাও পাখি বল’ থেকে তো ঢিসুম-ঢিসুমে আসতে হল!
আমি করেছি তো মাত্র তিনটে ছবি। ওই তিনটেতে প্রেম ভালবাসার উপর জোর দিয়েছিলাম। এখানেও প্রেম আছে। তবে প্রেক্ষাপট ডিফারেন্ট। আমার নতুন ছবিকে শুধু অ্যাকশন নয়, আমি বলব রিয়েল থ্রিলার। যার বাঁকে বাঁকে উত্তেজনা থাকবে। ব্যাঙ্ককে শ্যুটিং হবে, ঢাকায় শ্যুটিং হবে। শান্তনু একটা দারুণ মিউজিক বানাবে। বাজেটটা সেই তিন-চার কোটিতেই কিন্তু চলে যেতে পারে।

আপনি আর দেব একসঙ্গে ইন্টারেস্টিং। অনেকের মনে হতে পারে, বেকায়দায় থাকা টোনির দেব-টনিক পান করাটা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
অনেক দিন ধরেই আমাদের একসঙ্গে কাজ করার কথা হচ্ছে। ঠিক হয়ে উঠছিল না। তার পর মাস তিনেক আগে এই গল্পটা পড়ে মনে হল, দেব ছাড়া আর কাউকে দিয়ে হবে না। ওর স্টারডমটা তো বিরাট ব্যাপার নিশ্চয়ই। কিন্তু তার চেয়েও ইম্পর্ট্যান্ট, চরিত্রটাই এমন যে সমরেশদা অবধি বললেন, দেবকেই মানাবে। একটা সাধারণ সহজ সরল ছেলের ঘটনাচক্রে অপরাধজগতে জড়িয়ে পড়া। তার পর সেটার মধ্যে ক্রমশ তলিয়ে যেতে থাকা। এটায় দেব আইডিয়াল। ওর চোখে সেই ইনোসেন্সটা আছে। শ্যামল সেনগুপ্ত স্ক্রিপ্টটা তৈরি করছে। ও-ও দেব-য়ের কথা বলল। কী আশ্চর্য তিন জনেরই এক পছন্দ!

আনন্দ প্লাস-য়ে আগের ইন্টারভিউতে বলেছেন ‘দড়ি ধরে মারো টান, টোনি হবে না খান খান’। এই প্রকল্পটা কি সেই খান খান না হতে দেওয়া?
এ ভাবে বলছেন কেন? প্রায় দু’বছর পর আবার পরিচালনায় ফিরে আসছি। জুলাই থেকে শ্যুটিং শুরু করব, এটা নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছি।

দু’বছরের বিরতিটা নাকি ‘অপরাজিতা তুমি’র হতাশা থেকে?
‘অপরাজিতা তুমি’ থেকে আমি মোটেও হতাশ নই। খাতা খুলে মিলিয়ে নিন, গত বছর যে পাঁচটা মিডল এজ ছবি ব্যবসা করেছে এটা তার মধ্যে দু’ বা তিন নম্বরে। বিরতিটা আমি নিয়েছিলাম, ছবির বিষয়টা ভিতর থেকে আসছিল না বলে। এখনকার যে ছবিটা করছি সেটা ভিতর থেকে এসেছে, মাথায় ঢুকে গিয়েছে, তার পরেই তো করছি। আসলে ভিতর থেকে একটা আকুলতা আসা দরকার।
নতুন ছবি
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল
তা বলে দু’বছরের গ্যাপ?
আমার বরাবর মনে হয়, লেস ইজ মোর। যত ক্ষণ না মনের ভিতরে জিনিসটা ম্যারিনেট না করে। ইমেজগুলো সামনে ভিড় করে না আসে, তত ক্ষণ আমার পক্ষে সিনেমা করা সম্ভব নয়। শেষ ছবিটা করে যেমন, প্রচুর আনন্দ পেয়েছিলাম।

আপনার প্রোডিউসর আনন্দ পেয়েছিল বলে কেউ শোনেনি। কমন অনুযোগ হল, আপনি বাংলা ছবির বাজেটের ব্যাপারে খেয়াল রাখেন না। যাক, আগের ছবির মডেল ভুল ছিল ভেবে অনুশোচনা হয় না?
একটুও অনুশোচনা হয় না। খুব অনেস্টলি ছবিটা বানিয়েছিলাম। সারাক্ষণ বাজেটের কথা ভাবলে তো কাজই করা যাবে না। ভাই আপনি ব্যাট করতে নেমেছেন। সারাক্ষণ যদি কেউ কানের কাছে ঘ্যানঘ্যান করে, মেরো না মেরো না, আউট হয়ে যাবে, তা হলে ব্যাট করবেন কী করে? নতুন ছেলেরা আজকাল ইন্ডাস্ট্রিতে এসে দু’কোটির বাজেট নিয়ে ছবি শুরু করছে। ওরা যদি এসেই দু’কোটি হাতে পেতে পারে, কান্ট আই ডিজার্ভ? আমি তো ইন্ডাস্ট্রিতে সেই ১৯৮৮ থেকে রগড়াচ্ছি। ‘অপরাজিতা তুমি’র জন্য বিশেষ করে মহিলাদের আমি প্রচুর প্রশংসা পেয়েছি। কী ফেসবুকে, কী ফোনে, কী সামনা-সামনি।

তারা নিশ্চয়ই নিঃসঙ্গ মহিলা?
ধ্যাৎ, পরিপূর্ণ মহিলারা বলেছে। নিঃসঙ্গ মহিলারা শুধু কেন বলবে? একটা কথা জানবেন, যারা খুব সেনসিটিভ হয়, তারা জীবনে কখনও কখনও লোনলিও হয়ে পড়তে পারে। জীবনে সব কিছুই ঘুরে ফিরে আসে। সাফল্যও আসে, নিঃসঙ্গতাও আসে। থাক সে সব কথা, এই যে বড় বাজেটের ছবি বানাচ্ছি, আমি চাইব ইন্ডাস্ট্রির সবার সাহায্য, সবার শুভেচ্ছা। সমষ্টিগত ডেভেলপমেন্ট না হলে কিছুই হবে না। বাকি পরিচালকদের সঙ্গে চাই।

বয়ে গিয়েছে বাকিদের আপনার সঙ্গে থাকতে। আপনার ছবি ফ্লপ হলেই বরঞ্চ ফিল্ম জগতের শর্ত মেনে তাদের শ্যাম্পেনের বোতল খোলার কথা।
তা কেন? আমি তো সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। ফোন করি কনগ্র্যাচুলেট করতে। এমনকী প্রচারে পর্যন্ত নামি।

আপনি এমন করছেন যেন আপনার সমালোচকদের চেনেনই না। গত দু’বছরে তাদের দেখেননি?
হ্যাঁ, সে সব যন্ত্রণা তো পেয়েছিই। নন-ফিল্ম লোকজন, বন্ধু-বান্ধবকে বরঞ্চ অনেক জেনুইন মনে হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রির অনেকে জড়িয়ে ধরেছে, দারুণ ছবি বানিয়েছিস বলে। পরে দেখেছি তারাই উগ্রতম সমালোচক। পিঠে ছুরি মেরেছে। সেই রক্তের দাগ এখনও মেলায়নি। হয়তো একদিন মেলাবে।

অঞ্জন দত্ত ‘পত্রিকা’র ইন্টারভিউতে বলেছিলেন পশ্চিম পুঁটিয়ারি থেকে আসা সেই টোনি হারিয়ে গিয়েছে। এখন ওর ছবির চরিত্ররা হোয়াইট ওয়াইন খায়, ইংরেজিতে কথা বলে, অদ্ভুত জীবন কাটায়।
এই ছবিটা একদম অন্য রকম। ভীষণ বাস্তব। খুব রিয়ালিস্টিক। আমার নিজের ছোটবেলার অনেক কাহিনি রয়েছে।

তা হলে টোনিকে ভিআরএস থেকে জাগিয়ে তুললেন অঞ্জন দত্ত?
সময় জাগিয়ে দিয়েছে। বিশেষ কোনও ব্যক্তি নয়। আমি এখন চার্জড।

পরিচালক থাকে সাউথ সিটিতে। নায়কও তাই। রাতে দেখা হলে বিদেশি হুইস্কি খায়। তারা করবে আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ে সাধারণ মানুষের দুঃখদুর্দশার ছবি?
সেজন্যেই তো আমরা আর্টিস্ট। সেজন্যই আমরা একজন পেশাদার পরিচালক। একজন পেশাদার অভিনেতা।

সই-সাবুদ হয়নি। স্ক্রিপ্টও চূড়ান্ত পর্যায়ে লেখার কাজ চলছে। তবে টোনিদার সঙ্গে আমি অনেক দিন ধরেই কাজ করতে উৎসাহী। ছবির গল্প আর কনসেপ্টটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। ৯৯ শতাংশ কাজটা হবে
দেব



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.