নয়া দায়িত্বভার নিলেন দময়ন্তী
দার্জিলিঙের ডিআইজি পদে যোগ দিতেই পাহাড়ে দময়ন্তী সেনকে স্বাগত জানাল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বৃহস্পতিবার সকালে বিমানে কলকাতা থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে সোজা দার্জিলিঙে গিয়ে দায়িত্বভার বুঝে নেন নতুন ডিআইজি। তার পরেই মোর্চার তরফে নতুন ডিআইজিকে স্বাগত জানিয়ে সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। দলের প্রচার সচিব তথা বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী বলেন, “উনি সৎ, নিরপেক্ষ পুলিশ অফিসার হিসাবে বরাবর পরিচিত। পার্ক স্ট্রিট কান্ডে ওঁর ভূমিকা প্রশংসনীয়। উনি আইনের পক্ষে সব সময় দাঁড়ান। উনি চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে পাহাড়ে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করবেন বলে আমাদের আশা।”
বাগডোগরা বিমানবন্দর ও দার্জিলিং অফিসে নতুন ডিআইজি দয়মন্তীদেবী সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি। বিমানবন্দর থেকে দার্জিলিং পৌঁছে ‘গার্ড অব অনার’ নেওয়ার পর নতুন ডিআইজি নিজের দফতরের কর্মী, অফিসারদের সঙ্গে পরিচিত হন। পাহাড়ে পুলিশ অফিসারেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের থেকে পাহাড়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেন। জেলা পুলিশের কয়েকজন কর্তার মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়ে দেন, পরে তিনি দফতরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন।
বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙের নতুন ডিআইজি পদে যোগ দিলেন দময়ন্তী সেন। ছবি: রবিন রাই।
মোর্চা বিরোধীরাও একই ভাবে দয়মন্তী সেনের পাহাড়ে আসায় উচ্ছ্বসিত। তাঁরা জানাচ্ছেন, একসময় সুবাস ঘিসিং তার পরে বিমল গুরুঙ্গের দল পাহাড়ের আধিপত্য কায়েম করে। শাসক দলের হয়ে পুলিশ-প্রশাসনের অফিসারেরা কাজ করে থাকেন। আর এর জেরেই পাহাড়ে দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্র বিপন্ন। ভোটের নামে কার্যত একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চলেছে। বিরোধীদের হুমকি দিয়ে ভোটে দাঁড় হতে দেওয়া হয় না। নানা গোলমাল, হামলার ঘটনায় পুলিশের কাছে গিয়েও সুবিচার মেলেনি। দয়মন্তী সেনের মত একজন আইপিএস পাহাড়ে আইনের শাসন বজায় রাখবেন।
নিহত মদন তামাঙের দল গোর্খা লিগের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ খাতি জানান, প্রকাশ্যে পুলিশের সামনেই আমাদের নেতাকে খুন হতে হয়েছিল। তার পরেও অভিযুক্তরা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাধ্য হয়ে আমাদের সুপ্রিম কোর্ট অবধি যেতে হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের একটি অংশ নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। এই অবস্থায় দয়মন্তী সেনের মত অফিসার পাহাড়ে আসার আমরা উচ্ছ্বসিত। প্রতাপবাবু বলেন, “উনি বরাবর নিরপেক্ষ থাকেন বলে আমরা দেখে এসেছি। পাহাড়েও উনি সেই জায়গা থেকেই পাহাড়ে আইনের শাসন কায়েম করবেন।”
আর সিপিআরএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অরুণ ঘাটানি বলেন, “রাজ্য সরকারের তরফে ওঁকে পাহাড়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা কথা হয়েছে। তবে আমরা মনে করি, একজন খুব ভাল অফিসার পাহাড়ে এসেছেন। পার্কস্ট্রিট কাণ্ড শুধু নয়, কলকাতায় উনি যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। এখানের আইনের পক্ষে থেকেই উনি কাজ করবেন। শুধু শাসক দল নয়, বিরোধীদের বক্তব্য, অভিযোগকে উনি গুরুত্ব দেবেন। যা পাহাড়ে হয় না।”
পার্কস্ট্রিট কান্ডের তদন্ত নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ায় দময়ন্তী সেনকে গোয়েন্দা প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরকার সরিয়ে দেয়। সেই জায়গায় কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যারাকপুরের ডিআইজি (প্রশিক্ষণ) পদে তাঁকে পাঠানো নিয়ে সরকারের ভূমিকার সমালোচনায় সরব হয় নানা মহল। এর পরে পাহাড়ে সরকারের সঙ্গে শাসক মোর্চার সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হতেউ তাঁকে দার্জিলিঙের ডিআইজি পদে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকার। এতে পুলিশের একটি মহল যেমন মনে করেছে, পাহাড়ের ‘কঠিন’ পরিস্থিতিতে দয়মন্তী সেনকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে ভাবমূর্তি ঠিক করতে চেয়েছে সরকার। তেমনিই আরেকটি মহলের দাবি, পাহাড়ে পাঠিয়ে এই আইপিএস অফিসারকে আরও চাপের মুখে ফেলা দেওয়া হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.