মহদিপুর থমথমে, অন্যত্র স্বাভাবিক সীমান্ত-বাণিজ্য
ব্যতিক্রম শুধু মালদহের মহদিপুর বন্দর। তা ছাড়া, বাংলাদেশের উত্তাল পরিস্থিতির প্রভাব শনিবার পর্যন্ত এ রাজ্যের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে চলা দু’দেশের সীমান্ত-বাণিজ্যে সে ভাবে পড়েনি। তবে, আজ, রবিবার থেকে বাংলাদেশে তিন দিনের বন্ধে দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত-বাণিজ্য ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করছেন এখানকার আমদানি-রফতানি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অনেকেই। বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।
মহদিপুর বন্দরের অবস্থা শনিবার ছিল থমথমে। বৃহস্পতিবার যে সব ট্রাক ওই সীমান্ত দিয়ে পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে গিয়েছিল, তার মধ্যে তিনশোরও বেশি ট্রাক সেখানকার সোনা মসজিদের বন্দরে শনিবার বিকেল পর্যন্ত আটকে ছিল। মাত্র কয়েকজন ট্রাক চালক পণ্য নামিয়ে ফিরে আসতে পেরেছেন। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিরাপত্তার আশ্বাসে এ দিন দুপুর দু’টো নাগাদ কয়েকটি পেঁয়াজের ট্রাক বাংলাদেশে যায়। তবে, সে দেশের পরিস্থিতি দেখে রফতানিকারীরা আর বাংলাদেশে পণ্য পাঠাতে সাহস পাচ্ছেন না। বহু রফতানিকারী মহদিপুর থেকে ট্রাক ঘুরিয়ে নিয়ে যেতে শুরু করেছেন।
মহদিপুরে খালি ট্রাক নিয়ে ফিরে ১৮ মাইলের ট্রাক-চালক সাকিল আলি এ দিন বলেন, “ছাই নিয়ে বাংলাদেশে যাই বৃহস্পতিবার। সে দিন থেকে সোনা মসজিদের পানামা পোর্ট লিঙ্কে আটকে ছিলাম। নিরাপত্তারক্ষীরা আমাদের বাইরে বের হতে দেয়নি। পোর্টের ভিতর থেকে দেখেছি বাইরে সারাদিন ধরে একদল উন্মত্ত জনতা দোকান ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। বিজিবি-র জওয়ানরা পাহারা দিয়ে আমাদের সীমান্ত পার করে দিয়েছে।”
আমদানি-রফতানি বাণিজ্য স্বাভাবিক হিলি সীমান্তে। ছবি: অমিত মোহান্ত।
মহদিপুর এক্সপোর্টার্স অ্যসোসিয়েশনের সম্পাদক সুকুমার সাহা বলেন, “যা পরিস্থিতি, তাতে আমাদের কেউ বাংলাদেশে পণ্য পাঠাতে সাহস পাচ্ছেন না। আজ ৩০-৩৫টি ট্রাক ফিরেছে। এখনও তিনশোরও বেশি ট্রাক এবং চালক-খালাসিরা বাংলাদেশে আটকে রয়েছেন। দু’দিন রফতানি বন্ধ থাকায় চার কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে।”
সীমান্ত-বাণিজ্য স্বাভাবিক ছিল দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট, কোচবিহারের চ্যাংরাবান্ধা বা নদিয়ার গেদেতে। দু’দেশের মধ্যে ওই সব সীমান্ত দিয়ে মানুষের যাতায়াতও হয়েছে স্বাভাবিক ভাবেই। যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে রফতানি বন্ধ থাকলেও আমদানি হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বাসও চলছে। যাত্রীসংখ্যাও স্বাভাবিক ছিল বলে বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে। ‘পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “বাংলাদেশে অচলাবস্থার কোনও প্রভাব এখানে এখনও পড়েনি। বাংলাদেশের সাংসদ শেখ আফিলউদ্দিনের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। তাঁকে বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখার জন্যে অনুরোধ করেছি। উনি এ ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন।” ঘোজাডাঙা বন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত-বাণিজ্য অবশ্য ১১ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। তবে, তার কারণ পণ্য ওঠানো-নামানো নিয়ে ঘোজাডাঙার শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে এ দেশের রফতানিকারীদের বিবাদ। তবে, এই সীমান্ত দিয়ে দু’দেশের মধ্যে পাসপোর্ট নিয়ে যাতায়াত কমেছে। কিছু বাংলাদেশি আসছেন চিকিৎসার কারণে। প্রশাসন সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, ও পারের বেশ কিছু গরিব মানুষ গোলমালে সর্বস্বান্ত হওয়ার আশঙ্কায় জিনিসপত্র নিয়ে এ পারের সীমান্ত লাগোয়া গ্রামে আশ্রয় নিচ্ছেন। তাঁদের চিহ্নিত করে ফেরানোর চেষ্টা চলছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.