কমবে নতুন ঘোষণা, বলছে মন্ত্রকই
ডিজেলের ধাক্কায় ফের
রেলভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে জল্পনা
লাভের গুড় খেয়ে নিয়েছে ডিজেল। তাই রেল বাজেটের ঠিক আগে ফের যাত্রিভাড়া বাড়ানো নিয়ে রেলভবনে শেষ মুহূর্তের জল্পনা তুঙ্গে।
আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট এটিই। তাই বাজেটের প্রায় মাস খানেক আগে কোষাগারে নগদ জোগান বাড়াতে প্রায় এক দশক পরে সব শ্রেণিতে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মন্ত্রক। বাড়তি টাকায় নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়ারও কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি ভেস্তে দিয়েছে রেল মন্ত্রকের একাধিক পরিকল্পনা। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতি মেটাতে কি ফের ভাড়া বাড়ানোর পথেই হাঁটবে পবন বনশল?
নির্বাচনের আগে ফের ভাড়া বাড়লে বিরোধীরা প্রচারের বাড়তি সুযোগ পেয়ে যাবে, এই যুক্তিতে কংগ্রেসের একটি বড় অংশ এখনই যাত্রিভাড়া বাড়ানোর বিপক্ষে।
কিন্তু রেল কর্তারা বলছেন, ডিজেলের ভর্তুকি যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়ার মাধ্যমে নেওয়ারই পক্ষপাতী যোজনা কমিশনের উপাধ্যক্ষ মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া ও প্রধানমন্ত্রীর দফতর। তাঁদের যুক্তি, ডিজেলের দাম বাড়লে সড়ক পরিবহণের খরচ বাড়ে। রেলের ক্ষেত্রে সেই নিয়মের ব্যতিক্রম কেন হবে? এই পরিস্থিতিতে দ্বিধাগ্রস্ত রেল মন্ত্রক বিকল্প পথ হিসেবে বাড়তি ভাড়া ‘ফুয়েল অ্যাডজাস্টমেন্ট কমপোনেন্ট’ হিসেবে টিকিটে যোগ করার কথা ভাবছে। তবে দু’মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বার যাত্রিভাড়া বাড়বে কি না, সেই সিদ্ধান্ত কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের হাতেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলকর্তারা।
রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, যাত্রিভাড়া বাড়িয়ে যে ৬৬০০ কোটি টাকা আয় হবে বলে ভাবা হয়েছিল, ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে তা কমে ঠিক অর্ধেক হয়ে পড়েছে! এই পরিস্থিতিতে যাত্রিভাড়া থেকে বাড়তি আয়ের মাধ্যমেই পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া সম্ভব বলে দাবি রেলকর্তাদের। পাশাপাশি কেন্দ্রের কাছ থেকে বাজেট সাহায্য যে বিশেষ বাড়বে, এমন আশাও করছেন না রেল মন্ত্রকের কর্তারা। গত বছর ৪৮ হাজার কোটি টাকা চেয়ে ২৪ হাজার কোটি টাকা বাজেট সাহায্য পেয়েছিলেন দীনেশ। এ বার রেলের পক্ষ থেকে ৩৮ হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। মন্ত্রকের অনুমান, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম এখনও পর্যন্ত রেলকে যা আশ্বাস দিয়েছেন, তাতে ২৬-২৮ হাজার কোটি টাকা মিলতে পারে।
বাজেট সাহায্য খুব একটা বাড়বে না, ধরে নিয়েই নতুন প্রকল্প ঘোষণায় রাশ টানতে চাইছে মন্ত্রক। পবন বনশল নিজেও এই বাজেটে একাধিক বড় মাপের প্রকল্প হাতে নেওয়ার পক্ষপাতী নন। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি একাধিক বার জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই যা প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে, তা শেষ করতে পাঁচ লক্ষ কোটি টাকা লাগবে।
তাই একাধিক নতুন বড় মাপের প্রকল্প হাতে নেওয়ার কথা ভাবছে না মন্ত্রক। তার থেকে রেলমন্ত্রী অনেক বেশি জোর দিতে চাইছেন যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের উপর। তবে ব্যয়সংকোচের এই বাজারেও বিধানসভা নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা কংগ্রেসশাসিত রাজস্থানের জন্য এক বা একাধিক রেল প্রকল্প ঘোষণা হতে পারে। রেল সূত্রের খবর, রাজস্থানে ভোটের কথা ভেবে একটি কোচ কারখানার ঘোষণা করতে পারে মন্ত্রক। একই ভাবে সনিয়া গাঁধী ও রাহুল গাঁধীর লোকসভা কেন্দ্রের জন্যও দরাজহস্ত হতে পারে মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই সনিয়ার লোকসভা কেন্দ্র রায়বরেলীতে একটি কোচ কারখানার উৎপাদন শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই এ বার রাহুলের অমেঠিতে বড় মাপের রেল প্রকল্প ঘোষণা হতে পারে।
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কোচ উৎপাদন কম হওয়ায় গত বাজেটে ঘোষিত সমস্ত ট্রেন এখনও চালিয়ে উঠতে পারেনি মন্ত্রক। গত বার রেলমন্ত্রী হিসেবে দীনেশ ত্রিবেদী বাজেটে ৭৫টি নতুন ট্রেনের ঘোষণা করেছিলেন। এ বার নতুন ট্রেনের সংখ্যা তার থেকে বেশ কিছু কম থাকবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নতুন ট্রেনের পরিবর্তে পুরনো ট্রেনের যাত্রা সংখ্যা বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে।
মন্ত্রকের একাংশের মতে, হাওড়া-দিল্লি, হাওড়া-মুম্বই, মুম্বই-দিল্লি, হাওড়া-চেন্নাইয়ের মতো লাইনগুলিতে ক্ষমতার থেকে অনেক বেশি সংখ্যায় ট্রেন চলছে। এই পরিস্থিতিতে ওই লাইনগুলিতে একাধিক নতুন ট্রেন চালু হওয়ার সম্ভাবনা কম।
পরিবর্তে দেশের অনুন্নত ও গ্রামীণ এলাকাগুলির মধ্যে রেল যোগাযোগ বাড়াতে চাইছে মন্ত্রক। মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, “আম-আদমির কথা ভেবেই দেশের ছোট শহরগুলি ও গ্রামীণ এলাকার মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর উপর জোর দিতে চাইছে রেল।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.