সম্পাদক সমীপেষু...
শকুন নেই, মুখ্যমন্ত্রী জানেন না?
পাহাড়ে উৎসবের উদ্বোধন করতে গিয়ে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, উৎসব না তো কি মানুষের শ্রাদ্ধ করব, শকুনের ভাগাড় তৈরি করব? এটা অতীব পরিতাপের যে, শকুন সম্বন্ধে মুখ্যমন্ত্রীর কোনও ধারণাই নেই। এখন ভাগাড় আছে কিন্তু সেখানে শকুন আসে না। শকুন উধাও তাই প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। গবাদি পশুকে যে ওষুধ দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা হয়েছিল, তার দাপটে শকুন কুল শেষ।
ক’বছর আগে এই কপিঞ্জল কুলকে ফিরিয়ে আনার জন্য ব্রিটিশ সরকার রাজস্থান সরকারকে অর্থ দিয়েছিল। সেই উদ্ধারের কাজ কতটা এগিয়েছে জানা নেই। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য শকুনের এ দেশে আসা অত্যন্ত দরকার।
‘সংলাপ’ চাই, কিন্তু বলপ্রয়োগও জরুরি
শিবাজীপ্রতিম বসুর মতে কাশ্মীরে ভারতের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর হাতে ‘বহু মানুষ প্রাণ হারান বা নির্যাতনের শিকার হন।’ (‘কেন কাশ্মীরের মানুষ...’, ১৪-২) এ বিষয়ে আলোচনা করার আগে এ ব্যাপারে অন্যান্য দেশের কার্যধারা কী রকম, তা একবার দেখে নেওয়া যেতে পারে। গত পঞ্চাশ বছরের মধ্যে রাষ্ট্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করেছে তার অন্যতম উদাহরণ চেচনিয়া ও ইঙ্গুসেটিয়া অঞ্চলে রুশ বাহিনীর আচরণ। ইরাকে কুর্দ বিচ্ছিন্নতাকামীদের উপরে সাদ্দাম হোসেন এবং তাঁর আত্মীয় ‘কেমিক্যাল আলি’ বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগ করেছিলেন। বোমাও ফেলেছিলেন। শ্রীলঙ্কার তামিল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে সরকার নিরন্তর যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত তাদের পরাভূত করেছে। আপসের নামও মুখে আনেনি। পাকিস্তানের অতীতে পাখতুন এবং বর্তমানে বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে পঞ্জাবি আধিপত্যের সরকার নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে। যুক্তরাজ্য থেকে বিচ্ছিন্নতাকামী উত্তর আয়ারল্যান্ডের ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের উপরেও অত্যাচার হয়েছে। সম্ভবত পৃথিবীতে ইদানীং রক্তপাতহীন ভাবে বিচ্ছিন্নতার মোকাবিলা করা হয়েছে একমাত্র কানাডার কোয়োবেক প্রদেশে।
বিচ্ছিন্নতাবাদের মোকাবিলা বাংলাদেশ করেছে এক বিচিত্র উপায়ে। চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ প্রধানত চাকমা-বৌদ্ধ ছিলেন। জিয়াউর রহমানের প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় চট্টগ্রামের সমতল থেকে বাঙালি মুসলমানদের উৎসাহ দেওয়া হয়, পার্বত্য অঞ্চলে গিয়ে বসতি স্থাপন করার জন্য। এবং অচিরেই বৌদ্ধ-চাকমা জনজাতিরা সেখানে সংখ্যালঘুতে পরিণত হন।
এর সঙ্গে কাশ্মীরে ভারতের আচরণ তুলনীয়। শেখ আবদুল্লার চাপাচাপিতে এবং নেহরুর সম্মতিতে ভারতের অন্য কোনও অঞ্চলের মানুষের কাশ্মীরে গিয়ে জমি কিনে বসবাস করার অনুমতি তো নেই-ই, এমনকী জম্মু অঞ্চলের মানুষও কাশ্মীর উপত্যকায় জমি কিনতে পারবে না। এর প্রতিবাদে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বিরাট আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন। কিন্তু শেখ আবদুল্লার প্রতি নেহরুর ভক্তি নড়েনি। কেউ যুক্তি দিতে পারেন, ভারতের আচরণই মানবিক, কিন্তু ‘রিয়েলপলিটিক্স’ কী বলে? বাংলাদেশে চাকমা বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের দম বেরিয়ে গেছে। আর ভারতে আমরা কোথায় আছি, তা আমরা সবাই জানি।
শিবাজীপ্রতিম লিখেছেন, “এই প্রেক্ষিতে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা তাঁদের ভিটেমাটি ছেড়ে জম্মুর সমতলে নেমে আসতে থাকেন।” বাস্তব হচ্ছে, তাঁদের খুন করে, ভয় দেখিয়ে, পশুর মতো খুঁচিয়ে তাড়ানো হয়।
কিছু ‘ব্লিডিং হার্ট’ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দাবি করছেন, ‘যারা রাষ্ট্রের বাইরে যেতে চাইছে তাদের সঙ্গে প্রকৃত সংলাপ’ করতে হবে! হ্যাঁ, সংলাপ করতে হবেই। কিন্তু আগে রাষ্ট্রের বলের সম্যক পরিচয় তাদের টের পাইয়ে দিয়ে তবেই। তা ছাড়া সংলাপ সদর্থক হবে না। কারণ, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দুর্বল রাষ্ট্রকে খাতির করবে না। আর এই বলপ্রয়োগ করতে গিয়ে যদি কিছু ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি ঘটে, তার জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু বলপ্রয়োগে এক মুহূর্তের জন্যও ভাটা পড়লে চলবে না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.